সিলেটে ভয়ঙ্কর ছিনতাই চক্রের সন্ধান, গ্রেফতারে চলছে অভিযান

Slider সামাজিক যোগাযোগ সঙ্গী

IMG_20170131_191326

সিলেট প্রতিনিধি :: সিলেট মহানগরীতে ছিনতাই যেন নিত্যনৈমিত্তিক এক আতঙ্ক। মহানগরীর ছয়টি থানা এলাকায় প্রতিদিন ছিনতাইয়ের শিকার হচ্ছেন কেউ না কেউ। আর ছিনতাইয়ে জড়িত রয়েছে বেশ কয়েকটি চক্র।

এরকমই একটি ভয়ঙ্কর চক্রের সন্ধান পেয়েছে পুলিশ। ওই চক্রে অন্তত ৭ জন সদস্য রয়েছে, যারা সংঘবদ্ধভাবে মহানগরীতে ছিনতাইয়ে জড়িত।

সিলেট মহানগর পুলিশ সূত্র বলছে, এ চক্রের চারজনকে গত কয়েকদিনে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি তিনজনকে গ্রেফতারে তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা চিনতাইকারীরা হল – রুহেল আহমদ ওরফে রুবেল আহমদ ওরফে জাকির হোসেন ওরফে রাজ (২৬), তুহিন আলী ওরফে মনসুর (৩২), শেখ মো. আব্দুল খালেদ (২৮) এবং মোহাম্মদ আলী মোল্লা (৩৪)।

যেভাবে ছিনতাই করে এ চক্র : ৭ সদস্যের এই ছিনতাইচক্র ৩-৪টি মোটরসাইকেলে হেলমেট পরিহিত অবস্থায় নগরীতে ঘুরে বেড়ায়।

ছদ্মবেশে ব্যাংকে অবস্থান করে ‘টার্গেট’ ঠিক করে তারা। টার্গেট যখন ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করে বেরিয়ে নিজ গন্তব্যে রওয়ানা হন, পথিমধ্যে তাকে ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে গতিরোধ করা হয়। এরপর ‘টার্গেটের’ সাথে থাকা টাকা নিয়ে চম্পট দেয় তারা।

এছাড়া বীমা কোম্পানি কিংবা নগরীর বিভিন্ন জ্বালানি পাম্পের টাকা পরিবহনের সময় এ চক্রের সদস্যরা ছিনতাই করে। ছিনতাইকালে টার্গেটকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপাতেও দ্বিধা করে না এ চক্রের সদস্যরা।

মহানগরীর কোতোয়ালী, জালালাবাদ, বিমানবন্দর, দক্ষিণ সুরমা, মোগলাবাজার ও শাহপরান থানা এলাকায় সংঘবদ্ধভাবে দীর্ঘদিন ধরে ছিনতাইয়ে জড়িত এ চক্র।

চক্রের ছিনতাইয়ের কয়েকটি ঘটনা : গত বছরের ৭ ডিসেম্বর শাহপরান থানাধীন দাসপাড়াস্থ এ ই এন্টারপ্রাইজ পেট্রোল পাম্পের ছয় লাখ টাকা ছিনতাই হয়। পাম্পের অফিস সহকারি হিরেন পাত্র পূবালী ব্যাংক শাহপরান মাজার গেইট শাখায় টাকা জমা দিতে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে গেইটের পূর্ব পার্শ্বে তাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে রুহেল, তুহিন, মোহাম্মদ আলী ও আবদুল খালেদসহ চক্রের ৭ সদস্য তিনটি মোটরসাইকেলে এসে টাকা ছিনিয়ে নেয়। এ ছিনতাইয়ের টাকার মধ্যে ৮০ হাজার টাকা ভাগ পান রুহেল। বাকি টাকা অন্যরা ভাগাভাগি করে নেন।

গত ৪ জানুয়ারি পূবালী ব্যাংক শাহপরান মাজার গেইট থেকে ৫ লাখ টাকা তুলেন অরবিন্দ দে। এরপর নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার পথে শাহপরান থানাধীন হিলভিউ টাওয়ারের সামনে তার গতিরোধ করে ওই ছিনতাইচক্রের সদস্যরা। অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তার কাছ থেকে টাকা ছিনিয়ে নেয় চক্রটি। এ টাকার মধ্যে ৬০ হাজার টাকা ভাগ পায় রুহেল। বাকি টাকা চক্রের অন্যরা ভাগ করে নেয়।

এমনকি এ চক্রের কোনো সদস্য যদি ছিনতাইয়ে সরাসরি জড়িত নাও থাকে, তবুও সে টাকা পায়।

মহানগর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, নগরীতে ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশ সবসময়ই সতর্ক রয়েছে।
তারই ধারাবাহিকতায় এ চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

বাকিদের গ্রেফতারে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। এছাড়া অন্য আরো যতো চক্র রয়েছে, সেসব চক্রকেও সনাক্ত করে গ্রেফতার করা হবে বলে তাদের মন্তব্য।

সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার বিভূতি ভূষণ বানার্জী বলেন, ৭ সদস্যের ছিনতাইচক্রের বাকিদের ধরতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। এক্ষেত্রে গোয়েন্দা তথ্যের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, পুলিশ ছিনতাইকারীদের ধরছে। এজন্য সাম্প্রতিক সময়ে ছিনতাইয়ের ঘটনা কমেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *