রাজাপুরে ১০ টাকা দরের চাল কালো বাজারে বিক্রি

Slider বিচিত্র

হতদরিদ্রদের মাঝে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ১০ টাকা দরে চাল বিক্রি করছে সরকার। অথচ ঝালকাঠির রাজাপুরের শুক্তাগড় ইউনিয়নের কেওতা ও মোল্লার হাট এলাকার ডিলার (পরিবেশক) মো. ইদ্রিস হাওলাদারের বিরুদ্ধে কালো বাজারে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে।

শুধু তাই নয়, উপজেলা খাদ্য গুদাম থেকে ডিলারের গোডাউনে চাল বহনকারি গাড়ি চালককে ভাড়া না দিয়ে ভাড়া বাবদ ৬ বস্তা চাল দিয়েছে ডিলার ইদ্রিস হাওলাদার। গত শনি ও রবিবার এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, চলমান চাল বিতরণ কর্মসূচি শুরুর পর থেকে ডিলার ইদ্রিস হাওলাদারের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। তিনি কার্ডধারীদের চাল না দিয়ে তা বাইরে বেশি মূল্যে বিক্রি করেন বলে অভিযোগ করেন একধিক ব্যক্তি।

উপজেলার নারিকেলবাড়িয়া গ্রামের দিনমজুর আবদুল কাদের সরদার বলেন, ‘আমার ঘরে চাল না থাকায় বাজারে চাল কিনতে যাই। এই সময় এক ব্যক্তি আমাকে ইদ্রিস হাওলাদারের গুদামে কম মূল্যে চাল পাওয়া যাবে বলে জানায়। তখন ওই চালের মান ভালো হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকারি চালে মান বর্তমান বাজারের চালের চেয়ে অনেক ভালো। পরে আমি এক হাজার ছয় শ’ টাকায় দুই বস্তা চাল কিনেছি। ’

ট্রাক চালক মো. আলম ফকির জানায়, ‘আমি গাড়িতে করে রাজাপুর খাদ্য গুদাম থেকে উপজেলার মোল্লার হাটে ডিলার ইদ্রিসের গুদামে চাল পৌঁছে দিয়েছি।

তিনি আমাকে ভাড়ার টাকা না দিয়ে ৬ বস্তা চাল দিয়েছেন।
মোল্লার হাট বাজারের সেলুন ব্যবসায়ী ভবতোষ শীল জানায়, ‘আমার বাড়ি পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার কাঁঠালিয়া গ্রামে। আমার কোন কার্ড নেই। তবে আমি দুই বস্তা চাল ডিলারের কাছ থেকে এক হাজার ছয়শ পঞ্চাশ টাকায় কিনেছি। ’
নারিকেলবাড়িয়া গ্রামের ইয়াসিন হোসেন জানান, আমি ডিলারের গুদাম থেকে আটশ টাকায় এক বস্তা চাল কিনেছি। অথচ আমার কোন কার্ড নেই।
শুক্তাগড় এলাকার মাওলানা আবদুল হক বলেন, আমি ডিলার ইদ্রিসের কাছে টাকা পেতাম। সেই সুবাদে ছয়শ টাকার বিনীময়ে আমাকে এক বস্তা চাল দেয়া হয়েছে।
এছাড়া শুক্তাগড় ইউনিয়নের আবদুল হালিম, মো. কালাম মোল্লা, লিনু বেগম, আবু তালেবসহ বেশকিছু কার্ড বিহীন সাধারন মানুষ খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির এই চাল কালো বাজারের মাধ্যমে ডিলার ইদ্রিস হাওলাদারের কাছ থেকে বেশি মূল্যে কেনার প্রমান পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিলার ইদ্রিস হাওলাদার বলেন, ‘আমি কার্ড ছাড়া কাউকে চাল দেই না। ওরা কি বলছে তা আমি জানি না। ’

জানতে চাইলে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. নাজমুল হোসাইন বলেন, ‘বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। সত্যতা পাওয়া গেলে ডিলারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *