সাংসদ-উপজেলা চেয়ারম্যানের সমর্থকদের সংঘর্ষ, ১৪৪ ধারা

Slider বাংলার মুখোমুখি

th

ফরিদপুর; ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলায় সাংসদ ও উপজেলা চেয়ারম্যানের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে সাংবাদিকসহ ১০ জন আহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সদরপুর সদর ইউনিয়নে ১৪৪ ধারা জারি করা করেছে প্রশাসন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, আজ সকাল ১০টার দিকে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষ ‘দরবার হলে’ উপজেলা মাসিক সমন্বয় সভা চলছিল। ওই সভায় যোগ দেন স্বতন্ত্র সাংসদ (ফরিদপুর-৪) মজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরী। সভা চলার সময়ে সাংসদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) বলেন, আওয়ামী লীগের এক প্রভাবশালী নেতা ১০ দিন আগে সদরপুরের পিয়াজখালী এলাকায় এক জনসভায় দিয়ারা নারকেল বাড়িয়া এলাকার লোকদের হত্যার হুমকি দিয়েছেন। অথচ এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এর কারণ কি তা ওসির কাছে জানতে চান সাংসদ। তখন এর প্রতিবাদ জানান সভায় উপস্থিত উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী শফিকুর রহমান। এ নিয়ে সাংসদ ও চেয়ারম্যানের কথা-কাটাকাটি হয়। তখন সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন সভার সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রোকসানা রহমান।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সভা শেষ হলে সাংসদ হলরুম থেকে বের হয়ে আনুমানিক ২০০ মিটার দূরে অবস্থিত সদরপুর বাজারে একটি দোকানে চা পান করার জন্য যান। ওই সময় কাজী শফিকুর রহমান একটি মিছিল নিয়ে ওই বাজারের দিকে যান। তখন উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে লাঠিসোঁটা নিয়ে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ায় জড়িয়ে পড়ে উভয় পক্ষ। এক কিলোমিটার সড়কজুড়ে উভয় পক্ষের লোকজন অবস্থান নেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সদরপুর থানা-পুলিশের একাধিক দল উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান নেয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সংঘর্ষ চলাকালে দৈনিক আমার সংবাদ পত্রিকার সদরপুর প্রতিনিধি তোফাজ্জেল হোসেনসহ (৩৫) ১০ জন লাঠির আঘাতে আহত হন। আহত তোফাজ্জেলকে প্রথমে সদরপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। তোফাজ্জেল জানান, তিনি সংঘর্ষের ছবি তুলতে গেলে আওয়ামী লীগের সমর্থকেরা তাঁকে পিটিয়ে আহত করেন এবং তাঁর সঙ্গে থাকা ক্যামেরা, মুঠোফোন ও মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন।

প্রশাসন সূত্র জানায়, সংঘর্ষের ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে প্রশাসন দুপুর ১২টার দিকে সদরপুর ইউনিয়নে ১৪৪ ধারা জারি করেন। র‍্যাব ও পুলিশের দল এলাকায় টহল শুরু করে।

সাংসদ মজিবুর রহমান বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বিনা উসকানিতে আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। তাদের হাতে সাংবাদিক আহত হয়েছে। আওয়ামী লীগের এক প্রভাবশালী নেতা জনসভায় গুলি করার হুমকি দিচ্ছেন অথচ তাঁর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’

উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের নেতা শফিকুর রহমান বলেন, ‘সাংসদের সমর্থকদের দ্বারা আমরা প্রথমে আক্রান্ত হই। আত্মরক্ষার অধিকার আমাদের আছে।’

সদরপুরের ইউএনও রোকসানা রহমান বলেন, আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সদরপুর সদর ইউনিয়নে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।

সদরপুর থানার ওসি হারুন অর রশিদ বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত থানায় কেউ কোনো অভিযোগ দেননি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *