আগামীতে স্থানীয় সরকারের সকল নির্বাচন দলীয় প্রতীকে করার কথা ভাবছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
দলীয়ভাবে নির্বাচন হলে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোই ওই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে। ফলে নিবন্ধন বাতিল হওয়া দল হিসেবে জামায়াত ওই নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।
নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ আবদুল মোবারক এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘দলীয় প্রতীকে আসন্ন পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচনী আইনে যদি সংশোধনী আনা হয় তাহলে অনিবন্ধিত বা নিবন্ধন বাতিল হওয়া কোন দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। ফলে সর্বোচ্চ আদালতে নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় জামায়াতে ইসলামীও দলীয় প্রতীকে অংশগ্রহণ করতে না পারারই কথা। তবে তারা স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে।’
আবদুল মোবারক বলেন, সরকার যদি স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয়ভাবে করতে চায় তাহলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে মন্ত্রিসভায় ও জাতীয় সংসদে পাস হওয়ার আইনের অনুলিপি প্রজ্ঞাপণ আকারে আমাদের পাঠালে আমরা সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
কমিশনের সংশ্লিষ্ট শাখার এক কর্মকর্তা বলেন, স্থানীয় নির্বাচনগুলো নির্দলীয়ভাবে হলেও তফসিলে ইদানিং দেখা গেছে এসব নির্বাচন আর নির্দলীয় থাকছে না। ফলে বিভন্ন রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজসহ সংশ্লিষ্টদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল স্থানীয় সরকারের নির্বাচনগুলোও দলীয়ভাবে এবং দলের প্রতীকে করা হোক। তাই আসন্ন পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে।
তিনি বলেন, শিগগিরই তা মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকে পাস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবং জাতীয় সংসদের পরবর্তী অধিবেশনে এই আইনটি উত্থাপিত হবে। আইনটি সংশোধন করা হলে নিবন্ধিত ৪০টি রাজনৈতিক দল ছাড়া অন্য কোন দল নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।
তিনি বলেন, আগামী ডিসেম্বরে পৌরসভা ও মার্চে সারাদেশে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা নির্বাচন কমিশনের (ইসি) রয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী স্থানীয় সরকারের বড় এই দুইটি নির্বাচন করতে হলে স্থানীয় সরকার বিভাগকে আইন সংশোধনের কাজ সম্পন্ন করতে হবে।
নির্বাচন কমিশনার আবু হাফিজ বলেন, রাজনৈতিক ব্যানারে নির্বাচন হলে প্রার্থীরা দলীয় ব্যানারে নির্বাচন করবেন। প্রার্থীর দলীয় প্রতীক নির্বাচনী পোস্টারে থাকলে কোন প্রার্থী কোন দলের তা চিনতে ভোটারদের অসুবিধা হবে না।
ইসি সচিবালয়ের সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, আইনের সংশোধন হয়ে গেলে নভেম্বরের যে কোন একটি সময়ে পৌরসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে।
তিনি বলেন, স্থানীয় নির্বাচনে একই দলের একাধিক প্রার্থী হওয়ায় রাজনৈতিক দলের পক্ষে একক প্রার্থী দেয়া কষ্টকর হয়। এতে দলীয় শৃংখলা ভঙ্গের পাশাপাশি নির্বাচনে সহিংসতাও বাড়ে। দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হলে তৃণমূলে সঠিক নেতৃত্ব আসবে এবং সহিংসতাও কমবে।
জামায়াতে ইসলামীর নির্বাচনে অংশ নেয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আদালত যেহেতু জামায়াতের দলীয় নিবন্ধন বাতিল করেছে সেহেতু ওই নির্বাচন দলীয় ব্যানারে হলে তাদের অংশগ্রহণের কোন সুযোগ নেই।
২০১৩ সালের ১ আগস্ট জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করে রায় দেয় হাইকোর্ট। ২০০৮ সালে দলটি নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত হয়। – বাসস।