দুর্ধর্ষ জঙ্গি মুসা আতিয়া মহলে

Slider জাতীয় সারাদেশ

IMG_20170326_123030

সিলেট প্রতিনিধি :: সিলেটের শিববাড়ীতে আতিয়া মহলে জেএমবি’র দুর্ধর্ষ জঙ্গি মুসা অবস্থান করছে বলে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর ধারনা। এই মুসার প্রকৃত নাম মাইনুল ইসলাম। ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল রাজশাহীর বাগমারায় জেএমবি’র সিদ্দিকুল ইসলাম বাংলা ভাই নামক জঙ্গির প্রকাশ্যে অভিযানের সময় জেএমবিতে যোগ দেন মুসা। ঐ সময় মুসা বাগমারার তাহেরপুর ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন। বাগমারার গণিপুর ইউনিয়নের বজ কোলা গ্রামে মুসার বাড়ি। উচ্চমাধ্যমিক পাস করার পর তিনি রাজশাহী কলেজে ভর্তি হন। পরে সেখান থেকে রেফার্ড নিয়ে ঢাকা কলেজে চলে আসেন। ঢাকা কলেজ থেকে অনার্সে উত্তীর্ণ হওয়ার পর উত্তরার লাইফ স্কুলে শিক্ষকতা শুরু করেন। এরই মধ্যে বাগমারার বাসুপাড়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাঁইপাড়া গ্রামের আব্দুস সামাদের মেয়ে তৃষ্ণামনিকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর তিনি উত্তরার ১৩ নম্বর সেক্টরের একটি ৬তলা বাড়িতে ওঠেন। এই বাড়িতেই সপরিবারে ভাড়া থাকতেন মেজর জাহিদ। মুসা মেজর জাহিদের মেয়েকে পড়াতেন। পরে আশুলিয়া থেকে পুলিশ তৃষ্ণামনিকে গ্রেফতার করে।

মুসার মা সুফিয়া বেগম জানান, মেজর জাহিদ, জেএমবি’র আরেক নেতা তানভীর কাদিরসহ অনেক নেতাকে নিয়ে বাসার ছাদে মিটিং করতেন। ঐ মিটিংয়ে মুসা অংশগ্রহণ করেই জঙ্গিতে ঢুকে পড়ে। গত ৮ মাস আগে সে গ্রামের বাড়িতে আসে। ওই সময় সৌদি আরব যাবে বলে ৩ লাখ টাকার জমি বিক্রি করে বাড়ি থেকে চলে যায়। যাওয়ার সময় বাড়িতে থাকা তার ছবিসহ বেশ কিছু কাগজপত্র পুড়িয়ে ফেলে।
তিনি বলেন, আমার ছেলের ঘটনায় লজ্জিত আমি। এক সময় আমার ছেলে ভালো ছাত্রও ছিলো। জানি না আমার ছেলের ভাগ্যে কি আছে। তবে আমার ছেলের মতো আর কোনো ছেলে যেন জঙ্গিতে জড়িয়ে না পড়ে।’
মুসার দ্বিতীয় স্ত্রী মর্জিনা বেগমের বাবা বলেন, শুক্রবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে অপরিচিত এক নম্বর থেকে তার মোবাইল ফোনে মিসড কল আসে। পরে আমি ওই নম্বরে ফোন করি। তখন আমার মেয়ে বলে ‘বাবা আমি’। আমার মেয়ে জানায়, ‘আমার বিপদ, পুলিশ আমাদের বাসা ঘিরে ফেলেছে।’ তখন আমি তাকে বলি তুমি পুলিশের কাছে যাও। এরপর আর কোনো কথা হয়নি।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার ছানোয়ার হোসেন জানান, মুসা নব্য জেএমবি’র একজন অন্যতম সমন্বয়ক। তাকে পুলিশ খুঁজছে।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ২ অক্টোবর ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানের খাগড়াগড়ে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনার পেছনে মুসার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এ সংক্রান্ত দায়ের করা মামলায় মুসাকে আসামি হিসাবে দেখানো হয়েছে। ভারতের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনআইএ) তাকে খুঁজছে।

.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *