ঢাকা : গৃহকর্মী নির্যাতনের অভিযোগে ক্রিকেটার শাহাদাৎ ও তার স্ত্রী মামলার বাদীকে ‘ম্যানেজ’ করে সাজা এড়ানোর চেষ্টা করছেন বলে ট্রাইব্যুনাল সূত্রে জানা গেছে।
রোববার মামলাটিতে সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য ছিল। এদিন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আলী আজগর স্বপন ট্রাইব্যুনালে সাক্ষীর হাজিরা দাখিল করেন।
কিন্তু বাদীপক্ষের সাথে একটি আপসরফায় পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন বিধায় সাক্ষ্যগ্রহণ না করে নতুন তারিখ ধার্যের মৌখিক আবেদন জানান আসামিপক্ষের আইনজীবী। আসামিপক্ষে অ্যাডভোকেট কাজী নজিবুল্লাহ হিরু ও ভিকটিমের পক্ষে মহিলা আইনজীবী সমিতি মামলাটি পরিচালনা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আলী আজগর স্বপন জানান, তিনি ট্রাইব্যুনালকে জানিয়েছেন, মামলার এ পর্যায়ে এসে কোনো ধরনের আপসের আইনি সুযোগ নেই। শেষে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৫ এর বিচারক তানজিলা ইসলাম ১০ এপ্রিল সাক্ষ্যগ্রহণের নতুন তারিখ নির্ধারণ করেন।
গত ২২ ফেব্রুয়ারি এ মামলাটিতে বিচারক আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন। ২০১৫ সালের ২৯ ডিসেম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৪(২) খ ধারায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিরপুর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শফিকুর রহমান ঢাকা সিএমএম আদালতে এ চার্জশিট দাখিল করেন।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৪ (২) খ ধারা অনুযায়ী বিচারে শাহাদাত এবং নিত্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের সর্বোচ্চ ১৪ এবং সর্বনিম্ন ৭ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।
মামলাটিতে গত বছর ৪ অক্টোবর শাহাদাতের স্ত্রী জেসমিন জাহান নিত্যকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করলে আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান। ৫ অক্টোবর শাহাদাৎ আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আদালত তারও জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান। এরপর ৮ অক্টোবর শাহাদাতকে তিন দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়।
দীর্ঘদিন কারাভোগের পর গত ১ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ নিত্য শাহাদাৎ (ক্রিকেটার শাহাদাতের স্ত্রী) এবং গত ৮ ডিসেম্বর হাই কোর্ট শাহাদাতের জামিন মঞ্জুর করলে তারা কারামুক্ত হন।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, মিরপুরের ২ নম্বর সেকশনের এইচ ব্লকের ৫ নম্বর রোডে শাহাদাতের বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করতো হ্যাপি। গত ৬ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১১টার দিকে পল্লবীর সাংবাদিক কলোনির ৩ নম্বর রোডের মাথায় হ্যাপিকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন মিরাজ উদ্দীন নামে এক ব্যক্তি।
গৃহকর্মীকে নির্যাতনের অভিযোগে জাতীয় দলের ক্রিকেটার শাহাদাৎ হোসেন রাজীবের বিরুদ্ধে গত ৬ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১০টার দিকে সাংবাদিক খন্দকার মোজাম্মেল হক মিরপুর মডেল থানায় মামলা করেন। মামলার এজাহারে তাদের বিরুদ্ধে শিশুটিকে অমানুষিক নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয়। এরপর গত ১৩ সেপ্টেম্বর গৃহপরিচারিকা মাহফুজা আক্তার হ্যাপি (১১) আদালতে হাজির হয়ে জবানবন্দি প্রদান করেন।
গত ৮ সেপ্টেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে নির্যাতনকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছিল গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্ক ও শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরাম।