সরকারের ভোট ডাকাতির মডেল দেখে অবাক বিশ্ববাসী : রিজভী

Slider বাংলার মুখোমুখি


বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সরকারের প্রতিটি ভোট ডাকাতির অসাধারণ অভিনব মডেল গুলো দেখে অবাক তাকিয়ে আছে বিশ্ববাসী।

সোমবার বিকেলে ভার্চুয়ালি এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, জনগণের চাওয়া-পাওয়া উপেক্ষা করে শেখ হাসিনা আবারো ২০১৪ কিংবা ২০১৮ সালের মতো আওয়ামী লীগ এবং ফ্যাসিবাদের দোসর খুট-খুটে খাওয়া কতিপয় সুবিধাবাদী রাজনীতিককে নির্বাচনে দাঁড় করাতে বর্তমান ফ্যাসিস্টদের আস্তানা গণভবনে এমপি পদ বন্টনের হাট বসিয়েছে। মাফিয়া চক্রের রাবারস্ট্যাম্প কাজী আউয়াল বাহিনী নির্বাচনী নাটকের নামে রাষ্ট্রের হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে শেখ হাসিনার তৈরী করা এমপি তালিকায় বৈধতার সিলমোহর দেয়ার অপতৎপরতায় লিপ্ত। আতঙ্কিত প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল আজ বলেছেন, বিদেশী শক্তির থাবা পড়েছে বাংলাদেশে। তাদের থাবা থেকে দেশের অর্থনীতি ও পোশাক শিল্পকে বাঁচাতে হলে সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হবে। গ্রহণযোগ্য ভোট করতে না পারলে বিপদ।

তিনি বলেন, টর্নেডোর গতিতে ধেয়ে আসা এই মহাবিপদে সিংহাসন পতনের আতঙ্কে ভুয়া নির্বাচনের নতুন নাটক উদ্ভাবন করেছে। ২০১৪ সালের বিনা ভোটে অটোপাস এবং ২০১৮ সালের নিশিরাতে সিল মারার উৎসবের পরিবর্তে দেশী-বিদেশীদের আইওয়াস করতে নিজেরা নিজেরা লোক দেখানো প্রতিযোগিতার জন্য তৈরি করা হচ্ছে একটি নীলনকশার নির্বাচনী প্রক্রিয়া। যেমন খুশি তেমন প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পর শেখ হাসিনা গণভবনে মনোনয়ন বঞ্চিতদের সমাবেশে, দলীয় প্রার্থীদেরকে একজন করে ডামি প্রার্থী রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। মনোয়ন বঞ্চিতদের বলা হয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে হুঁশিয়ার করেছেন। তার মানে নৌকা ভার্সেস আওয়ামী লীগ! নিজেরা নিজেরাই। ব্যাপারটা দাঁড়িয়েছে যেন এ রকম ‘আমি, আমরা আর মামুরা। নির্বাচন হবে আমি আর মামুদের মধ্যে ! পাতানো ম্যাচ খেলবো দু’জন, তুমি আর আমি। সাইড লাইনে থাকবে টাকার বিনিময়ে খরিদ করা ‘কুইন্স পার্টি’, ভূঁইফোড় পার্টির নেতারা। আমাদের পায় কে ? শেখ হাসিনার প্রতিটি ভোট ডাকাতির অসাধারণ অভিনব মডেল গুলো দেখে অবাক তাকিয়ে আছে বিশ্ববাসী।

বিএনপির এই নেতা বলেন, আসন্ন নির্বাচনের শেখ হাসিনার ফর্মূলাকে সরকার পরিবর্তনের ভোট না বলে দলীয় কাউন্সিল বলা যেতে পারে। শেখ হাসিনা সারা পৃথিবীর মানুষকে বোকা বানাতে চান। তবে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ আর আন্তর্জাতিক মহলকে এই হাস্যকর সাজানো নাটক দিয়ে নয়ছয় বুঝানো সম্ভব নয়। শেখ হাসিনার মাফিয়াচক্রের অপকর্ম আর অনাচার স্তুপীকৃত হয়েছে। শেখ হাসিনার হাতে বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থা পঁচে গলে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। নির্বাচনের নামে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের কারাগারে ভরে নির্বাচনী সার্কাস করে লাভ নেই। বার বার ঘুঘু তুমি খেয়ে যাও ধান এবার ঘুঘু বধ করতে ১৮ কোটি জনগণের সাথে আছেন গোটা গণতান্ত্রিক বিশ্ব। আদালত-নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন-আইন শৃঙ্খলা বাহিনীসহ রাষ্ট্রের সকল প্রতিষ্ঠান সমস্ত সুতো শেখ হাসিনা রাখেন নিজের হাতের মুঠোয়। সুতরাং শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন যে কতখানি চোখ ধাঁধানো জালিয়াতির নির্বাচন হবে তা এক নজীরবিহীন ঘটনা হিসেবে প্রহসনের নির্বাচনের ইতিহাসে আর একটি অভিনব অধ্যায় হিসেবে যুক্ত হবে।

তিনি বলেন, ক্ষমতা ধরে রাখতে একতরফা নির্বাচনের জন্য এখন বিবেকহীন নিষ্ঠুরতায় বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী মানুষের ওপর নামিয়ে এনেছেন এক ভয়ঙ্কর দমন-পীড়ণ। আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক বিএনপি নেতা-কর্মীদের হত্যা, জখমের সংবাদে আত্মশ্লাঘা বোধ করেন শেখ হাসিনা। অবিরাম চলছে গ্রেফতার অভিযানের লোমহর্ষক ঘটনা। একইভাবে চলছে বিএনপি নেতা-কর্মীকে ধরার জন্য বাড়িতে বাড়িতে তল্লাশি অভিযান। নেতা-কর্মীদের না পেলে বাবা, ভাই, আত্মীয়স্বজনকে ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আওয়ামী নাৎসীবাদ এখন বাংলাদেশে জার্মানির মতো হুবহু পৈশাচিকতায় প্রয়োগ করা হচ্ছে। হিটলার যেমন ইহুদিদের বিরুদ্ধে ‘হেট স্পীচ’ অর্থাৎ ঘৃনা বক্তব্য রাখতেন ঠিক তেমনিভাবে শেখ হাসিনা ও তার মন্ত্রীরা বিএনপিসহ গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দল বা নাগরিক সমাজের বিরুদ্ধে‘হেট স্পীচ’ দিয়ে যাচ্ছেন। হিটলার বলতেন, ইহুদিসহ অন্য জাতির লোকেরা জার্মানিতে যেমন নাশকতা করছে, অর্থনীতি ধ্বংস করছে, জার্মানদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে ইত্যাদি অপপ্রচার চালাতেন, ঠিক তেমনিভাবে শেখ হাসিনা‘হেট স্পীচ’ দিচ্ছেন বিএনপি সন্ত্রাস করে, অগ্নিসন্ত্রাসসহ নানা নাশকতা করে। শেখ হাসিনার এহেন‘হেট স্পীচ’ বা ঘৃণা বক্তব্য দেশের জনগণ ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করেছে। প্রত্যেক নাশকতা এবং সন্ত্রাসের উৎসভূমি হচ্ছে আওয়ামী লীগ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *