৪১ ব্যবসায়ী-ব্যাংকারের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

Slider অর্থ ও বাণিজ্য

10458_f1

 

 

 

 

 

দেশের ৪১ ব্যবসায়ী ও ব্যাংকারের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার। এ তালিকায় রয়েছেন ২২ ব্যবসায়ী ও ১৯ জন ব্যাংকার। ব্যাংকারদের সবাই বেসিক ব্যাংক লিমিটেডের সাবেক, বর্তমান ও বরখাস্তকৃত কর্মকর্তা। কেউ কেউ বেসিক ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে অন্য ব্যাংকে চাকরি করছেন। অন্যদিকে ব্যবসায়ীরা বেসিক ব্যাংক থেকে নানা উপায়ে ঋণ নিয়েছেন। দুর্নীতি দমন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ই এপ্রিল দুদকের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ মোরশেদ আলম আলাদাভাবে ১০টি চিঠি স্পেশাল ব্রাঞ্চের অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শকের কাছে পাঠান। দুদকের আরেক উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ইব্রাহিম পাঠান আরেকটি চিঠি। ওই চিঠিতে দুদকের এজাহারভুক্ত ৪১ আসামিকে বিদেশ যাত্রা রহিত করার বিষয়টি উল্লেখ করে বলা হয়েছে, এসব আসামি সপরিবারে দেশত্যাগ করে অন্য দেশে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।

এ জন্য এসব আসামি যাতে বিদেশ যেতে না পারেন ওই বিষয়ে প্রয়োজনীয় কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, স্পেশাল ব্রাঞ্চের এডিশনাল আইজির কাছে চিঠি পাঠানোর পাশাপাশি এর একটি কপি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের কাছে পাঠানো হয়। এর ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে স্পেশাল ব্রাঞ্চকে নির্দেশ দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। দুদক সূত্রে জানা গেছে, দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়া ব্যবসায়ী ও ব্যাংকাররা পরস্পর যোগসাজশের মাধ্যমে ৪৬১ কোটি ২১ লাখ ৪০ হাজার টাকা লোপাট করেছেন। এ জন্য গুলশান, পল্টন ও মতিঝিল থানায় ১১টি মামলা হয়েছে। মামলাগুলোর আসামির সংখ্যা ৯২। ব্যাংকারদের মধ্যে একই ব্যক্তিকে একাধিক মামলায় আসামি করা হয়েছে। তবে সব মিলিয়ে ৪১ ব্যবসায়ী ও ব্যাংকারের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।

২২ ব্যবসায়ীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা: দুদকের দেয়া তালিকা অনুযায়ী ২২ জন ব্যবসায়ীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এ তালিকায় আছেন, মেসার্স বি আলম শিপিং লাইনসের মালিক মোহাম্মদ বশিরুল আলম, আমিরা শিপিং এজেন্সির মালিক মো. গিয়াস উদ্দিন মোল্লা, মেসার্স বীথি এন্টারপ্রাইজের প্রোপ্রাইটার কামরান শহীদ, মেসার্স নীল সাগর এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং মেসার্স পারুমা ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসের মালিক আহসান হাবিব লেলিন, মেসার্স আলী ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের মো. মাহবুবুল আলম, এসডি সার্ভে ফার্মের ম্যানেজিং পার্টনার ইকবাল হোসেন ভূঁইয়া, নিউ অটো ডিফাইনের প্রোপ্রাইটার আসমা খাতুন, মেসার্স ফিয়াজ এন্টারপ্রাইজের প্রোপ্রাইটার ওয়াহিদুর রহমান, মেসার্স সৈয়দ ট্রেডার্সের ম্যানেজিং পার্টনার সৈয়দ মাহবুবুল গনি, সৈয়দ ট্রেডার্সের পরিচালক সুলতান আহমেদ,

এসডি সার্ভে ফার্মের চিফ সার্ভেয়ার ও পার্টনার মো. ফারুক, রুপসা সার্ভেয়ার্সের চিফ সার্ভেয়ার ও ম্যানেজিং পার্টনার মো. শাহজাহান আলী, মেসার্স নাহার গার্ডেন প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম, মেসার্স নাহার গার্ডেন প্রাইভেট লিমিটেডের চেয়ারম্যান আকরাম হোসেন, সিমেক্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাশেদুল হাসান, সিমেক্স লিমিটেডের পরিচালক নুসরাত জাহান (ঝুমু), আই.এইচ.এস. ইন্সপেকশন সার্ভিস (বিডি) লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও প্রধান সার্ভেয়ার খন্দকার গোলাম মোস্তফা, পি.এস.আর সার্ভে অ্যান্ড ইন্সপেকশন কোম্পানির চিফ সার্ভেয়ার ও ম্যানেজিং পার্টনার জসিম উদ্দিন চৌধুরী, দেশ পরিদর্শন কোম্পানির প্রোপ্রাইটর মুঃ শফিকুল ইসলাম শিমুল, মেসার্স ইউকে বাংলা ট্রেডিং লিমিটেডের চেয়ারম্যান আহমেদ তাজউদ্দিন, মেসার্স ইউকে বাংলা ট্রেডিং লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মুস্তাকুর রহমান এবং বি.ডি.এস এডজাস্টার্স-এর চিফ এক্সিকিউটিভ ইবনে মোফাজ্জল বকরী। এসব ব্যবসায়ীরা দুদকের দায়ের করা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি।

১৯ ব্যাংকারের বিদেশ যেতে বারণ: দুদকের পাঠানো তালিকা অনুযায়ী ১৯ জন ব্যাংকারের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এ তালিকায় আছেন, বেসিক ব্যাংক লিমিটেডের চাকরিচ্যুত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কাজী ফখরুল ইসলাম, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ, কে, এম সাজেদুর রহমান, বরখাস্তকৃত ডিজিএম (সাবেক শাখা প্রধান, (গুলশান) এসএম ওয়ালিউল্লাহ, বরখাস্তকৃত উপ-ব্যবস্থাপক (সাবেক ক্রেডিট ইনচার্জ, গুলশান শাখা) এস. এম জাহিদ হাসান, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (সাময়িক বরখাস্ত) এ. মোনায়েম খান, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (রিজিওনাল অফিস, চট্টগ্রাম) মো. সেলিম, সাবেক গুলশান শাখা ব্যবস্থাপক (উপ-মহাব্যবস্থাপক) শিপার আহমেদ, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফজলুস সোবহান, শান্তিনগর শাখার সাবেক শাখা প্রধান (বর্তমানে চাকুরিচ্যুত) মোহাম্মদ আলী ওরফে মোহাম্মদ আলী চৌধুরী,

ডিএমডি কনক কুমার পুরকায়স্থ, শান্তিনগর শাখার সাবেক অপারেশন ব্যবস্থাপক (বর্তমানে এসএভিপি, ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড, নারায়ণগঞ্জ শাখা) সরোয়ার হোসেন, শান্তিনগর শাখার সাবেক উপ-মহাব্যবস্থাপক (বর্তমানে মহাব্যবস্থাপক, আগ্রাবাদ শাখা, চট্টগ্রাম) মো. মোজাম্মেল হোসেন, সাবেক অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ মঞ্জুর মোরশেদ, প্রধান কার্যালয়ের ইন্ডাস্ট্রিয়াল ক্রেডিট ডিভিশনের উপ-মহাব্যবস্থাপক কোরবান আলী, মহাব্যবস্থাপক গোলাম ফারুক খান, দিলকুশা শাখার সাবেক ম্যানেজার (বর্তমানে সহকারী মহাব্যবস্থাপক, মৌলভীবাজার শাখা) পলাশ দাশ গুপ্ত, কমার্শিয়াল ক্রেডিট ডিভিশনের মহাব্যবস্থাপক খন্দকার শামীম হাসান, গুলশান শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক ও ক্রেডিট ইনচার্জ (বর্তমানে ব্যবস্থাপক, রিকভারি ডিভিশন) মহিবুল হক এবং প্রধান শাখার মহাব্যবস্থাপক ও ব্রাঞ্চ ইনচার্জ জয়নাল আবেদীন চৌধুরী। এদের মধ্যে অনেক ব্যাংক কর্মকর্তা একাধিক মামলার আসামি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *