সম্পাদকীয়: শিশুদের গণতন্ত্র শেখানো কি খুব জরুরী!

Slider নারী ও শিশু বিচিত্র সম্পাদকীয়

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টায় গাজীপুরের বেগম সুফিয়া মডেল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। এসময় মন্ত্রী বলেন, শিশুকাল থেকে গণতন্ত্রের চর্চা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়াসহ কয়েকটি উদ্দেশ্য নিয়ে এ নির্বাচন করা হচ্ছে।

দেশের ২২ হাজার ৯৬১টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও দাখিল মাদরাসায় এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্চে। ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা সকাল থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিচ্ছে। তাদের প্রতিনিধি নির্বাচনে বেশ কদিন প্রচারণা শেষে আজ ভোটের লাইনে দাঁড়িয়েছে তারা। এ ভোট নিয়ে স্কুলে স্কুলে চলছে উৎসবের আমেজ। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা নির্বাচিত করবে স্টুডেন্টস কেবিনেট। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে মোট ১ লাখ ৮৩ হাজার ৬৮৮টি পদের বিপরীতে ৩ লাখ ২৪ হাজার ৮৩৭জন শিক্ষার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।

এতে মোট ভোটার ১ কোটি ১৪ লাখ ৯৫ হাজার ৬১৮জন। এর মধ্যে ছাত্রী প্রায় ৫৫ শতাংশ। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টায় গাজীপুরের বেগম সুফিয়া মডেল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। বুধবার সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের ৮ আগস্ট পরীক্ষামূলকভাবে প্রথমবারের মতো মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ধারাবাহিকভাবে প্রতিবছর এ নির্বাচন হয়ে আসছে।

১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে জন্ম নেয়া আমাদের “গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে” বর্তমানে গণতন্ত্র কতটুকু প্রাতিষ্ঠানিক রুপ পেয়েছে তা আমাদের সকলেরই জানা। রাজনীতিবিদদের ভোট ভোট খেলা আমাদেরকে কোন জায়গায় দাঁড় করিয়েছে, তা মনে হয় আর বলার অপেক্ষা রাখে না। আামাদের সরকারগুলো স্বাধীনভাবে নির্বাচন কমিশনকে কতটুকু ব্যবহার করে সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে পেরেছে, তা জানা আছে আমাদের। সর্বশেষ ডাকসু নির্বাচন নিঃশেষ গণতন্ত্রকে দাফনের জন্য কবরস্থানে নিয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থায় নাগরিকদের ভোটের পাশাপাশি ছাত্রদের ভোটও আমাদেরকে গণতন্ত্র দিতে পারছে না।

ফলে ১৮ বছর বয়সী একজন ভোটারের ভোটে যেখানে তেমন কোন অর্থ বহন করছে না, সেখানে শিশুদেরকে গণতন্ত্র শেখানো কি এখন অনেক বেশী প্রয়োজন ছিল! যদি তাই হয়, আর শিশুরা আমাদের গণতন্ত্র শিখতে শুরু করে, তাহলে ভবিষৎ কতটুকু মঙ্গময় হবে তা নিয়ে উদ্বেগ ও উৎকন্ঠা থেকেই গেল। কারণ বড়রা ভোট দিতে গিয়ে যেখানে লাশ হয়েও ফিরে আসেন, সেখানে আবেগী শিশুরা কতটুকু নিরাপদে ও শান্তিপূর্ণভাবে গণতন্ত্র চর্চা করতে পারবে, তা নিয়ে উৎকন্ঠা দিন দিন নতুনভাবে বাড়বে, এতে কোন সন্দেহ নেই।

সুতরাং এখনো সময় আছে, শিশুদের গণতন্ত্র শেখানো থেকে বিরত থাকা উচিত। কারণ তারা যখন বিশ্বদ্যিালয়ে পড়বে তখন একটা ভোট দিতে পারবে আর যখন ১৮ বছর বয়সী হবে, তখন তো ভোটারই হবে। তাই এখনি শিশুদের গণতন্ত্র শেখানো মঙ্গলময় হবে না, বরং অমঙ্গলের আশংকাই বেশী। কারণ শিশুরা আবেগী বেশী, আর তারা উত্তেজিত হয়ে যে কোন বিপদ সমান সিদ্ধান্ত নিয়ে নিতে পারে, যা অগ্রহনযোগ্যও বটে। তাই সরকারের উচিত শিশুদের গণতন্ত্র শেখানোর কাজটি বাতিল করা।

ডক্টর এ কে এম রিপন আনসারী
এডিটর ইন চীফ
গ্রামবাংলানিউজটোয়েন্টিফোরডটকম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *