জঙ্গিবাদ দমনে জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধের দাবি

Slider গ্রাম বাংলা জাতীয় টপ নিউজ

36451_nin
গ্রাম বাংলা ডেস্ক: বাংলাদেশে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমন করতে হলে সবার আগে জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করতে হবে বলে মনে করছে একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি। ২০০৯ সালে সন্ত্রাসবিরোধী আইন হওয়ার পরেও জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ না হওয়ায় ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন সংগঠনটির নেতারা। তাঁরা এ ব্যাপারে সবাইকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

‘বাংলাদেশের জামায়াত ও জঙ্গিদের দক্ষিণ এশীয় ও আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক’ শীর্ষক সেমিনারে এই আহ্বান জানানো হয়। আজ শুক্রবার ধানমণ্ডির ডব্লিউভিএ মিলনায়তনে এই সেমিনারের আয়োজন করে নির্মূল কমিটি।

নির্মূল কমিটির জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘৫ জানুয়ারির নির্বাচনে জামায়াত যখন মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেছে, যখন বোমা মেরেছে, ৫ মে যখন হেফাজত তাণ্ডব চালিয়েছে, তখন অনেকেই কোনো অপরাধ খুঁজে পায় না। কিন্তু নির্বাচনে জামায়াত আর তাদের দোসররা না এলেই তারা শোরগোল তোলে।

জামায়াতের কাছে ভারত থেকে আসা টাকা সম্পর্কে আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র আর স্বাধীনতাবিরোধী শত্রুরা তাদের কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু আমরা আমাদের কাজ ঠিকমতো করতে পারছি না। এজন্য জনমত গঠন করতে হবে। সরকারকেও সচেতন হতে হবে।’

অনুষ্ঠানের সভাপতি উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সভাপতি কামাল লোহানী বলেন, ‘রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা এনেছি। রক্ত দিয়েই রক্ষা করতে হবে।’

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির। তিনি বলেন, আগে ধারণা করা হতো শুধু পাকিস্তান বা মধ্যপ্রাচ্য থেকেই জামায়াতকে টাকা দেওয়া হতো। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে জামায়াতকে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালানোর জন্য ভারতের সারদা গ্রুপ হাজার কোটি টাকা দিয়েছিল। যে ইমরানের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তিনি ভারতে জামায়াত-শিবিরের নেতা ছিলেন।

শাহরিয়ার কবির বলেন, ইসলামী ছাত্রশিবিরি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক তালিকায় রয়েছে। কাজেই সবার আগে জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। জামায়াত-জঙ্গি দমনে সর্বস্তরের মানুষকে সম্পৃক্ত করার দাবি জানান শাহরিয়ার কবির।

৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর সরকার নাগরিক সমাজের কোনো কথাই শুনছে না বলে অভিযোগ করেন বাংলাদেশ ইতিহাস সম্মিলনীর সভাপতি মুনতাসীর মামুন। তিনি বলেন, জামায়াত-শিবিরের যে নেটওয়ার্ক সেটি কেবল নিরাপত্তা বাহিনী দিয়ে দমন করা যাবে না। সেটি করতে হলে মনোজগতে পরিবর্তন আনতে হবে। আর সে জন্য মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানাতে হবে। এ কারণে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে ১০০ নম্বরের একটি কোর্স চালু করতে হবে সর্বস্তরে।

নির্মূল কমিটির আইন সম্পাদক তুরিন আফরোজ বলেন, জামায়াত দেশব্যাপী যে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছে তাতে যেকোনো সময় তাদের নিষিদ্ধ করা যায়। কিন্তু যখনই জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার কথা বলা হয় তখন কী যেন হয়। সন্ত্রাসবিরোধী আইনে যেকোনো সময়ই জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা সম্ভব বলে মত দেন তিনি।

নির্মূল কমিটির নির্বাহী সদস্য তানিয়া আমীরও মনে করেন ২০০৯ সালের সন্ত্রাসবিরোধী যে আইন করা হয়েছে তাতেই জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে হবে। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের হাজারও প্রমাণ আছে। কিন্তু কেন কার স্বার্থে সন্ত্রাসবিরোধী আইন বাস্তবায়ন হচ্ছে না?

নিরাপত্তা বিশ্লেষক আবদুর রশিদ বলেন, ইসলামি যতগুলো দল সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছে জামায়াতের গর্ভ থেকে সবার জন্ম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *