জনপ্রতিনিধিদের নিরাপত্তা দিতে পুলিশের বিশেষ বার্তা

Slider সারাদেশ

47733_f1

 

ঢাকা; সারা দেশে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নিরাপত্তা বাড়াতে পুলিশ সদরদপ্তর থেকে জেলা পর্যায়ে বিশেষ বার্তা পাঠানো হয়েছে। গত ২রা জানুয়ারি মোবাইলে ক্ষুদে বার্তা এবং ফোনে মৌখিকভাবে সংশ্লিষ্ট জেলার পুলিশ সুপারদের বিষয়টি অবহিত করা হয়। সংশ্লিষ্ট এলাকার জনপ্রতিনিধিদের বাড়ি, অফিস, কর্মস্থল ও নির্বাচনী এলাকায় জনসংযোগ এবং মতবিনিময়কালে পুলিশকে পোশাকের পাশাপাশি সাদা পোশাকে সার্বক্ষণিক দায়িত্বপালনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তারা যেসব বাড়িতে থাকেন ওইসব বাড়ির নিরাপত্তা রক্ষীদের সঙ্গে পুলিশকে সার্বক্ষণিক সমন্বয় করারও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি প্রতিনিধিগণ কোনো জনবহুল এলাকায় গেলে ওই স্থানে আগে থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। জনপ্রতিনিধিদের নিরাপত্তা বাড়ানোর বিষয়ে পুলিশের বিশেষ বার্তা পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সদর দপ্তরের ডিআইজি (মিডিয়া) একেএম শহিদুর রহমান।
গত ৩১শে ডিসেম্বর গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে দুর্বৃত্তদের গুলিতে খুন হন ওই এলাকার সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন। ওই ঘটনার পর থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক রয়েছে। এমপিদের পক্ষ থেকে তাদের নিরাপত্তা বাড়ানোর দাবি উঠেছে।
বিশেষ বার্তা পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জয়পুরহাট জেলার এসপি রশিদুল হাসান মানবজমিনকে জানান, দেশের কোনো স্থানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘ্নিত হলে পুলিশ হেডকোয়ার্টারের পক্ষ থেকে আমাদের বিভিন্ন নির্দেশনা দেয়া হয়। গাইবান্ধা জেলায় সংসদ সদস্য হত্যাকাণ্ডের পর থেকে পুলিশ হেডকোয়ার্টারের পক্ষ থেকে আমাদের মোবাইলে ক্ষুদে বার্তা এবং মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে। শুধু এমপি নন, সকল জনপ্রতিনিধিদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য পুলিশ সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে পুলিশ হেডকোয়ার্টারের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মানবজমিনকে জানান, সংসদ সদস্য হত্যাকাণ্ডের পর সারা দেশের এমপিসহ সকল জনপ্রতিনিধিদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। এরপর পুলিশ হেডকোয়ার্টারের পক্ষ থেকে দেশের সকল বিভাগীয় ডিআইজি এবং এসপিদের কাছে মোবাইলে ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হয়। দেশের জনপ্রতিনিধিরা যেন নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা পান এজন্য মোবাইল ফোনে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে।
যশোর জেলার এসপি আনিসুর রহমান মানবজমিনকে জানান, দেশের কোনো স্থানে সংবেদনশীল কোনো ঘটনা ঘটলে আমাদের মৌখিকভাবে জানানো হয়। এবারও হয়েছে। জনপ্রতিনিধিদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আগের চেয়ে অধিক জোরদার করা হয়েছে।
পুলিশ হেডকোয়ার্টারের অপারেশন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জনপ্রতিনিধিগণ যে বাড়িতে থাকেন ওই বাড়ির নিরাপত্তা ব্যবস্থার কোনো ফাঁকফোকর রয়েছে কি-না তা পুলিশের পক্ষ থেকে খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। ওই বাড়ির নিরাপত্তারক্ষীর সঙ্গে পুলিশের সার্বক্ষণিক যেন যোগাযোগ থাকে এজন্য তাদের ফোন নম্বর সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে।
সূত্র জানায়,  জনপ্রতিনিধিরা যেসব স্থান অফিস হিসাবে ব্যবহার করেন ওই অফিসের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের জন্য বলা হয়েছে। তারা যখন ওই অফিসে যাবেন তখন তারা যেন পুলিশকে বিষয়টি আগে থেকে অবহিত করেন তা পুলিশকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সেখানে পুলিশকে পোশাকে এবং সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
পুলিশ হেডকোয়ার্টার সূত্রে জানা গেছে, যখন তারা তাদের নিজ এলাকায় জনসংযোগ করতে যাবেন তখন তারা যেন ওই এলাকায় যাওয়ার আগেই বিষয়টি পুলিশকে জানান, এজন্য পুলিশকে ওই বিষয়টি জনপ্রতিনিধিদের জানানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, এ ছাড়াও যে সকল জনপ্রতিনিধিদের ঢাকাসহ বিভাগীয় শহরে যেসব ফ্ল্যাটে বসবাস করেন ওইসব জনপ্রতিনিধিদের নামের তালিকা তৈরি এবং ওই ফ্ল্যাটের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঠিক রয়েছে কিনা তা দেখতে পুলিশকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ ছাড়াও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কারও সঙ্গে রাজনৈতিক বা অন্য কোনো বিরোধ থাকলে ওই সব ব্যক্তিদের গতিবিধি লক্ষ্য রাখার জন্য বলা হয়েছে। এ নিয়ে জানতে চাইলে ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা থানার ওসি মো. আকতার মুর্শেদ জানান, এমপি হত্যাকাণ্ডের পর জেলার এসপি আমাদের বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়েছেন। ২৪ ঘণ্টা পোশাকে এবং সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালনের জন্য বলা হয়েছে। চট্টগ্রামের হাটহাজারি থানার ওসি বেলাল উদ্দিন জাহাঙ্গির জানান, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির নিরাপত্তার জন্য আমাদের নির্দেশনা দেয়া আছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *