আমেরিকার ভিসানীতিতে সরকারের মাথা নষ্ট হয়ে গেছে : মির্জা ফখরুল

Slider রাজনীতি


এক আমেরিকার ভিসানীতিতে সরকারের মাথা নষ্ট হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আজকে বিভিন্ন গণমাধ্যমে তাদের উৎকণ্ঠার কথা প্রকাশ পেয়েছে। সচিবালয়সহ সর্বত্র একই আলোচনা।’

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, ডাক্তাররা অবিলম্বে খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার কথা বলেছেন। তার শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ। তাই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবি জানিয়েছি।

সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ধোলাইখালে খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা ও মুক্তিসহ একদফা দাবিতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম। সমাবেশে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেয়।

ধোলাইখাল চৌরাস্তায় এ সমাবেশ হওয়ার কথা থাকলেও এর পরিধি রায়েরবাজার, টিপু সুলতান রোড ও লক্ষ্মীবাজার পর্যন্ত বিস্তৃত হয়ে পড়ে।

মির্জা ফখরুল বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে এই সরকারের বিরুদ্ধে একবছর যাবত আন্দোলন করছি। এ আন্দোলনে ইতোমধ্যে ২২ জন শহীদ হয়েছে। গুম করা হয়েছে ৭ শতাধিক নেতাকর্মীকে। জেলে নেয়া হয়েছে ৫০ লক্ষাধিক নেতাকর্মীকে। উদ্দেশ্য একটাই- গণতন্ত্রকামী মানুষকে আন্দোলন থেকে দূরে রাখা এবং একদলীয় নির্বাচন করা।

সমাবেশে মরহুম মেয়র সাদেক হোসেন খোকার স্মৃতিচারণ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কারো সাথে তিনি আপস করেননি। পিন্টুকে জেলের ভিতর হত্যা করেছে। আজকে যারা বন্দী আছেন তাদের মুক্ত করেই গণতন্ত্রকে মুক্ত করবো।’

তিনি বলেন, ‘৩০ বছর আগের মামলায় বিএনপির ৯ জনকে ফাঁসির আদেশ দেয়া হয়েছে। এক নেতাকে ৭০ বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এগুলো করে ২০১৪ ও ১৮ সালের মতো আবার তারা ভোটবিহীন নির্বাচন করার পাঁয়তারা করছে। সারা পৃথিবী বলছে, বিগত দুটি নির্বাচন চুরি করেছ, এবার নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে হবে। সরকার বলছে নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে, তা দেশের মানুষ তো দূরের কথা, পাগলও বিশ্বাস করে না।’

তিনি বলেন, ‘এ লুটেরা সব খেতে খেতে নদীর বালুও খেয়ে ফেলেছে। চাঁদপুরে ৬ হাজার কোটি টাকার বালু খেয়ে ফেলেছে। আর কিছুদিন ক্ষমতায় থাকলে দেশের অবশিষ্টগুলোও খেয়ে ফেলবে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই আওয়ামী লীগ আগেও গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। একদলীয় বাকশাল কায়েম করেছিল। এবার তারা কৌশলটা পাল্টিয়েছে। আদালতকে ব্যবহার করে তারা তত্ত্বাবধায়ক প্রথা বাতিল করে অবৈধ ক্ষমতাকে জায়েজ করে নিয়েছে। এ দাবি তো আমরা করিনি। এ দাবিতে ২২ জনকে পুড়িয়ে মারলেন। বিচারকের মধ্যে ১০ জনের মধ্যে ৮ জনই এ প্রথা বাতিলের বিপক্ষে বলেছিলেন। তারপরও গায়ের জোরে করেছেন।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এরা পরিকল্পিতভাবে অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। মানুষের ক্রয়ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণের বাইরে। রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে জনগণকে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। আজকে গণতন্ত্র মুক্তি না পেলে, খালেদা জিয়া মুক্তি না পেলে, এ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয়। আর নির্ভর করছে আপনাদের জনগণের ওপর। তাই আসুন কালবিলম্ব না করে সরকার পতনের একদফা দাবিতে রাজপথে নামি এবং এ স্বৈরশাসককে বিদায় করি।’

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, স্বনির্ভরবিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সহ-স্বেচ্ছাসেবক সম্পাদক আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুল, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, অর্পণা রায়, ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক নবী উল্লাহ নবী, মোশাররফ হোসেন খোকন, আব্দুস সাত্তার, যুবদলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক খন্দকার এনাম প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *