পুলিশ হেফাজতে আসামির মৃত্যু

Slider টপ নিউজ

453bb088b0d22e38647f45316a175e19-jamalpur

জামালপুর প্রতিনিধি; জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলায় পুলিশ হেফাজতে সোহেল রানা (৩০) নামের এক আসামির মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের অভিযোগ, পুলিশের নির্যাতনে তিনি মারা গেছেন। পুলিশের দাবি, তাঁর স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে।
সোহেল রানার বাড়ি উপজেলার ফুলকোচা ইউনিয়নের পাহাড়ি পটল গ্রামে। তাঁর বাবার নাম রেহান আলী।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গতকাল রোববার বিকেল পাঁচটার দিকে পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে ২৫টি ইয়াবা বড়ি, পাঁচ গ্রাম হেরোইনসহ সোহেল রানাকে গ্রেপ্তার করে। সন্ধ্যা সাতটার দিকে থানা হেফাজতে থাকা অবস্থায় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। চিকিৎসার জন্য পুলিশ তাঁকে মেলান্দহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। অবস্থার অবনতি হলে জামালপুর জেনারেল হাসপাতাল নেওয়ার পথেই রাত নয়টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়।

আজ সোমবার দুপুর ১২টার দিকে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।

লাশের সুরতহাল প্রতিবেদনকারী ও জামালপুর জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ ইমরানুল হকের ভাষ্য, নিহত ব্য​ক্তির শরীরের কোথাও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তাঁর মৃত্যুটি স্বাভাবিক। তারপরও পরিবারের অভিযোগের কারণে লাশটির ময়নাতদন্তের সুপারিশ করা হয়েছে।

নিহত ব্যক্তির ছোট ভাই জাকির হোসেনের অভিযোগ, ‘পুলিশের একটি দল বাড়ি থেকে আমার ভাইকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়। গ্রেপ্তারের পর থানায় গেলে পুলিশ টাকা নিয়ে আজ সকালে যোগাযোগ করতে বলে। কিন্তু রাত ১০টার দিকে আমরা খবর পাই, বড় ভাই অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। পরে শুনতে পাই, আমার ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। একজন সুস্থ মানুষ কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কীভাবে মারা যান, সেটা আমাদের বোধগম্য নয়। অবশ্যই পুলিশি নির্যাতনের কারণে আমার ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে।’

সোহেল রানার বিরুদ্ধে থাকা দুটি মাদক মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমার ভাই গ্রামেই একটি হোটেল পরিচালনা করতেন। সেই দোকানে গাঁজা পায় পুলিশ। কিন্তু সেই গাঁজা আমার ভাইয়ের ছিল না। তারপরও পুলিশ ওই মামলায় আমার ভাইকে জড়িয়ে দেয়।’

মেলান্দহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাজাহারুল করিমের ভাষ্য, পুলিশ মাদকসহ সোহেল রানাকে গ্রেপ্তার করে। থানা হেফাজতে থাকাকালে গতকাল সন্ধ্যার দিকে তিনি বুকে ব্যথা অনুভব করেন। এরপর পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে মেলান্দহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। উন্নত চিকিৎসার জন্য জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়।

মাজহারুল করিম আরও বলেন, সোহেল রানার বিরুদ্ধে মাদকসেবন ও বিক্রির অভিযোগে দুটি মামলা রয়েছে। তাঁর মৃত্যুর ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় কোনো অভিযোগ দেওয়া হয়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *