ভারতের গ্যাসে খুলনায় বিদ্যুৎকেন্দ্র

Slider অর্থ ও বাণিজ্য

 

 

 

2016_02_08_21_57_30_sozvGOv6jBb5TxWbFCcPUctZY1yrP1_original

 

 

 

 

 

ঢাকা : ভারত থেকে গ্যাস এনে খুলনায় বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে। এই তরলকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) সরবরাহ করবে ভারতের এইচ এনার্জি প্রাইভেট লিমিটেড। এই গ্যাসে নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি প্রস্তাবিত ৮০০ মেগাওয়াটের একটি কেন্দ্র চালাবে।

বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র বাংলামেইলকে এ তথ্য জানিয়েছে।

দেশে এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু হলেও এলএনজি ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের প্রক্রিয়া এটাই প্রথম। এই বিদ্যুৎপ্রকল্পে বিনিয়োগের জন্য এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে জানিয়েছে সূত্র।

এলএনজি আমদানির বিষয়ে এইচ এনার্জির সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করবে নর্থওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি (নওপাজেকো)। ইতোমধ্যে খসড়া এমওইউ এর ওপর আইন মন্ত্রণালয়ের অনাপত্তি (ভ্যাটিং) পাওয়া গেছে। বিদ্যুৎ বিভাগও খসড়া এমইউটি অনুমোদন করে গত ৪ ফেব্রুয়ারি নর্থওয়েস্টকে একটি চিঠি দিয়েছে।

বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সহকারী সুরাইয়া আখতার জাহান স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে নওপাজেকো কে এমওইউ স্বাক্ষরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এর আগে গত ১২ আগস্ট ভারত থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে এলএনজি আমদানির বিষয়ে জ্বালানি মন্ত্রণালয় নীতিগত সম্মতি দেয়। এরপর গত ১৫ নভেম্বর নওপাজেকো’র পরিচালনা বোর্ডে বিদ্যুৎকেন্দ্রর বিষয়টি অনুমোদন পায়।

নর্থ ওয়েস্ট এর সূত্রে জানা গেছে, ইউনিট প্রতি ( মিলিয়ন বিটিইউ) এলএনজির দাম ১১ ডলার হলে প্রতি ইউনিট ( কিলোওয়াট-ঘণ্টা) বিদ্যুতের দাম পড়বে ৭ টাকা ৫০ পয়সা।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হলদিয়ায় এলএনজি টার্মিনালটা হবে। সেখান থেকে যশোর সীমান্ত দিয়ে পাইপলাইনে এই এলএনজি আসবে।

পরিকল্পনা অনুসারে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ২০২১ সালে উৎপাদনে আসবে। এ কেন্দ্রে দিনে ১২৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস লাগবে।

নওপাজেকো ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো নুরুজ্জামান এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘এখন বিশ্ব বাজারে এলএনজির দাম কম। আমাদের মতে এলএনজি দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারলে তা তেলের চেয়ে সাশ্রয়ী হবে।’

দেশে উত্তোলিত প্রাকৃতিক গ্যাসে এক ইউনিট (কিলোওয়াট-ঘণ্টা) বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ এক থেকে দেড় টাকা আর তেলে এ খরচ হয় ৮ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত।

উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর জ্বালানি সঙ্কট মোকাবেলায় কক্সবাজারের মহেশখালীতে এলএনজি টার্মিনাল তৈরির উদ্যোগ নেয়। ২০১৪ জানুয়ারিতে আওয়ামী লীগ পুনরায় সরকার গঠনের পর প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্পগুলোর সংক্ষিপ্ত তালিকায় এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি এক্সিলারেট এনার্জির  সঙ্গে ১৫ বছরের জন্য টার্মিনাল ব্যবহারের চুক্তি (টিইউএ) স্বাক্ষর করবে পেট্রোবাংলা ৷ টার্মিনাল নির্মাণ শেষে ২০১৭ সালের শুরুর দিক থেকে গ্যাস সরবরাহ শুরু হবে। প্রায় ১ লাখ ৩৮ হাজার ঘন মিটার এলএনজি ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন টার্মিনালটি থেকে দৈনিক ৫০ কোটি ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাবে।

এলএনজি আমদানির জন্য ইতোমধ্যে কাতারের সঙ্গে দুই দফা সমঝোতা চুক্তি করেছে বাংলাদেশ।

এ উদ্যোগটির পাশাপাশি জ্বালানি বিভাগ ভূমিবেষ্টিত (ল্যান্ড বেজড) আরও দুটি টার্মিনাল নির্মাণের কার্যক্রম শুরু করেছে। টার্মিনাল দুটি মহেশখালী এবং পটুয়াখালীর পায়রা বন্দর এলাকায় নির্মাণ করা হবে। পরিকল্পনা অনুসারে প্রতিটি টার্মিনাল এক হাজার মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি রিগ্যাসিফিকেশন (পুনরায় গ্যাসে রূপান্তর) ক্ষমতা সম্পন্ন হবে।

অন্য দিকে বিদ্যুৎ বিভাগের পাওয়ার সেলও মহেশখালীর মাতারবাড়ীতে একটি ভূমিবেষ্টিত এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। বছরে ৩৫ লাখ টন এলএনজি রিগ্যাসিফিকেশনের ক্ষমতাসম্পন্ন টার্মিনাল নির্মাণে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।

সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরাকরি পর্যায়েও এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেয়া হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *