এফবিআইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ

Slider সারাবিশ্ব

 38155_fbi

 

ঢাকা; আইন লঙ্ঘন করেছেন মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের পরিচালক জেমস বি কমি। তিনি আইন লঙ্ঘন করে নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছেন। সরকারি কর্মকর্তারা এমনটা করতে পারেন না। জেমস কমির বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ এনেছেন মার্কিন সিনেটে ডেমোক্রেট নেতা হ্যারি রেইড। ওদিকে আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে এফবিআইয়ের বিরুদ্ধে অফিস অব স্পেশাল কাউন্সিলে অভিযোগ করা হয়েছে মিনেসোটায়। জেমস কমি ‘হ্যাচ আইন’ লঙ্ঘন করেছেন বলে চিঠি লিখেছেন হ্যারি রেইড। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের যখন দু’সপ্তাহেরও কম সময় বাকি তখন হিলারির বিরুদ্ধে তদন্তের ঘোষণা দেয় এফবিআই। বলা হয়, হিলারি ক্লিনটনের সহযোগী হুমা আবেদিন ও তার স্বামী সাবেক কংগ্রেসম্যান অ্যান্থনি ওয়েইনারের কাছ থেকে কিছু ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস উদ্ধার করেছে এফবিআই। ওয়েইনারের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, তিনি ১৫ বছর বয়সী একটি বালিকাকে যৌন উত্তেজনাকর বার্তা পাঠিয়েছিলেন। এ নিয়ে তদন্তে নেমে এফবিআই ওই ডিভাইসগুলো উদ্ধার করে সেপ্টেম্বরে। তা যাচাই করে তাতে হিলারি ক্লিনটনের কিছু ইমেইল পায় এফবিআই। গত শুক্রবার সংস্থার পরিচালক জেমস কমি এ বিষয়টি একটি চিঠির মাধ্যমে মার্কিন কংগ্রেসকে অবহিত করেন। তিনি বলেন, হিলারি ব্যবহৃত ওই ইমেইলগুলো তারা তদন্ত করছেন। এ নিয়ে তীব্র ক্ষোভ ডেমোক্রেট শিবিরে। সেপ্টেম্বরে ওই ডিভাইস পাওয়ার পর বেশ কয়েক সপ্তাহ সময় গেছে এ সময়ে তদন্ত করেছে এফবিআই। কিন্তু তা এতদিন গোপন রেখে কেন নির্বাচনের দু’সপ্তাহেরও কম সময় থাকতে এ তথ্য প্রকাশ করা হলো? এমন প্রশ্ন ডেমোক্রেট শিবিরে। বলা হচ্ছে ওই ডিভাইসে রয়েছে সাড়ে ছয় লাখ ইমেইল। তা যাচাই বাছাই করে নির্বাচনের আগে প্রকাশ করা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য বিশেষজ্ঞদের। যদি তা-ই না হয়, তাহলে কেন নির্বাচনের আগে এ তথ্য প্রকাশ! হিলারি ক্লিনটন ও তার নির্বাচনী প্রচারণা টিম অতি দ্রুত ওই ইমেইল সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশের আহ্বান জানিয়েছেন। কারণ, ওই ইমেইলে খুব গোপন তথ্য আছে বলে অনেকে মনে করতে পারেন। কিন্তু হিলারি দৃঢ়চেতা। তিনি বলেছেন, এতে এমন কিছু নেই যার জন্য তাকে বিচারের মুখোমুখি করা যেতে পারে। অন্যদিকে এ ইস্যুটিকে তো হটকেকের মতো বিলিয়ে যাচ্ছেন তার প্রতিদ্বন্দ্বী ডনাল্ড ট্রাম্প। তিনি এটাকে ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারির চেয়ে বড় কেলেঙ্কারি বলে আখ্যায়িত করেছেন। এর আগে এফবিআই হিলারি ক্লিনটনের বিপুল সংখ্যক ইমেইল তদন্ত করে। সেই মামলাটি ঘুচে যায় জুলাইতে। তবে তখন হিলারি ক্লিনটনের বিরুদ্ধে কোনোই অভিযোগ গঠন করা হয় নি। কিন্তু এবার অ্যান্থনি ওয়েইনারের কারণে তাকে আবার আলোচনায় আসতে হলো। বিশেষ করে এখন যখন আলোচনা শুরু হলো তখন নির্বাচনের প্রায় অন্তিম সময়। এর ফলে নির্বাচনের মোড় ঘুরে যেতে পারে। এরই মধ্যে জনমত জরিপে হিলারি জনপ্রিয়তায় এগিয়ে থাকলেও তা কিছুটা কমেছে। তাকে ছুঁই ছুঁই করছেন ট্রাম্প। এতে সুইং স্টেটগুলোর ভোটের হিসাব পাল্টে যেতে পারে। কারণ, এফবিআইয়ের ওই ‘বিস্ফোরক তথ্য’ সুইং স্টেটের ভোটারদের মন নাড়িয়ে দিতে পারে। এই যখন অবস্থা তখন সিনেটে ডেমোক্রেট নেতা হ্যারি রেইড প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন এফবিআইয়ের পরিচালক জেমস কমিকে। তিনি এক চিঠিতে বলেছেন, জেমস কমি নির্বাচনে এক দলের বিরুদ্ধে অন্য দলকে সহায়তা করার জন্য দ্বিমুখী নীতি গ্রহণ করেছেন। তার ভাষায়, জেমস কমি ‘হ্যাচ অ্যাক্ট’ ভঙ্গ করেছেন। এই আইনের অধীনে কোনো সরকারি কর্মকর্তা তার পদ ব্যবহার করে নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে পারেন না। জেমস কমি’কে উদ্দেশ্য করে হ্যারি রেইড বলেছেন, পক্ষপাতী আচরণের কারণে আপনি ওই আইন ভঙ্গ করেছেন। জেমস কমির বিরুদ্ধে রেইডের আরও অভিযোগ করেন রিপাবলিকান দলের প্রার্থী ডনাল্ড ট্রাম্প, তার শীর্ষ উপদেষ্টারা ও রাশিয়া সরকারের মধ্যে গভীর সম্পর্ক রয়েছে। জনগণের এই সম্পর্কের কথা জানার অধিকার আছে। জেমস কমি’কে উদ্দেশ্য করে হ্যারি রেইড চিঠিতে বলেছেন, এ সম্পর্কে আপনাকে কয়েক মাস আগে আমি জানিয়েছিলাম। অনুরোধ করেছিলাম এ তথ্য জনগণের সামনে প্রকাশ করতে। ওদিকে ইউনিভার্সিটি অব মিনেসোটা ল স্কুলের প্রফেসর, ২০০৫ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত হোয়াইট হাউজের জাতিগত প্রধান আইনজীবী রিচার্ড পেইন্টার রোবার বলেছেন, তিনি এফবিআইয়ের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ করেছেন অফিস অব স্পেশাল কাউন্সিলে। এই কাউন্সিল হ্যাচ অ্যাক্ট ভঙ্গের অভিযোগ তদন্ত করে। নিউ ইয়র্ক টাইমসে তিনি লিখেছেন, আমি কখনো ভাবি নি যে, একটি তদন্তকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক বৃত্তে টেনে আনা হবে এফবিআইকে। কিন্তু তা-ই হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *