বাবার পর এবার ছেলের মৃত্যু, মাসহ বাকি ২ জনের অবস্থাও গুরুতর

Slider ফুলজান বিবির বাংলা

গাজীপুরে গ্যাসের চুলা জ্বালাতে গিয়ে বিস্ফোরণে দগ্ধ বাবার পর এবার তার ছেলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা মিনারুল ইসলাম মারা গেছেন।

শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার তার মৃত্যু হয়। এর আগে গত ১৪ আগস্ট (সোমবার) বিকেলে তার বাবারও মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় মিনারুল ও তার বাবা-মাসহ চারজন দগ্ধ হয়।

নিহত মিনারুল ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু থানার লক্ষীপুর গ্রামের মো: ফরমান মণ্ডল (৭৫) ও খাদিজা বেগমের (৬৫) ছেলে এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ শিক্ষক প্রশিক্ষণ বিভাগের সেকশন অফিসার পদে কর্মরত ছিলেন।

শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. তরিকুল ইসলাম জানান, গত রোববার (১৩ আগস্ট) রাতে গ্যাসের আগুনে দগ্ধ মিনারুল ও তার বাবা-মা এবং গ্যাসের চুলা মেরামতের মিস্ত্রিসহ চারজনকে এ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মিনারুল ইসলামের মৃত্যু হয়। এর আগে ঘটনার পরদিন ১৪ আগস্ট (সোমবার) বিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মিনারুলের বাবা ফরমান মন্ডল (৭৫) মারা যান। তাদের দু’জনের শরীরের ৯৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। ওই ঘটনায় মিনারুলের মা খাদিজা বেগমের (৬৫) শরীরের ৮৫ শতাংশ এবং চুলা মেরামতের মিস্ত্রি শরিফুল ইসলামের (৩৫) শরীরের ৯৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। তাদের অবস্থাও গুরুতর। বর্তমানে তারা এ ইন্সটিটিউটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

জিএমপি’র গাছা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: ইবরাহিম হোসেন বলেন, গাজীপুর মহানগরীর উত্তর খাইলকৈর মোক্তারবাড়ি এলাকার জমির উদ্দিন রোডে চারতলা ভবনের দ্বিতীয় তলার ভাড়া বাসায় স্বপরিবারে বসবাস করেন মো: মিনারুল ইসলাম (৩৫)। গত রোববার (১৩ আগস্ট) রাতে রান্না করার সময় তাদের ব্যবহৃত সিলিন্ডারের গ্যাস শেষ হয়ে যায়। পরে স্থানীয় বাজার থেকে নতুন সিলিন্ডার কিনে আনেন। কিন্তু সিলিন্ডারটি অটো চুলার সাথে সংযোগ দিলেও তা জ্বালানো যাচ্ছিল না। পরে তা মেরামতের জন্য রাত সাড়ে ১০টার দিকে মিস্ত্রি শরিফুল ইসলামকে ডেকে আনা হয়। মিস্ত্রি এসে সিলিন্ডারসহ অটোচুলাটি ড্রায়িং রুমে নিয়ে মেরামত শুরু করেন। একপর্যায়ে সিলিন্ডারটি অটোচুলার সাথে সংযোগ দিয়ে জ্বালানোর জন্য সুইচে টিপ দিলে বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয়ে আগুন ধরে যায়। এ সময় রুমে থাকা মো: মিনারুল ইসলাম (৩৫), তার বাবা মো: ফরমান মণ্ডল (৭৫) ও মা খাদিজা বেগম (৬৫) এবং পাবনার সুজানগর থানার মোখলেছপুর গ্রামের হোসেন আলী মনিরের ছেলে চুলা মেরামতের মিস্ত্রি শরিফুল ইসলামসহ (৩৫) চারজন দগ্ধ হন। বিস্ফোরণে রুমের দরজা জানালা ও আসবাবপত্র ভেঙে যায় এবং ছিটকে পড়ে। বিস্ফোরণের শব্দ পেয়ে প্রতিবেশীরা গুরুতর অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাবা ও ছেলের মৃত্যু হয়।

তিনি আরো বলেন, সিলিন্ডারটি অক্ষত ছিল। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে- চুলা মেরামতের সময় গ্যাস নির্গত হয়ে ঘরে জমে থাকে। পরে চুলা জ্বালানোর সময় ওই গ্যাসে আগুন লেগে বিস্ফোরিত হয়। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *