‘বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করার জন্য আমি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলি’

Slider বিনোদন ও মিডিয়া

53891_thumbM_Mousumi-8

 

ঢাকা; বছর শুরুতেই দুটি ছবির কাজ শুরু করেছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী ও নির্মাতা মৌসুমী। দুটি ছবির গল্প দুই ধরনের। আগে থেকেই গল্পের বিষয়ে খুবই সচেতন তিনি। এর মধ্যে গতকাল এফিডিসিতে ‘দুলাভাই জিন্দাবাদ’ ছবির মহরতে আসেন এই তারকা অভিনেত্রী। মহরত শেষে ছবিসহ চলচ্চিত্রের নানা বিষয়ে কথা হয় তার সঙ্গে। শুরুতেই ‘দুলাভাই জিন্দাবাদ’ ছবিটি নিয়ে মৌসুমী বলেন, মনতাজুর রহমান আকবর ভাই একজন গুণী পরিচালক। তার ‘বাঘিনী কন্যা’ ছবিতে আমি কাজ করেছিলাম।
এরপর আরও বেশকিছু ছবিতে কাজ করা হয়েছে। তবে অনেক দিন পর তার পরিচালনায় আবারও কাজ শুরু করছি। এ ছবিতে আমার চরিত্রের নাম থাকছে জোসনা। গ্রামের একটি মেয়ে। এলাকার বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করার জন্য আমি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলি। এমনই একটি চরিত্র। যারা সংসারে বাবা-মা নেই। এক ভাই থাকে সেও একটা সময় প্রতিবন্ধী হয়ে যায়। দারুণ একটি গল্প। আশা করছি, এ ছবিটি দর্শক পছন্দ করবেন। নতুন বছরে নতুন উদ্যমে কাজ শুরু করেছেন মৌসুমী। এ বছর আরও একটি ছবি দর্শকদের উপহার দিতে যাচ্ছেন। ছবির নাম ‘পবিত্র ভালোবাসা’। ছবিটি পরিচালনা করছেন এ কে সোহেল। এর আগে এই পরিচালক মৌসুমীকে নিয়ে ‘খায়রুন সুন্দরী’ নামে একটি ছবি উপহার দিয়েছেন। ছবিটি বেশ ব্যবসাসফল হয়। নতুন ছবির কাজ চলছে উত্তরায়। মৌসুমী ছবিটি নিয়ে বলেন, চট্রগ্রামের বোয়ালখালিতে টানা দশদিন এ ছবির কাজ হয়েছে। বর্তমানে ঢাকার বিভিন্ন লোকেশনে এর কাজ চলছে। ছবিতে আমার চরিত্রের নাম থাকছে মায়াবেদী। হিন্দু সমাজের পঞ্চায়েত প্রধান হিসেবে আমাকে দেখতে পাবেন দর্শক। ছবিতে হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে প্রেম, বিরহ, সংকট, সংসারসহ নানা বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। আশা করছি, গ্রাম বাংলার প্রেক্ষাপটে করা এ ছবিটি দর্শক পছন্দ করবেন। সালমান শাহ থেকে শুরু করে ওমর সানি, রুবেল, মান্না, ইলিয়াস কাঞ্চন, ফেরদৌসসহ অনেক নবীনের সঙ্গেও কাজ করতে দেখা গেছে গুণী এই অভিনেত্রীকে। এখনও তার জনপ্রিয়তা শীর্ষে। এই সময়ে এসে ছবিতে কাজ করতে গিয়ে মৌসুমী বলেন, সবচেয়ে বড় বিষয় ছবি এখন হিট হওয়া দরকার। আগে তো ভারতের দর্শক ঘরে বসে আমাদের দেশের ছবি দেখতেন। স্টার জলসার ছবিগুলোর মধ্যে খেয়াল করলে দেখা যাবে যে, ফ্যামিলি ড্রামা ধরনের গল্প থাকছে। এসবই দর্শকরা মন দিয়ে দেখছেন। ধুম ধারাক্কা গানের ছবি দর্শক তেমন মনেও রাখে না। যে কারণে মনে করি, দর্শকের মন অনেক ভাগ হয়ে গেছে। কেউ ‘দাবাং’, কেউ আবার ‘শিকারি’ আবার কেউবা ‘আয়নাবাজি’ ধরনের ছবি দেখতে বেশি পছন্দ করে। বাঙ্গালী দর্শকরা অনেক সচেতন এখন। তাই আমি মনে করি, ভালো গল্পের দর্শক এখনও আছে। তাই একই ধরনের ছবি তৈরি বন্ধ করে বিভিন্ন স্বাদের ভালো কিছু ছবি দর্শকদের উপহার দিতে হবে। কথা বলতে বলতে আবারও প্রশ্ন-যৌথ প্রযোজনার ছবি দিয়ে বাজার ঘুরানোর যে চেষ্টাটা করা হয়েছে সেই জায়গায় কতটুকু স্বার্থক হয়েছে বাংলা চলচ্চিত্র? এই প্রশ্নের জবাবে মৌসুমী বলেন, যৌথ প্রযোজনা করলে সঠিকভাবে করতে হবে। বিশেষ করে এখানকার এবং ওপারের দর্শকের পছন্দের কথা চিন্তা করেই ছবি বানাতে হবে। তাহলে সফলতা আসবে। আর সবচেয়ে বড় বিষয় সঠিকভাবে কলা-কুশলী নিতে হবে। আর আমাদের শিল্পী সংকট রয়েছে। শিল্পীদের পরিচিতির জায়গাটা এখন ছোট হয়ে গেছে। তাদের দেশের আর্টিস্টদের নাটক, গান, সিনেমা সবই আমরা দেখছি। তাদেরকে দর্শক এক নামে চিনছে। কিন্তু আমাদের দেশের অনেক  শিল্পী থাকা সত্ত্বেও তারা তেমনভাবে চিনছে না। তিনি আরও বলেন, জায়গাটা ছোট হয়ে গেছে আমাদের। যেমন শাকিব খান ভালো ছবি উপহার দিয়েছেন বলেই আরও কিছু ভালো ছবিতে কাজ করছেন। সঠিক আদান-প্রদানের অপশনটা সেজন্যই রাখা। আমাদের এখানে অনেক প্রতিভাবান পরিচালক বা শিল্পী রয়েছেন। কাজ করেই প্রমাণ করতে হবে আমাদের। তাহলেই স্বার্থকতা আসবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *