লোমহর্ষক সাপ খেলার যাদুকর ইকবাল

বিচিত্র

2015_12_15_09_42_50_2vPPxoXcX2sKowtpk5SaYSvzkru2xR_original

 

 

 

 

ঢাকা: সাপ নিয়ে সাপুড়েরা কত খেলাই না দেখায়! তারা দুই হাতে বীন বাজায় আর কোমর দুলায়। সঙ্গে ফনা তুলে নাচে তাদের পোষ মানা বিষধর সরীসৃপরা। এই তো সাপুড়েদের চিরায়ত কাজ কারবার। কিন্তু সাপুড়ে ইকবাল জগির কথা আলাদা। তিনি সাপ নিয়ে যে খেলা দেখান তা এককথায় অবিশ্বাস্য। অভিনব তো বটেই।

পাকিস্তানের বাসিন্দা ৩০ বছরের ইকবাল জগি কোনো সাধারণ সাপুড়ে নন। তিনি গত ১২ বছর ধরেই অদ্ভুত আর ভয়াবহ এক সাপের খেলা দেখিয়ে আসছেন। সম্প্রতি এক বিয়ে বাড়ির অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের জন্য নিজের সেই খেলাটি আবার দেখালেন। তিনি একটি জ্যান্ত বিষধর সাপ নিজের নাক দিয়ে ঢুকিয়ে দিলেন। খানিক পর মুখ দিয়ে বের করলেন দু ফুটের ওপর লম্বা সে সাপটিকে। ওই খেলা দেখতে দেখতে আতঙ্কে দর্শকদের গয়ের লোম দাঁড়িয়ে যায়। তারা ভাবে-‘হায় আল্লা, এরপর কি? সাপটি সত্যিই বের হবে তো, যদি না বের হয়! মানুষটাকে যদি কামড়ে দেয়।’ এই হল ইকবালের খেলার আসল সাসপেন্স।

ইকবালের বাড়ি পাকিস্তানের বন্দর নগরী করাচি সংলগ্ন এক গ্রামে। পাঁচ মেয়ে আর তিন ছেলে নিয়ে বিরাট সংসার। আয় বলতে সেই সাপের খেলা আর কৌশল যা ১২ বছর ধরে করে আসছেন। ঝুঁকিপূর্ণ এই খেলায় তার আয় মাত্র ৫ পাউন্ড। বাংলাদেশি মুদ্রায় ৫৯২ টাকা। একজন মানুষের জীবনের দাম মাত্র ৫ পাউন্ড! অবাক হচ্ছেন? তাহলে ইকবাল কি বলে শুনুন। এ সম্পর্কে তার বক্তব্য,‘সাপুড়ে হিসেবে আমাকে আমার সম্প্রদায়ের লোকজন সম্মান করে। আমি জীবনের ঝুঁকি নিয়েই এটি দেখাই। চাইলেই যে কোনো সাপুড়ের পক্ষে এটি করা সম্ভব নয়। গুরুজনের আশীর্বাদ আছে বলেই আমি এ ধরনের খেলা দেখাতে পারি।’

নিজের এই প্রতিভা নিয়ে এক ধরনের গর্ব বোধ করেন ইকবাল। তাই তো নিজের জীবনকে হাতের মুঠোয় নিয়ে প্রতিনিয়ত এই খেলা দেখান। আতঙ্কিত দর্শকরা যখন অধীর আগ্রহ নিয়ে সাপটি বেরিয়ে আসার প্রতীক্ষায় থাকে, তখন অদ্ভূত এক ভালোলাগায় আপ্লুত হন সাপুড়ে ইকবাল। উপভোগ করেন তার দর্শকদের চূড়ান্ত সাসপেন্স।

তবে সবসময় যে তিনি সফল হন তা বলা যায় না। একবার তো মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন। কয়েক বছর আগের কথা। তিনি করাচির এক কলেজে খেলা দেখাচ্ছেন। এসময় বিষধর সাপটি তার মুখে কামড় দেয়। ফলে তিন দিন সংজ্ঞাহীন ছিলেন ইকবাল। ভাগ্যগুণে বেঁচে গেছেন। কিন্তু হার মানার মানুষ নন সাপুড়ে ইকবাল। এখনো তিনি ভয়াবহ ওই খেলাটি দেখিয়ে চলেছেন। এ সম্পর্কে স্পষ্ট স্বীকারোক্তি,‘জানি, এটি আমার জীবন কেড়ে নিতে পারে। কিন্তু কি করব বলুন, আমি যে যে আর কোনো কাজ জানিনা। পেট চালানো জন্য এ কাজই করতে হচ্ছে আমাকে।’

তবে এই খেলা দেখানোর আগে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থণা করেনে ইকবাল। সাপটি যেন তাকে না কামড়ায়। পরের দিন নতুন খেলা দেখানোর আগ পর্যন্ত যাতে তিনি বেঁচে থাকতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *