চীনা প্রেসিডেন্টকে স্বাগত বিএনপির

Slider রাজনীতি

35667_b2

 

ঢাকা; চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের ঢাকা সফরকে স্বাগত জানিয়েছে বিএনপি। পাশাপাশি তার এই সফরে ভালো কিছুর প্রত্যাশা করছে দলটি। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় গতকাল রাজধানীর নয়াপল্টনে আয়োজিত এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে এ আশাবাদ প্রকাশ করেন। সাংবাদিকদের সম্মানে শারদীয় দুর্গা উৎসবের এ শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। গয়েশ্বর রায় বলেন, চীনের প্রেসিডেন্টের এই সফরে আমরা ভালো কিছু প্রত্যাশা করছি। একটি বিষয় বুঝতে হবে, আমরা দেশের স্বার্থটা যতটা না বুঝি, বিশ্বের আর যত দেশ আছে, তারা তাদের দেশের স্বার্থটা বেশি বোঝে। সুতরাং পারস্পরিক স্বার্থ সমন্বয় করে যেন সবার স্বার্থ রক্ষা পায় এমন চুক্তি আমরা সব দেশের সঙ্গেই চাই। আশা করছি, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের আসন্ন ঢাকা সফরের সময় আলোচনা ও সম্ভাব্য চুক্তির ক্ষেত্রে ভারসাম্য থাকবে। অতীতের মতো ভবিষ্যতেও চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সুসম্পর্ক বজায় থাকবে, এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে গয়েশ্বর রায় বলেন, চীনের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ভালো ছিল, এখনও আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে। বাংলাদেশে যে সরকারই আসে চীনের সঙ্গে সব সরকারেরই ভালো সম্পর্ক থাকবে। চীনা প্রেসিডেন্টের সফরে বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়নে কয়েকটি চুক্তি হবে এই বিষয়ে দলের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, কী চুক্তি হবে- মিডিয়াও এ ব্যাপারে অবগত নয়। আপনারা জানলে আমরাও জানতাম। চীনা প্রেসিডেন্ট আসবেন, কী নিয়ে আসছেন, কী দিতে আসছেন, কী চাইতে আসছে বা কী আমার দেশ চাচ্ছে- এটা আমরা জানি না। সাধারণ যেসব চুক্তি হয়, গণতান্ত্রিক একটি সরকারের সংসদে এসব আলোচনা হয়। আমরা পুরোপুরি অন্ধকারেই আছি। আমরা প্রত্যাশা করবো ভালো কিছু হবে। তিনি বলেন, যখনই আমাদের উন্নয়ন সহযোগী কোনো দেশের কেউ বাংলাদেশে আসেন, তখন তাদের কাছ থেকে আমরা কিছু আশা করি। আমরা আশা করি, তারা আমাদের সহযোগিতা করবে, উন্নয়নের সহযোগী হবে, শিল্পায়নে সহযোগিতা করবে। এক বছর আগে আমি চীন সফর করে গিয়েছিলাম, সরকারের সঙ্গে কথা বলে এসেছি তো। তিনি বলেন, আমাদের ভাবতে হবে কোন কোন বিষয়গুলো আমাদের জন্য উপযোগী। অর্থাৎ অন্যের লাভের জন্য আমার ঘাড়ে যেন কোনো চাপ না পড়ে। পারস্পরিক লাভ হবে, সে ক্ষেত্রে আমরা যেন জাতিগতভাবে লাভবান হই। গয়েশ্বর রায় বলেন, রাজধানীতে যেসব ফ্লাইওভার তৈরি করা হচ্ছে তা শেষ করার পূর্বনির্ধারিত সময় শেষ হয়ে গেছে কিন্তু এখনও খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে কাজ চলছে। প্রতিনিয়ত বাজেট বাড়ানো হচ্ছে। ফলে মেগা বরকতও বাড়ছে। মেগা প্রজেক্ট মানেই মেগা বরকত। আর এসব প্রজেক্টের কারণে জনগণের ওপর চাপ বাড়বে। বিএনপির নীতিনির্ধারক ফোরামের এ সদস্য বলেন, বিদ্যুতের প্রয়োজন আছে কিন্তু দেশের ক্ষতি হওয়া সত্ত্বেও যদি প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা হবেই। তাহলে কার স্বার্থে তিনি এসব বলছেন? এ সময় দেশের স্বার্থে প্রধানমন্ত্রীকে কাজ করার আহ্বান জানান বিএনপির সিনিয়র এ নেতা। বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস অভিযোগ করে বলেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ রাজনীতিতে সৌহার্দ্য-সম্প্রীতি নষ্ট করছে। আওয়ামী লীগ চায়, কোথাও বিএনপিকে দেখা যাবে না, দলটির সঙ্গে বসা যাবে না। এই যে একটা সংস্কৃতি চালু করলো আওয়ামী লীগ, এটা এবার পূজার সময় মোটামুটি স্পষ্ট হয়েছে আমাদের কাছে। তিনি বলেন, এর মাধ্যমে আওয়ামী লীগ প্রমাণ করতে চেয়েছে, এই (হিন্দু সমপ্রদায়ের) ভোট ব্যাংকের মালিক আওয়ামী লীগ, বিএনপি নয়। পূজামণ্ডপে গিয়ে আমি বলেছি, আমরা হিন্দুদেরকে ভোট ব্যাংক ভাবি না। এই দেশে হিন্দুরা জন্মগ্রহণ করেছে। তারা এ দেশে জন্মগতভাবে ভোটার। তাদের যদি কোনো দল ভোট ব্যাংক ভাবে তারা সেই জাতিকে খাটো করছে। নিজেকে খাটো করা হচ্ছে। ওই হিন্দু সম্প্রদায়কে খাটো করা হচ্ছে। তাই তাদের কোনো দলের ভোট ব্যাংক ভাবার কোনো অবকাশ নেই। বাংলাদেশ একটি ধর্মীয় সম্প্রীতির দেশ। মতবিনিময় অনুষ্ঠানে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, বেলাল আহমেদ, মুনির হোসেন, যুবদল নেতা কফিলউদ্দিন ভূঁইয়া, তৃণমূল দলের সভাপতি হানিফ ব্যাপারীসহ বিএনপি ও যুবদলের বেশ কয়েকজন নেতা উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *