অর্থ চুরির দায় প্রধানমন্ত্রী এড়াতে পারেন না : বিএনপি

Slider রাজনীতি

file

বিএনপি অভিযোগ করেছে- বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে অর্থ লোপাটের ঘটনার সঙ্গে সরকারের উচ্চমহল জড়িত। দলটির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, গভর্নরের পদত্যাগের মধ্য দিয়ে এটা প্রমাণিত হয় যে, এই চুরির সাথে শুধু তিনিই (গভর্নর) দায়ী নন, সরকারের উচ্চমহলও জড়িত। আর্থিক খাতে ভয়াবহ লুটপাটের দায় এড়ানোর জন্য শুধু গভর্নরের পদত্যাগই যথেষ্ট নয়। চুরির দায় প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীসহ গোটা সরকারের। তারা এর দায় এড়াতে পারেন না।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমানের পদত্যাগের পর আনুষ্ঠনিকভাবে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে দলের যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ অভিযোগ করেন। ইতিহাসের জঘন্যতম এ ঘটনা নিয়ে সরকার জনগণের সঙ্গে নাটক ও তামাশা করছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, গভর্নরের পদত্যাগ প্রমাণ করে এর পেছনে আরো বড় শক্তি, আরো বড় ক্ষমতাশালী ব্যক্তিরা জড়িত। আমি আবারো অবিলম্বে প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের পদত্যাগ দাবি করছি।

রিজভী বলেন, ভোটারবিহীন এই সরকার পদত্যাগের মধ্য দিয়েই সমাজে শান্তি ফিরে আসবে। নির্বাচনকালীন যদি একটি নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা হয়, তাহলে প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করবে এবং জনগণ নির্ভয়ে ভোট দিতে পারবে। জনগণের ভোটে যারা বিজয়ী হয়ে যে সরকার গঠন করবেন, তারা জনগণের কাছে জবাবদিহি থাকবে। জনগণের কাছে যারা জবাবদিহি থাকেন, তারা চুরি-চামারীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকেন না।

রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। এসময় অন্যান্যের মধ্যে আব্দুস সালাম, খায়রুল কবীর খোকন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সানাউল্লাহ মিয়া, অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

রিজভী সমালোচনা করে বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে অর্থ লোপাটের ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনা ও অনেক নাটকীয়তর পর গভর্ণর ড. আতিউর রহমান পদত্যাগ করেছেন। নিজে করেছেন স্বেচ্ছায় না বাধ্য করা হয়েছে, সেটা বলা মুশকিল। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আতিউর রহমান সততার বিরল দৃষ্টান্ত। আমরা এদেশের অতীতেও দেখেছি, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিশ্বের বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান যাকে দুর্নীতির কথা বলেছেন, তাকে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন দেশপ্রেমিক। এরকম তিনি বলেই থাকেন।

তিনি বলেন, এই ঘটনার সাথে রাঘব-বোয়ালরা জড়িত। আসলে সেই রাঘব-বোয়াল কারা তা তদন্ত না হওয়ার আগেই যে সার্টিফিকেট বা সনদ দেয়া হলো বিদায়ী গভর্ণর সাহেবকে, তাতেই মনে হয় যে ব্যাপারটা একেবারে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ জায়গা থেকেই বিষয়গুলো ঘটছে বলে সন্দেহ করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।

বিএনপির এই যুগ্ম মহাসচিব বলেন, অবস্থাদৃষ্টে ও পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে আমাদের মনে হয়, যে রাষ্ট্রের সবোর্চ্চ জায়গা থেকে একটা মদদ আছে বা তারা জানে। কারণ ঘোড়ার আগে গাড়ি জুড়ে দেন, তাহলে এটা চলবে না। তদন্তের আগেই আপনি সার্টিফিকেট দিয়ে দিচ্ছেন। এসব কথাই সন্দেহ দানা বাঁধছে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রিজভী আরো বলেন, দেশে আর্থিক খাতসহ সারাদেশে যে অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে এটা একটা বড় ঝড়ের সংকেত বহন করে।

সংবাদ সম্মেলনে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে বিভিন্ন স্থানে ক্ষমতাসীন দলের সন্ত্রাসীরা বিএনপির মনোনীত প্রার্থীদের বাড়ি-ঘরে হামলা ও প্রচার-প্রচারণায় বাধা দেয়ার অভিযোগ করেন রিজভী। নোয়াখালি ও ঝিনাইদহের বিভিন্ন ইউনিয়নে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের মিথ্যা অভিযোগে ব্যাপকভাবে গ্রেফতার করা হচ্ছে। তারা প্রচারণা চালাতে পারছে না। গ্রেফতার আতঙ্কে কর্মীরা পালিয়ে বেড়াচ্ছে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *