জেলহত্যা দিবস আজ

Slider জাতীয়

file

 

ঢাকা;  কলঙ্কময় জেলহত্যা দিবস আজ। ইতিহাসের এক কালো দিন। ১৯৭৫ সালের এই দিনে ঘাতকরা জাতীয় চার নেতাকে
অন্ধকার কারা প্রকোষ্ঠে নির্মমভাবে হত্যা করে জাতির ইতিহাসে যোগ করেছিল এক কালো অধ্যায়। স্বাধীনতার ৪ বছর পর বাঙালি জাতি হারিয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম বীর সেনানী সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, এএইচএম কামরুজ্জামান ও ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলীকে। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর ওই ঘটনা জাতির জন্য দ্বিতীয় ট্র্যাজেডি, যা পুরো জাতিকে বাকরুদ্ধ করেছিল, অভিভাবকশূন্য করেছিল। ১৫ই আগস্টের নির্মম হত্যাকাণ্ডের তিন মাসেরও কম সময়ের মধ্যে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে সেলের অভ্যন্তরে জাতীয় এ চার নেতাকে হত্যা করা হয়। জাতি আজ শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় স্মরণ করবে জাতীয় এই চার নেতাকে। সেদিন স্বঘোষিত প্রেসিডেন্ট খন্দকার মোশ্‌তাক আহমদের প্ররোচনায় একশ্রেণির উচ্চাভিলাষী মধ্যম সারির জুনিয়র সেনা কর্মকর্তা এ নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটায়। জাতীয় এ চার নেতা মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানি সামরিক জান্তার হাতে আটক বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্ব দেন। পাকিস্তানের সামরিক জান্তা ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ কালো রাতে বঙ্গবন্ধুকে ধানমন্ডির বাসভবন থেকে গ্রেপ্তার করে। পরে দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা যুদ্ধকালে সৈয়দ নজরুল ইসলাম বাংলাদেশ সরকারের ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধকালে বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাজউদ্দীন আহমদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। বঙ্গবন্ধুর অপর ঘনিষ্ঠ সহযোগী এএইচএম কামরুজ্জামান ও ক্যাপ্টেন মনসুর আলী আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধ পরিচালনার ক্ষেত্রে নীতি ও কৌশল নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠন এবং অন্যান্য সামাজিক, রাজনৈতিক সংগঠন যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালনে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। আওয়ামী লীগের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, সকাল ৬টায় বঙ্গবন্ধু ভবন ও দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ দেশের সর্বত্র সংগঠনের শাখা কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ, কালো পতাকা উত্তোলন এবং কালোব্যাজ ধারণ। সকাল সাতটায় বঙ্গবন্ধু ভবনে জমায়েত এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ। সকাল ৮টায় বনানী কবরস্থানে ১৫ই আগস্টের শহীদ ও জাতীয় নেতাদের কবরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, ফাতেহা পাঠ, মিলাদ মাহফিল ও মোনাজাত। রাজশাহীতে জাতীয় নেতা শহীদ কামরুজ্জামানের কবরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, ফাতেহা পাঠ, মিলাদ মাহফিল ও মোনাজাত। বিকাল ৩টায় স্মরণ সভা হবে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে। স্মরণ সভায় সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমপি। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক বিবৃতিতে আওয়ামী লীগের সকল জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন শাখা এবং সকল সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মী-সমর্থক-শুভানুধ্যায়ী এবং সর্বস্তরের জনগণকে ৩রা নভেম্বর যথাযথ মর্যাদা ও শোকাবহ পরিবেশে জেলহত্যা দিবস পালনের জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *