আগৈলঝাড়ার শুঁটকি পল্ল¬ীতে মাছ শুকাতে ব্যস্ত জেলেরা

Slider অর্থ ও বাণিজ্য

Photo- Agailjhara  25-11-15

অপূর্ব লাল সরকার, আগৈলঝাড়া (বরিশাল) থেকে :
মৎস্য অঞ্চল হিসেবে পরিচিত বিল বাওড় ঘেরা বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলা। এ অঞ্চলের শত শত পরিবার শুঁটকি ব্যবসার সাথে জড়িত রয়েছে। উপজেলার পয়সারহাট-ত্রিমুখী নদীর উপকূল এলাকাসহ উপজেলার  বিভিন্ন স্থানে গড়ে ওঠেছে শুঁটকি পল্ল¬ী। এ অঞ্চলের সুস্বাদু মিঠা পানির নানা প্রজাতির মাছ সমগ্র দেশে সরবরাহ হয়। মাছ ধরার পেশার সাথে জড়িত দরিদ্র পরিবারগুলো অধিক লাভের আশায় বছরের আশ্বিন মাসের প্রথম থেকে ৬ মাস শুঁটকির কাজ পেশা হিসেবে বেছে নেয়।
প্রায় একযুগ পূর্বে বানিজ্যিকভাবে গড়ে ওঠে পয়সারহাট-রাজাপুর-ত্রিমুখী-রাজিহারসহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে শুঁটকি পল্ল¬ী। শুঁটকি তৈরীতে বিভিন্ন প্রকার মাছের মধ্যে পুঁঠি, শৌল, টেংরা, খলিশা, পাবদা, কৈ, শিং, মাগুর, মেনি, ফলি উল্লেখযোগ্য। ব্যবসায়ী মন্মথ রায়, সেকেন্দার চৌকিদার, অশোক রায়, সোবহান মিয়া, দিলীপ অধিকারী, জয়নাল চৌকিদার, অবনী রায়, মঙ্গল অধিকারী, নরেশ তালুকদার বলেন, বাজার থেকে ১মন কাচামাছ কিনে শুকালে ১৫-১৬ কেজি শুঁটকি তৈরি হয়। বর্তমানে প্রতি মন কাচা পুঁটি মাছ ক্রয় করতে হয় ১৫শ’ টাকা, তিনমন কাচা মাছ শুকালে ১মন শুঁটকি তৈরী হয়। যার বর্তমান বাজার মূল্য ৪হাজার ৬শ’ টাকা রয়েছে। গত বছর ১মন শুঁটকি পুঁটি মাছ ৫ থেকে ৬ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়েছিল। এবছর সেই শুঁটকি ৪ থেকে ৫ হাজার টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। অথচ কাঁচা মাছ তাদের পূর্বের চেয়ে কয়েকগুণ বেশী দামে কিনতে হচ্ছে। ওই পল্ল¬ীর মাছ কাটার কাজে নিয়োজিত রাজাপুর গ্রামের সন্ধ্যা অধিকারী, আয়না বেগম, পপি অধিকারী, শোভা রানী জানান, বছরে ৬ মাস মাছ কাটার সাথে নিয়োজিত থাকলেও বাকি ৬ মাস অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাতে হয়। তারা আরও জানান, ছেলে-মেয়েরা স্কুলে লেখাপড়া করছে। মাছ কেটে যা আয় করি তা দিয়ে বহুকষ্টে জীবনযাপন করছি। তারা আরও বলেন, বর্তমানে শুকনা মৌসুমের শুরুতে মাছ বেশী পাওয়া গেলেও মাঝামাঝি সময়ে বিলে মাছ কম থাকায় তাদের দু:খ-দুর্দশা বেড়ে যায়। শুঁটকি ব্যবসায়ী পয়সারহাটের মন্মথ রায় জানান, সরকারীভাবে কোন সহজ শর্তে ঋণ না পাওয়ায় প্রতিবছরই আমাদের দেনাগ্রস্থ হতে হচ্ছে। শুঁটকি পল্লীর সাথে জড়িত মৎস্যজীবিরা সরকারের কাছে সাহায্যের পরিবর্তে সহজ শর্তে ঋণ আশা করছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *