শ্রীপুরের সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে নকল নবিশ ফারুক কোটি পতি!

Slider গ্রাম বাংলা জাতীয় টপ নিউজ

Gazipur_

ষ্টাফ করেপসপনডেন্ট

গ্রাম বাংলা নিউজ২৪.কম

শ্রীপুর অফিস: শ্রীপুর সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে ঘুষের দাবী নিয়ে দলিল লিখক সাব-রেজিষ্ট্রার ও তার ব্যক্তিগন মিডিয়াম্যান কথিত নকল নবিশ ফারুকের মাধ্যমে সৃষ্ট ঘটনার পর মুখ খুলতে শুরু করেছে দলিল লেখক সহ ভোক্ত ভোগীরা।

দলিল লিখক ও ভোক্ত ভোগীদের সাথে কথা বলে ও অভিযোগে জানা যায়, ঘুষ বানিজ্য সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে নিত্য দিনের ওপেন সিকরেট ব্যাপার। ফারুকের নিকট দলিল লেখক, ভেন্ডার, জমির ক্রেতা বিক্রেতা থেকে শুরু করে ওই অফিসের কর্তা ব্যক্তিসহ সাব রেজিষ্ট্রার জিম্মি হয়ে পড়েছে। সাব রেজিষ্ট্রার কাঠের চেয়ারে কাঠের পুতুল হয়ে আয়েশ করে বসে থাকেন মাত্র। দলিল রেজিষ্ট্রি করতে গেলে প্রথম বাধার মুখে পড়ে ফারুকের। দলিল দেখেই ইচ্ছা মত দাম হাঁকে ফারুক। দলিল বিশেষে সর্বনিম্ন ৫ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা ঘুষের বিনিময়ে দলিল রেজিষ্ট্রি হয়ে থাকে। ফারুক দীর্ঘদিন ধরে সাব রেজিষ্ট্রারের ঘুষের মিডিয়াম্যান হিসেবে কাজ করে আসছে। অবৈধ অর্থ দিয়ে অফিস এলাকায় গড়ে তুলেছে সঙ্গবদ্ধ ফারুক বাহিনী। সে প্রকাশ্যে বলে থাকে, তার টাকা ডি.আর, আই.জি.আর, মন্ত্রী পর্যন্ত ভাগ পেয়ে থাকে। তাকে কেউ কিছু করতে পারবেনা। ইতিপূর্বে বহুভার ফারুকের ঘুষ কেলেঙ্কারীর পর সংবাদ প্রকাশের পর তাকে বরখাস্ত করা হয়। প্রভাবশালীদের মেনেজ করে নিজ কর্মেই আশিন থাকে ফারুক।

শ্রীপুরে নতুন সাব রেজিষ্ট্রার যোগদানের পরই ফারুক অর্থ সহ অনৈতিক সুবিধার জালে ফেলে কব্জা করে নেয়। তখন কাঠের পুতুল হয়ে বসে থাকা ছাড়া উপায় থাকেনা সাব রেজিষ্ট্রারের। এ সুবিধা নিয়েই ফারুক হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। জনস্রোতী রয়েছে বর্তমান শ্রীপুরে দুর্নীতিবাজ ও কালো টাকার মালিকদের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে ফারুক। সাব রেজিষ্ট্রি এলাকায় নিরাপদে থেকে মাদক ব্যবসার নেপথ্যের নায়ক ফারুক এমন কথাও লোক মুখে শুনা যায়। বর্তমান সাব রেজিষ্ট্রার জামিনুল হক শ্রীপুরে যোগদানের পর নামে বেনামে বিপুল পরিমান জমি, ধানমন্ডিতে ফ্ল্যাট, নোয়া মাইক্রো, প্রাইভেটকারের মালিক হইয়াছেন তিনি। তার ব্যক্তিগত মিডিয়াম্যান ফারুকের নামেও রয়েছে কোটি কোটি টাকার সম্পদ। শ্রীপুরে বিসমিল্লাহ গ্র“পের দক্ষিনে রয়েছে ৭০ লাখ টাকার দুই বিঘা জমি। মাওনা ইউনিয়নে রাথুরা মৌজায় রয়েছে ১২ বিঘা, সাবেক উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান এর বাড়ীর পার্শ্বে প্রায় ১০ কোটি টাকা মূল্যের জমি, এছাড়া উত্তরায় রয়েছে বিলাশ বহুল বাড়ীসহ কোটি কোটি টাকার সম্পদ। সমাজের নিম্ন বৃত্ত পরিবারের সন্তান হলেও বর্তমানে কোটি কোটি টাকার মালিক ফারুক। ফারুকের ঘুষ নির্যাতনের কারণে অতিষ্টি হয়ে উঠলেও মুখ খোলতে সাহস পায়না দলিল লিখকরা।

Gazipur_গোপন সূত্র জানায়, দলিলের টাকা নিয়ে অনেক লিখকের ষুষের দাবী পুরন করতে গিয়ে নিজের পকেট ফাঁকা হয়ে যায়। ভোক্ত ভোগীরা জানায়, প্রভাবশালী মহল ও কতিপয় দলিল লেখক কে ম্যানেজ করে চলছে ফারুকের ঘুষ বানিজ্য। প্রতি নকল নবিশকে দৈনিক নির্দিষ্ট সংখ্যক দলিল কপি করার নিয়ম থাকলেও দীর্ঘ চার বছরে একটি দলিলও না লিখে নকল নবিশ এখন ফারুক। ২২ জুলাই ফারুকের অনৈতিক ঘুষ দাবীর প্রতিবাদ করতে গিয়ে ফারুক বাহীনির রূদ্ররুষে পড়ে শ্রীপুর উপজেলা দলিল লিখক সমিতির সাধারন সম্পাদক শাহজাহান মন্ডল। ঘুষের প্রতিবাদ করায় লাঞ্চিত হতে হয় তাকে। ঘুষ দাবী ঘটনা দামাচাপা দিতে রাতেই ফারুক মামলা করে শাহজাহানের বিরুদ্ধে। পরে সাব রেজিষ্ট্রারের সাথে যোগসাজস করে শাহজাহান মন্ডলের সনদ বাতিলের অভিযোগ করলে জেলা রেজিষ্ট্রার তরিগড়ি করে সরেজমিনে তদন্ত না করে শাহজাহান মন্ডলকে সাময়িক বরখাস্ত করেন।

 

এদিকে ২৪ জুলাই শ্রীপুর উপজেলা পরিষদের আইন শৃংখলা কমিটির সভায় ফারুকের নেতৃত্বে শ্রীপুর সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে ঘুষ বানিজ্য কথা উঠে এলে ইউএনও নির্দেশে পুলিশ তিন দফা অভিযান চালিয়ে ফারুককে গ্রেফতার করতে ব্যর্থ হয়। এদিকে শাহজাহান মন্ডলকে ঘুষের টাকার জন্য লাঞ্চিত করে তার কাছ থেকে নগদ ২ লাখ টাকা ছিনাইয়া নেওয়ার ঘটনায় শাহজাহান মন্ডল বাদী হয়ে শ্রীপুর মডেল থানা অভিযোগ দায়ের করেন। দলিল লিখকরা জানায়, সম্প্রতি সাব রেজিষ্ট্রার অন্যত্র একাধিকবার বদলী হলেও মোটা টাকার বিনিময়ে বদলী ঠেকিয়ে অবৈধ প্রন্থায় অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। প্রতিদিনই দাগ, খতিয়ান পরিবর্তন করে ফারুকের মাধ্যমে ভূয়া নামজারী কাগজপত্র তৈরী করে ভিপি ও বনের জমির দলিল রেজিষ্ট্রি হচ্ছে মোটা টাকার বিনিময়ে। নিজে কমিশনে না গিয়ে মোটা টাকা আদায় করে নকল নবিশ তাইজুদ্দিন, ওয়াজ উদ্দিন, আলমগীরকে পাঠিয়ে দলিল রেজিষ্ট্রি করে থাকেন। গত এক মাসের রেজি: হওয়া দলিল গুলো তদন্ত করলেই বেড়িয়ে আসবে জাল জালিয়াতির চাঞ্চল্যকর সকল তথ্য। এলাকাবাসী এব্যাপারে দূনীতি দমন কমিশনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এব্যাপারে ফারুক ও সাব রেজিষ্ট্রারের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তাদের বক্তব্য পাওয়া যায় নি।

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *