নাসিরনগরে গ্রেপ্তার ৭৪, থানা গেটে স্বজনদের আহাজারি

Slider টপ নিউজ

39229_bram

 

 ব্রাহ্মণবাড়িয়া; নাসিরনগরের হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় এ পর্যন্ত ৭৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রোববার রাতভর অভিযানে গ্রেপ্তার হয় ২১ জন। এদিকে ৩রা নভেম্বর রাতে দ্বিতীয় দফায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৫ বাড়ির রান্নাঘর ও গোয়ালঘরে দেয়া অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নতুন করে আরো দু’টি মামলা হয়েছে। পুলিশ বাদী হয়ে করা এসব মামলার প্রতিটিতে একশ’ থেকে-দেড়শ’ জনকে আসামি করা হয়েছে । এদিকে নিরপরাধ লোকজনকে গ্রেপ্তার করার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল দুপুরে থানা হাজত থেকে গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের প্রিজন ভ্যানে করে আদালতে নেয়ার পথে তাদের স্বজনরা থানার সামনে ভিড় জমান। এক নারী স্বজন বিলাপ করতে করতে রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন। আরো কয়েকজন বৃদ্ধ নারীকে কাঁদতে দেখা যায়। তবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেছেন- এই অভিযোগ ঠিক নয়। সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে এবং ভিডিও ফুটেজ দেখে যারা জড়িত তাদেরকেই গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এদিকে গতকাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুলতান সোহাগ উদ্দিনের আদালত ইতিপূর্বে গ্রেপ্তারকৃত ৮ জনের ৩ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। যাদের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয় তারা হচ্ছে উজ্জ্বল, মাসুম, ইয়াছিন, সহিদ, রুনায়িদ, খায়রুল, সুক্ত মিয়া ও বাবুল। গতকাল জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত ৫১টি পরিবারের মধ্যে ১১৪ বান্ডেল ঢেউটিন ও নগদ ৩ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়। জেলা প্রশাসক রেজুওয়ানুর রহমান ক্ষতিগ্রস্তদের হাতে এই সহায়তা তুলে দেন। এ ছাড়া সাবেক মুক্তিযোদ্ধা প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অব. এবিএম তাজুল ইসলাম তার ব্যক্তিগত উদ্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ২ লাখ টাকা বিতরণ করেন। এ সময় তিনি প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন ও প্রকৃত আসামিদের গ্রেপ্তার করার দাবি জানান। এদিকে দুপুরে সেক্টর কমান্ডার ফোরাম নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরে স্থানীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তারা বলেন-সংখ্যালঘু হিন্দু জনগোষ্ঠীর মধ্যে ত্রাস সৃষ্টি করে মহল বিশেষের হীনস্বার্থ হাসিল করা এ হামলার প্রধান উদ্দেশ্য। তারা বলেন দলমত নির্বিশেষে এই অপশক্তির বিরুদ্ধে আন্দোলন এখন সময়ের দাবি। সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম চেয়ারম্যান কেএম সফিউল্লাহ, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম নেতা ম. হামিদ ও হারুন হাবিব উপস্থিত ছিলেন। এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শীর্ষস্থানীয় আলেম উলামারা হামলার শিকার মন্দির ও বাড়িঘর পরিদর্শন করেন। তারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিচার দাবি করেন। মাওলানা আশেক এলাহী ইব্রাহিমীর নেতৃত্বে সেখানে যান তারা। অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন মাওলানা সাজিদুর রহমান, মাওলানা আবদুর রহিম কাশেমী, মুফতি এনামুল হাসান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *