মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের অনুমতি পেল বঙ্গভ্যাক্স

Slider বাংলার সুখবর


দেশীয় কোম্পানি গ্লোব বায়োটেক উদ্ভাবিত করোনাভাইরাসের টিকা বঙ্গভ্যাক্স মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ মেডিক্যাল রিসার্চ কাউন্সিল (বিএমআরসি)।
দেশে তৈরি করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা বঙ্গভ্যাক্স এর আগে গত বছরের ২৩ নভেম্বর বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদের (বিএমআরসি) মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের অনুমতি পেলেও ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের অনুমোদনের অপেক্ষায় ছিল দীর্ঘ দিন।
কিন্তু আজ সেই অপেক্ষার অবসান ঘটলো।

রোববার বিকেলে অনুমোদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গ্লোব বায়োটেকের কোয়ালিটি অ্যান্ড রেগুলেটরি বিভাগের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক ড. মোহাম্মদ মহিউদ্দিন।

বিএমআরসির পরিচালক অধ্যাপক ডা. রুহুল আমিন বলেন, গ্লোব বায়োটেককে ফেজ-১ ট্রায়ালের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। শর্ত অনুযায়ী তারা এর ট্রায়াল পরিচালনা করবে।

গ্লোব বায়োটেক দাবি করে আসছে বঙ্গভ্যাক্স অতি সংক্রমণশীল ডেল্টাসহ করোনাভাইরাসের সব ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে শতভাগ কার্যকর। প্রতিষ্ঠানটির দাবি, বানরের শরীরে (অ্যানিমেল ট্রায়াল) যে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ হয়েছে তার ফলাফলে এর কার্যকারিতার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

বলা হচ্ছে, বঙ্গভ্যাক্স টিকাটি প্রাকৃতিক বিশুদ্ধ এমআরএনএ (মেসেঞ্জার রাইবোনিউক্লিক এসিড) দিয়ে তৈরি, তাই এটি সবচেয়ে বেশি নিরাপদ ও কার্যকর হওয়ার সুযোগ রয়েছে।

বঙ্গভ্যাক্সের টিকা এক ডোজের। ইঁদুরের দেহে এটির পরীক্ষা চালিয়ে ৯৫ শতাংশ কার্যকারিতা পায় গ্লোব বায়োটেক। টিকাটি শতভাগ নিরাপদ বলেও প্রমাণিত হয়।

পরে বিএমআরসির নির্দেশনা অনুসারে বানরের দেহে পরীক্ষা চালানো হয়। প্রাথমিক ফলাফলে টিকাটি বানরের দেহেও সম্পূর্ণ নিরাপদ ও কার্যকর অ্যান্টিবডি তৈরি করতে সক্ষম হয়।পরে বানরের দেহে চ্যালেঞ্জ ট্রায়ালে দেখা যায় করোনার যতগুলো ভেরিয়েন্ট এসেছে তার সবকটিতেই টিকাটি শতভাগ কার্যকর।

বাংলাদেশে কোভিড-১৯ শনাক্ত হওয়ার পর দেশিয় ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান গ্লোব ফার্মাসিউটিক্যালস গ্রুপ অব কোম্পানিজ লিমিটেডের সহযোগী প্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড ২০২০ সালের ২ জুলাই দেশে প্রথমবারের মতো কোভিড-১৯ রোগের টিকা আবিষ্কারের ঘোষণা দেয়।

এর প্রায় সাড়ে তিন মাসের মাথায় ১৫ অক্টোবর গ্লোব বায়োটেকের তিনটি টিকাকে (ডি সিক্স ওয়ান ফোর জি ভেরিয়েন্ট এমআরএনএ ভ্যাক্সিন, ডিএনএ প্লাজমিড ভ্যাক্সিনস এবং অ্যাডনোভাইরাস টাইপ-৫ ভেক্টর ভ্যাক্সিন) সম্ভাব্য টিকাপ্রার্থীর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। গ্লোব বায়োটেকই বিশ্বের একমাত্র প্রতিষ্ঠান যার সর্বোচ্চ তিনটি ভ্যাক্সিনের নাম তালিকায় রয়েছে।

গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড ২০১৫ সালে ক্যানসার, আর্থ্রাইটিস, রক্তস্বল্পতা, উচ্চ রক্তচাপ, অটোইমিউন ডিজিজসহ অনেক দুরারোগ্য রোগ নিরাময়ের জন্য বায়োলজিক্স, নভেল ড্রাগ এবং বায়োসিমিলার উৎপাদনের লক্ষ্যে অত্যাধুনিক গবেষণাগার স্থাপনের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *