সরেজমিন গাজীপুর-৯ বৃক্ষমেলার নামে ধোঁকাবাজী শিক্ষার্থীদের দিয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান

Slider অর্থ ও বাণিজ্য কৃষি, পরিবেশ ও প্রকৃতি গ্রাম বাংলা জাতীয় টপ নিউজ বাধ ভাঙ্গা মত

DSC07152

গ্রাম বাংলা টিম: বন রক্ষক কর্তৃক বন ধ্বংস করার চলমান প্রক্রিয়ার প্রতি ঘৃনা জানিয়ে বন বিভাগের আয়োজনে বৃক্ষ মেলায় সাধারন মানুষ সাড়া দেয়নি। দর্শক ও মেলায় অংশ গ্রহনকারী ষ্টলের সংখ্যা কম থাকায় বন্ধ স্কুল খোলা রেখে কোমলমতি মেয়েদের দিয়ে শেষ করতে হয়েছে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। মন্ত্রীর উপস্থিতিতে এত কম লোকের অংশ গ্রহন গাজীপুরে আর কোন দিন ঘটেনি।

মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ৩টায় গাজীপুর রাজবাড়ী মাঠে ফিতা কেটে ও ফুলের চারা রোপন করে তিনি মন্ত্রী ওই মেলার উদ্বোধন করেন।

গাজীপুর জেলা শহরের রাজবাড়ি মাঠে শুরু হয়েছে বৃক্ষ মেলা। ঢাকা বন বিভাগ ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের যৌথ আয়োজনে ১০দিন ব্যাপী বৃক্ষ মেলা উদ্বোধন করেছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি।

তবে অনুষ্ঠানে লোক সংখ্যা কম থাকায় পাশে থাকা জয়দেবপুর সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মেয়েদের এনে অনুষ্ঠানে বসানো হয়। লোক না পাওয়ায় বন্ধ স্কুলকে খোলা রেখে বন বিভাগ কোমলমতি শিশুদের দিয়ে সমাপ্ত করে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। এই অবস্থায় পান্ডেলে লোক কম হওয়ায় সংক্ষিপ্ত আকারে প্রধান অতিথির ভাষন দেন মন্ত্রী। এই বার অনেককে আমন্ত্রন না জানানো ও আমিন্ত্রত অতিথিরা না আসায় লোক সংখ্যা আরো কম হয়েছে।

 

DSC07145

সরেজমিন দেখা যায়, অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করা নিয়ে বন বিভাগের সঙ্গে জেলা প্রশাসনের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। পরে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান শুরু হয়।

গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোঃ মহসিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন  প্রধান বন সংরক্ষক মোঃ ইউসুফ আলী, বিভাগীয় বন সংরক্ষক মোঃ বখতিয়ার নূর সিদ্দিকী, গাজীপুরের পুলিশ সুপার আব্দুল বাতেন, গাজীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোমেন সাহা প্রমূখ।

মেলায় দায়িত্বরত বিট অফিসার মোঃ রিয়াজ উদ্দিন জানান, মেলায় মোট ৪০টি স্টল রয়েছে। প্রায় শতাধিক প্রজাতির গাছ মেলায় হয়েছে। মেলায় মোট ১৫টি নার্সারী রয়েছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, বন বিভাগের গাছ বিক্রি ও জমি জবরদখলে সহযোগিতা করার কারণে সাধারণ মানুষের দৃষ্টিভঙ্গী আস্তে আস্তে পাল্টে পাল্টে যাচ্ছে। সরকারী বন সাবার করে লোক দেখানো বৃক্ষরোপন করার মাধ্যমে বন বিভাগ তেলেসমাতি দেখাচ্ছে। সরকারী বৃক্ষ পাচার করে বৃক্ষ মেলা করার নামে বন বিভাগ সাধারণ মানুষের দৃষ্টিকে ভিন্ন দিকে নেয়ার চেষ্টা করছে। একই সঙ্গে বন বিভাগের বৃক্ষ মেলার নামে বড় অংকের অর্থ আত্মসাৎ করার একটি পুরাতন কৌশল বলে সকলেই জানেন।

বন বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্র জানায়, একটি বৃক্ষ মেলায় বড় কর্তাদের অনেক লাভ হয়। প্রতি বছর র‌্যালী হতো। এবার হয়নি। র‌্যালীর গেঞ্জি ও কোমল পানীয় সবই অনুদান হিসেবে আসত শিল্প প্রতিষ্ঠান থেকে। ভূমি দস্যু পারটেক্স গ্রুপের আরসি কোলার মত কোমল পানীয় বন বিভাগের যে কোন উৎসবের একটি বড় উপকরণ। সূত্র বলছে, বৃক্ষ মেলায় বন বিভাগের কম করে হলে ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজী হয়। মেলা অনুষ্ঠানের জন্য সরকারী নির্ধারিত বাজেট তো আছেই।

মেলা সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়, বৃক্ষ মেলার নামে চাঁদাবাজী করে বনের লোকজন বেশ কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। বৃক্ষ মেলাকে পুঁজি করে বনের জায়গা জবর দখলকারী শিল্প প্রতিষ্ঠান থেকে মোটা অংকের অর্থ নিয়েছে বন বিভাগের লোকজন। ফলে বৃক্ষ মেলা একটি লাভজনক ইভেন্ট বলে মনে করে বন বিভাগ।

এদিকে বন ধ্বংসের কারণে বন বিভাগের প্রতি সুশীল সমাজ ক্ষুব্ধ হওয়ার কারণে সম্ভাব্য সমালোচনা রুখতে বৃক্ষ মেলায় কোন সামাজিক সংগঠনকে আমন্ত্রন জানানো হয়নি। লুকোচুরির মাধ্যমে কোন মতে বৃক্ষ মেলা উদ্বোধন করতে গিয়ে জনতার তোপের মুখে পড়েছে বন বিভাগ। স্বল্প সংখ্যক দর্শকের উপস্থিতিই প্রমান করে সাধারণ মানুষ বন রক্ষাকারীদের বন চুরির খবর জেনে ফেলেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *