বিনিয়োগ না আসায় রাজনৈতিক অস্থিরতাই দায়ী

Slider অর্থ ও বাণিজ্য জাতীয়

13851_f3

 

 

 

 

 

 

 

বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত পিয়েরে মায়াদোন বলেছেন, কোনো তথ্যই প্রমাণ করে না বাংলাদেশে বিনিয়োগের পরিবেশ ভালো। এ ছাড়া বাংলাদেশে বড় মাপে বিদেশি বিনিয়োগ না আসার পেছনে সামপ্রতিক হত্যাকাণ্ডগুলোও ভূমিকা রাখছে। গতকাল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশ-ইইউ বিজনেস  কাউন্সিলের প্রথম সভার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পিয়েরে মায়াদোন এসব কথা বলেন। বাংলাদেশে ইইউভুক্ত আট দেশ, পাঁচ যৌথ চেম্বার ব্যবসায়ীসহ মোট ৩৬ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন মায়াদোন। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন বাণিজ্যসচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন। অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি, ডেনমার্ক, সুইডেন, নেদারল্যান্ডস ও স্পেনের রাষ্ট্রদূতেরা উপস্থিত ছিলেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর ‘বিজনেস ক্লাইমেট ডায়ালগ’ শিরোনামে আলোচনা হয়।
মায়াদোন বলেন, বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে বাংলাদেশের অনেক সম্পদ রয়েছে, প্রায়ই এমন কথা বলা হয়। কিন্তু এরপরও বিদেশি বিনিয়োগ বাংলাদেশে বড় আকারে আসে নাই। যেসব বিদেশি কোম্পানি ইতিমধ্যে বাংলাদেশে বিনিয়োগ রয়েছে, তারা আবারও বিনিয়োগ করছে। কিন্তু সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ প্রত্যাশার তুলনায় কমে গেছে। তাই তথ্য-উপাত্ত প্রমাণ করে না যে বাংলাদেশে বিনিয়োগ পরিবেশ ভালো। প্রকৃত পক্ষে নতুন বিদেশি বিনিয়োগে কেন এই দ্বৈতাবস্থা বা প্যারাডক্স? নিজেই জবাব দেন মায়াদোন। মায়াদোন বাংলাদেশে কাঙ্ক্ষিত বিনিয়োগ না আসার পেছনে রাজনৈতিক অস্থিরতাকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, এর আরও কারণ আছে, যেমন ক্রমবর্ধমান জঙ্গিবাদ বাংলাদেশে বহু ধরনের নৃশংসতা ঘটছে, বিদেশিদেরও হত্যা করা হচ্ছে। এগুলোর কোনো ব্যাখ্যা নেই, বিচারও নেই।
বিদেশি বিনিয়োগ স্বল্পতা নিয়ে পিয়েরে মায়াদোন বলেন, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও জঙ্গি হামলার পাশাপাশি জ্বালানি স্বল্পতা এবং সীমিত অবকাঠামোও বিদেশিদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে আসার আগে দুইবার ভাবার কারণ। তিনি বলেন, বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ হচ্ছে। তবে, এ ক্ষেত্রে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের দেশগুলোকে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারি অনুমতি পেতে দীর্ঘসূত্রতা, লভ্যাংশ পাঠাতে জটিলতা ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগে নিরুৎসাহিত করছে। আমদানি শুল্ক ছাড়, কাস্টমস নীতি, লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়ন, সার্ভিস সেক্টরে বৈদেশিক বিনিয়োগে উচ্চ আদালতের মামলা জটিলতা, ট্যাক্স আদায় ও নির্ধারণ জটিলতাসহ অন্য কারণে বিনিয়োগে বাধা সৃষ্টি করছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, ইইউ প্রতিনিধিরা যেসব বাধা উল্লেখ করেছেন সেগুলোর সমাধানে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমরা বিনিয়োগে উৎসাহী করতে স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক বিনিয়োগের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
এসব বিষয়ে সমধানের কথা উল্লেখ করে প্রেস ব্রিফিংয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন বলেন, ওষুধ শিল্পে বিনিয়োগে বাধা দূর করার পরামর্শ দিয়েছেন ইউ প্রতিনিধিরা। ৫টি বিষয় নিয়ে দু’দিনব্যাপী ডায়ালগে আলোচনা হয়। সেগুলো হচ্ছে- ওষুধ শিল্প খাত, আমদানি শুল্ক, লাইসেন্স ও সার্ভিস সেক্টরে বৈদেশিক বিনেয়োগে সমস্যা, স্বচ্ছ বিনিয়োগ উৎস নির্ধারণ এবং ট্যাক্স পলিসি নির্ধারণ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *