জঙ্গি দমনে বাংলাদেশ রোল মডেল হতে পারে: আইজিপি

Slider বাংলার মুখোমুখি

IGP20160503124527

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, জঙ্গি দমনে বাংলাদেশ সারা বিশ্বে রোল মডেল হতে পারে। আজ বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি দাবি করেন, ৯০ ভাগ ঘটনার কারণ পুলিশ শনাক্ত করেছে। তারপরও কেউ কেউ পুলিশের অর্জন দেখে না। শুধু ব্যর্থ প্রমাণ করতে চায়।

শহীদুল হক আরও বলেন, যারা কোনো ‘অর্জন’ দেখতে পায় না, তাদের জন্যই আনুষ্ঠানিকভাবে পুলিশ সদর দপ্তর সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে। তবে অনেক প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে পুলিশপ্রধান সংবাদ সম্মেলন শেষ করেন। তিনি দাবি করেছেন, জঙ্গিরা খুব একটা ‘হাই-ফাই নয়’। পুলিশ তৎপর বলেই জঙ্গিরা ‘সেভাবে’ ঘটনা ঘটাতে পারছে না।

শহীদুল হক বলেন, ‘জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটলে অনেকে বলে থাকেন সরকার, প্রশাসন, পুলিশ ব্যবস্থা নেয় না। তারা পুলিশের কোনো অর্জন দেখে না। শুধু ব্যর্থতা দেখে। বাংলাদেশ জঙ্গি দমনে সারা বিশ্বের কাছে রোল মডেল হতে পারে। এখানেই শীর্ষ সন্ত্রাসীর ফাঁসি হয়েছে। ২৩ জনের ফাঁসির আদেশ হয়েছে। ৯০ ভাগ হামলার কারণ পুলিশ উদ্‌ঘাটন করেছে।’

এরপর আইজিপি ২০১৩ সাল থেকে এ পর্যন্ত যতগুলো জঙ্গি হামলা হয়েছে, সেগুলোর কোনটির কী অবস্থা, সে সম্পর্কে একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরেন। পরিসংখ্যানে বলা হয়, ২০১৩ সালে বাংলাদেশে জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেছে দুটি, ২০১৫ সালে ২৬টি এবং এ বছরের প্রথম চার মাসে নয়টি। মোট ৩৭টি মামলায় একটির বিচার শেষ হয়েছে। পুলিশ অভিযোগপত্র দিয়েছে ছয়টি ঘটনার। এসব ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছেন ১৪৪ জন। এঁদের মধ্যে ৪৯ জন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

৩৭টি মামলায় একটির বিচার হয়েছে এবং ছয়টি মামলার অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে—এই পরিসংখ্যান সন্তোষজনক কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে শহীদুল হক বলেন, হামলার কারণ ও কারা সম্পৃক্ত, সেটি পুলিশ বের করে ফেলেছে। কিন্তু পুলিশ ‘ফ্ল লেস’ (ত্রুটিহীন) অভিযোগপত্র দিতে চায় বলেই সময় নিচ্ছে। কখনো কোনো মামলায় ভুল ব্যক্তিকে ধরা হয়নি। ধারাবাহিকভাবে হামলার ঘটনা বাড়ছে কেন, পুলিশ আগাম তথ্য পাচ্ছে না কেন—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ঘরে ঘরে যদি জঙ্গি তৈরি হয়…। পুলিশ তৎপর আছে বলে সেভাবে জঙ্গিরা ঘটনা ঘটাতে পারছে না। ঘরে ঘরে অভিযান চলছে। তাই সংখ্যা আর বাড়েনি।’

ব্যক্তিপর্যায়ে সবাইকে আলাদাভাবে নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব নয় বলেও জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক। তিনি বলেন, জঙ্গিবাদ একটি বৈশ্বিক সমস্যা। বিশ্বের সিরিয়া, ইরাক, আফগানিস্তানসহ বিভিন্ন দেশে এ ঘটনাগুলো ঘটছে। এসব দেখে ‘হোম গ্রোন’ (দেশীয়) জঙ্গিরা উদ্বুদ্ধ হচ্ছে। তবে এদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠীর কোনো যোগাযোগ নেই। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা এসব তথ্য পুলিশকে নিশ্চিত করেছে। বাংলাদেশে আইএস বা আল-কায়েদার মতো জঙ্গিগোষ্ঠীর কোনো অস্তিত্ব নেই।

তবে বিদেশি কোনো সংস্থা সহযোগিতার কথা বললে তাদের স্বাগত জানানো হবে বলে এক প্রশ্নের জবাবে শহীদুল হক বলেন। তিনি বলেন, অভিজিৎ রায় খুনের ঘটনায় ভিডিও ফুটেজ যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয়েছে, তারা ফুটেজ দেখে বেশ কিছু ছবি তৈরি করেছে। পুলিশপ্রধান জানিয়েছেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে যে বা যারা খুন করেছে, তাদের গ্রেপ্তার করা হলেই জানানো হবে। তবে মামলাটির ‘মূল’ উদ্‌ঘাটিত হয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি। তবে কলাবাগানে জোড়া খুনের ঘটনায় কোনো অগ্রগতির খবর সংবাদ সম্মেলনে দিতে পারেনি পুলিশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *