গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অফিসে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের মধ্যাহ্নভোজের বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য কান্ট্রিতে’ পরিণত হয়েছে। এবার এই ইস্যুতে কথা বলেছেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান। গতকাল রোববার রাতে দেশের বেসরকারি একটি টেলিভিশনের টকশোতে অংশ নিয়ে তিনি এ বিষয়ে কথা বলেন।
এ সময় তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, গয়েশ্বর রায়কে কেন ডিবিপ্রধান আপ্যায়ন করলেন? এর জবাবে শামীম ওসমান বলেন, ‘গয়েশ্বর রায় একজন সিনিয়র নেতা। উনি আহত হয়েছেন। কতটুকু আহত হয়েছেন তা আমি জানি না। তবে ভিডিওতে দেখলাম, খাবারও খেলেন ভালো। পরে লাইভে এসে তিনি (গয়েশ্বর) বললেন, ডিবি অফিস তাকে খেতে বাধ্য করেছে। ডিবিপ্রধান নাকি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আপ্যায়ন করেছেন।’
এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যের উদ্দেশে এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘সামান্য ডিবি পুলিশের ভয়ে যদি উনি (গয়েশ্বর) খেতে বাধ্য হন। তা হলে উনার রাজনীতি ছেড়ে দেওয়া উচিত।’
এর আগে গত শনিবার রাজধানীর ধোলাইখালে বিএনপির অবস্থান কর্মসূচিতে সড়কে ফেলে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে পিটিয়ে রক্তাক্ত করে পুলিশ। পরে তাকে ঢাকা মহানগর পুলিশের ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) কার্যালয়ে নেওয়া হয়।
সেখানে সংস্থাটির পক্ষ থেকে যে খাবারের আয়োজন করা হয়েছিল, সেই খাবার গ্রহণ করেননি বলে গতকাল রোববার দুপুরে জানান গয়েশ্বর। তিনি জানান, ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের জন্য বাসা থেকে পাঠানো খাবার তিনি খেয়েছেন।
গয়েশ্বর আরও জানান, ডিবি কার্যালয়ে তার জন্য যে খাবারের আয়োজন করা হয়, তা তার স্বাস্থ্যের পক্ষে উপযোগী ছিল না। এ ছাড়া এই খাবার নিয়ে তার সন্দেহও ছিল। সে কারণে তিনি ওই খাবার গ্রহণ করেননি।
তিনি বলেন, ‘ডিবিপ্রধানের (অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ) অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে এবং সৌজন্যতা রক্ষায় হারুনের জন্য বাসা থেকে নিয়ে আসা খাবার থেকে ভাতসহ হালকা সবজি ও রুই মাছের একটি টুকরা গ্রহণ করি।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আরও বলেন, ‘ডিবিপ্রধান আমাকে অনুরোধ করেছেন, রুই মাছটি তার গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জ থেকে নিয়ে আসা হয়েছে। আর যেহেতু ডিবিপ্রধান নিজেই খাবারটি খাচ্ছেন, তখন আমার মনে হলো, এটা যদি গ্রহণ করি, তাহলে সমস্যা হবে না।’
এ সময় আপ্যায়ন করার ছবিসহ ভিডিও বিভিন্ন সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনাকে অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক ও ঘৃণ্য কর্মকাণ্ড বলে আখ্যায়িত করেন বিএনপির এই নেতা।
উল্লেখ্য, শামীম ওসমান বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একজন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ। একজন সিনিয়র রাজনীতিবিদ হিসেবে দেশের রাজনীতির যেকোনো ইস্যুতে সোচ্চার থাকেন এই সংসদ সদস্য। এতে অনেক সময় আলোচিত-সমালোচিতও হন।