রাজপথে রাজনীতি

Slider রাজনীতি


নির্বাচনী সঙ্কট নিয়ে সমঝোতার কোনো লক্ষণ না থাকায় চূড়ান্তভাবে রাজপথেই গড়াচ্ছে রাজনীতি। নানা নাটকীয়তার পর পাল্টাপাল্টি সমাবেশ নিয়ে আজ শুক্রবার সর্বোচ্চ সাংগঠনিক শক্তি নিয়ে মাঠে নামছে বিবদমান সব পক্ষ। এক পক্ষে রয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও এর মিত্ররা। অন্য দিকে রয়েছে বিএনপিসহ ৩৭টি সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দল।
সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে নয়া পল্টনে আজ মহাসমাবেশ করবে ক্ষমতাসীনদের প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপি। গতকাল বিকেলে ২৩ শর্তে এ সমাবেশের অনুমতি পায় দলটি। গত বৃহস্পতিবার সমাবেশের তারিখ থাকলেও ঢাকা মহানগর পুলিশ দলটিকে অনুমতি না দেয়ায় উত্তেজনা তৈরি হয়। পরে একদিন পিছিয়ে বিএনপি নয়া পল্টনেই সমাবেশ করার ঘোষণা দেয়। সমাবেশের অনুমতি পাওয়ার পর গতকাল বিকেল থেকেই নয়া পল্টনে নেতাকর্মীদের ভিড় বাড়তে থাকে। নজিরবিহীন সমাগম ঘটাতে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি সেরে নেয় দলটি।

বিএনপির পাশাপাশি সরকার পতনের একই দাবি নিয়ে নয়া পল্টনের আশপাশে আরো কমপক্ষে ১১টি জায়গায় মহাসমাবেশ করবে গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোটসহ বিএনপির শরিকরা। যুগপৎ আন্দোলনের এসব শরিকরাও সমাবেশে বিপুল লোকসমাগমের প্রস্তুতি নিয়েছে।

অন্য দিকে বিএনপির কর্মসূচির দিনে বরাবরের মতো আজো সর্বোচ্চ শক্তি নিয়ে মাঠে থাকবে আওয়ামী লীগ। তিনটি অঙ্গসংগঠনের ব্যানারে দলটি ‘শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ’ করবে বায়তুল মোকাররম দক্ষিণ গেটে। তাদেরকেও ২৩ শর্তে সমাবেশের অনুমতি দেয়া হয়েছে।

বিএনপিকে কোনো সুযোগ দিতে রাজি নয় আওয়ামী লীগ। রাজপথ যে করেই হোক নিয়ন্ত্রণে রাখতে মরিয়া টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ। দলটি স্পষ্টভাবেই বলেছে, নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী অর্থাৎ দলীয় সরকারের অধীনেই। বিএনপির অসাংবিধানিক কোনো দাবি মেনে নেয়া হবে না। এ দিকে রাজনীতির মাঠে প্রধান দুই শক্তির একই দিনে মাঠে নামা নিয়ে জনমনে রয়েছে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা। সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে এমন আশঙ্কাও করছেন কেউ কেউ।
লাগাতার কর্মসূচিতে যেতে পারে বিএনপি : দুই দিনের টানাপড়েনের পর সমাবেশের অনুমতি পাওয়ায় বিএনপি তাদের আন্দোলনের সফলতা হিসেবে দেখছে। গতকাল বিকেলে সমাবেশের অনুমতি পাওয়ার পর দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নেতারা সংক্ষিপ্ত বৈঠক করেন। বৈঠকে দলের নেতারা মনে করেন, সরকার চাপে পড়ে অনুমতি দিতে বাধ্য হয়েছে। বৈঠকের পর এক সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস পুলিশের ইতিবাচক ভূমিকার জন্য ধন্যবাদ জানান। তিনি আশা করেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মহাসমাবেশের নিরাপত্তা বিধানে যথাযথ সহযোগিতা করবেন। সমাবেশের আসার পথে জনগণ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের বাধা দেবেন না।

মহাসমাবেশ থেকে বিএনপি কী ধরনের কর্মসূচি ঘোষণা করে সে দিকে সবার এখন দৃষ্টি। দলের নেতারা বলেছেন, তারা শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করবেন। সমাবেশ থেকেও শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি দেবেন। তারপরও এক দফার আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি নিয়ে মানুষ বেশ কৌতূহলি। নতুন কর্মসূচির ওপর নির্ভর করছে আগামী দিনের রাজনীতির গতি-প্রকৃতি।
সমাবেশের অনুমতি পাওয়ার পর বিকেল থেকে নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে থাকেন। তবে বুধবার রাতে পুলিশের অভিযানে দলের ৫ শতাধিক নেতাকর্মী গ্রেফতার হওয়ার পর দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়ে কার্যালয় ত্যাগ করতে বলা হয়। পুলিশও যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সতর্ক ছিল। ফলে সেখানে নেতাকর্মীরা জমায়েত বড় হয়নি। রাতে ট্রাকে অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি ও মাইক লাগানোর কাজ শুরু হয়।

এর আগে গত দুই দিন সমাবেশ নয়াপল্টন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান না কি গোলাপবাগ এই নিয়ে পুলিশ ও বিএনপির মধ্যে টানাপড়েন তৈরি হয়। উচ্চ আদালতের আপত্তি থাকায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও কর্মদিবসে জনভোগান্তির কারণ দেখিয়ে নয়া পল্টনে বৃহস্পতিবার সমাবেশ করতে অনুমতি দেয়নি পুলিশ। পরে বিএনপি কর্মসূচি পিছিয়ে সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবারে সমাবেশ করার অনুমতি চায়। বিএনপির ঘোষণার পর আওয়ামী লীগও তাদের সামবেশ একদিন পিছিয়ে শুক্রবারে আগারগাঁওয়ে পুরনো বাণিজ্য মেলা মাঠে করার সিদ্ধান্ত নেয়। ফলে উত্তেজনা আরো বাড়তে থাকে। পুলিশ রাতে আবাসিক হোটেল ও বাসা বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে অনেক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে। গতকাল সকালে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে জানানো হয়, তাদের সমাবেশ হবে বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে। এর কয়েক ঘণ্টা পর পুলিশও বিএনপিকে নয়া পল্টনে সমাবেশের অনুমতি দেয়।

হঠাৎ ঢাকামুখী বিএনপির কর্মসূচি বাড়িয়ে দেয়ার বিষয়ে নানামুখী আলোচনা চলছে। বিএনপি ও শরিক দলগুলোর সাথে কথা বলে জানা গেছে, ঢাকায় মহাসমাবেশ থেকে টানা কর্মসূচিতে যাওয়ার চিন্তা রয়েছে তাদের। সে অনুযায়ী, একদফা দাবিতে আগামী রোববার থেকে রাজপথে টানা কর্মসূচি শুরু হতে পারে। এই কর্মসূচির মধ্যে থাকতে পারে সমাবেশ, অবস্থান, বিক্ষোভ ও ঘেরাও। আগস্টের ১০ তারিখ পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলতে পারে। এর আগে শরিকরা সরকারকে আল্টিমেটাম দেয়ার ব্যাপারে বিএনপিকে পরামর্শ দিয়েছিল। কিন্তু গত দুই দিনের যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি তাতে মহাসমাবেশ থেকে দাবি মানতে সরকারকে আলটিমেটাম দেয়া হবে কি না তা নিশ্চিত নয়। জানা গেছে, ১৫ আগস্টের জাতীয় শোকদিবসের কারণে একদফার কর্মসূচি সাময়িক স্থগিত রাখবে বিএনপি ও যুগপতের শরিকরা। এই সময়ের মধ্যেও দাবি মানা না হলে পরবর্তীতে ২০ আগস্ট থেকে ফের লাগাতার কর্মসূচিতে যাবে বিএনপি, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত যা অব্যাহত থাকবে। এই সময়ে ঢাকায় ঘেরাওয়ের সাথে টানা অবস্থানের কর্মসূচি দিয়ে আন্দোলনকে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে নিয়ে যেতে চায় দলটি। তবে আহূত মহাসমাবেশে বাধা কিংবা সমাবেশ ভণ্ডুল করে দিলে কর্মসূচির ধরনে পরিবর্তন আসতে পারে। সে ক্ষেত্রে রাজধানীর একাধিক জায়গায় নেতাকর্মীরা জমায়েত হয়ে সমাবেশ করতে পারেন অথবা টানা অবস্থানের কর্মসূচিও আসতে পারে। অর্থাৎ মহাসমাবেশ নিয়ে সরকারের আচরণের ওপর দলটির কর্মসূচির ধরন নির্ভর করবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান এ বিষয়ে বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত সরকার পদত্যাগ করে একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করবে, ততক্ষণ রাজপথে আন্দোলন চলবে।

গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, সমাবেশ থেকে আমরা সর্বাত্মক আন্দোলনের ঘোষণা দেবো। রোববার থেকে জনগণ এবং বিরোধী দল টানা রাজপথে থাকবে।
মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, নয়া পল্টন এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হবে। আমাদের এই সমাবেশ হবে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ।
দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম বলেন, এই সমাবেশের মধ্য দিয়ে জনগণ এই সরকারকে সিগন্যাল দেবে ক্ষমতা ছাড়ো। এনাফ ইজ এনাফ। জনগণ এই সরকারকে আর চায়।

সমাবেশ শুরু হবে দুপুর ২টায়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সভাপতিত্ব করবেন স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।

রাজপথ দখলে রাখবে আওয়ামী লীগ : রাজধানীর রাজপথ দখলে রাখার জন্য আজকের বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটের সমাবেশে বড় ধরনের সমাগম ঘটাতে চায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এজন্য পুরোদমে জোরালোভাবে প্রস্তুতি নিয়েছে দলটি। এই সমাবেশের মাধ্যমে বিএনপিকে ক্ষমতাসীনরা একটি বার্তা দিতে চায় তাহলো- আওয়ামী লীগ আগেও রাজপথে ছিল, এখনো আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে। এ জন্য ঢাকা বিভাগের অন্তর্গত সব জেলা ও মহানগর থেকে কয়েক লাখ নেতাকর্মীকে সমাবেশে যোগদানের জন্য দফায় দফায় বৈঠক করা হয়েছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতারা জেলা ও মহানগর নেতাদের সাথে কয়েক দফায় ফোনেও কথা বলে গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। সমাবেশে অংশগ্রহণের লক্ষ্য নিয়ে দূরের নেতাকর্মীরা রাতেই ঢাকায় চলে আসবেন বলে সংশ্লিষ্ট নেতাদের সাথে আলাপকালে এ তথ্য জানা গেছে।

আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্ব মনে করছেন, দীর্ঘ দিন রাজনীতিতে কোণঠাসা হয়ে থাকা বিএনপি তৃণমূল গুছিয়ে রাজনীতির মাঠে কিছুটা হলেও চাঙাভাব দেখা যাচ্ছে। সরকার পতনের এক দফা দাবি আদায়ের ঘোষণা দেয়ার মধ্য দিয়ে তারা ইতোমধ্যে তাদের আন্দোলনের চূড়ান্ত ধাপেও চলে এসেছে। ফলে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন ঠেকানোর মতো আগামীতে যেকোনো ধরনের হঠকারী সিদ্ধান্ত তারা নিতে পারে- এমন আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যায় না। বিএনপি ঢাকা দখলের হুমকির বিষয়টিও গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে। এ জন্য মুখে মুখে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ বললেও সঙ্ঘাতসহ তাদের বিধ্বংসী কর্মসূচির বিষয়টি মাথায় রেখে নেতাকর্মীদেরও মানসিকভাবে সেভাবেই প্রস্তুতি নিতে বলা হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের অন্যতম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম নয়া দিগন্তকে বলেন, বিএনপি সহিংসতা, হানাহানি, ধ্বংসাত্মক মনোভাব থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি। বিএনপি শুধু ক্ষমতা দখলের রাজনীতি করে। তারা জনগণের কথা ভাবে না, জনগণকে নিয়ে তাদের কোনো রাজনীতিও নাই, জনগণের প্রতি আস্থাও তাদের নাই। এ জন্য নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক পদ্ধতি পরিহার করে তারা আবারো ধ্বংসাত্মক রাজনীতির পথে হাঁটছে। তিনি বলেন, বিএনপির ঢাকা অচল করে দেয়ার যে দিবাস্বপ্ন দেখছে এটা কোনো দিনও পূরণ হবে না। তারা যদি আবারো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে, জ্বালাও পোড়াও করে তাহলে আমি মনে করি, এটা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দেখবে। আমরাও সতর্ক অবস্থানে থাকব এবং জনগণকে সাথে নিয়ে জনগণের জানমাল রক্ষায় তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রতিহত করব।

বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নির্ধারিত সমাবেশ ছিল গতকাল ২৭ জুলাই। ওই দিন দিনভর সমাবেশস্থল নিয়ে পুলিশের অনুমতি দেয়া নিয়ে নানা নাটকীয়তার পর রাতে এক দিন পিছিয়ে ২৮ জুলাই নয়াপল্টনে করার সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি। ঠিক কিছুক্ষণ পর আওয়ামী লীগও এক দিন পিছিয়ে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নেয়। আগারগাঁও পুরাতন বাণিজ্য মেলার মাঠে সমাবেশ করার অনুমতি পায় ক্ষমতাসীনরা। রাত না পেরোতেই সকালে আওয়ামী লীগ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে সমাবেশ করার জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকে। শেষমেশ সেখানেই ২৩ শর্তে অনুমতি মেলে। অনুমতি পাওয়ার পর বিকেলে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যৌথ সংবাদ সম্মেলন করে সার্বিক প্রস্তুতির কথা জানায় সমাবেশের আয়োজক কমিটি আওয়ামী লীগের দু’টি সহযোগী সংগঠন যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও একটি ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগ। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গাজী মেসবাউল হোসেন সাচ্চু ও সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল, ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসাইন প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, সমাবেশে যোগ দেবে স্বাধীনতাপ্রেমী মানুষ। সব শ্রেণিপেশার মানুষ আসবে। আমরা ঐক্যবদ্ধ। সবসময় মাঠে ছিলাম, থাকব। আমরা দেশকে ভালোবাসি, দেশের মানুষকে ভালোবাসি। আমরা সর্বদা প্রস্তুত। তিনি বলেন, সারা দেশের নেতাকর্মীরা যোগ দেবেন। তরুণ সমাজের ঢল নামবে। লোকের হিসাব মেলাতে পারবেন না। দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি সমাবেশে সহিংসতার আশঙ্কার বিষয়ে জানতে চাইলে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা বিএনপিকে অনুসরণ করছি না, তাদের পাল্টা জবাব দেয়ার জন্য মাঠে থাকছি না। আমরা মাঠে থাকছি বিএনপির সন্ত্রাস- নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে। পৃথিবীর সব দেশেই রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড সহাবস্থানে হয়ে থাকে। এখানে বাধা কোথায়? তিনি বলেন, বাংলার মাটিতে বিএনপি-জামায়াতকে আর স্থান দেয়া হবে না।

আওয়ামী লীগ নেতারা মনে করেন, ঢাকা যার দখলে থাকবে পুরোদেশ তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে। বিএনপির ঢাকা দখলের হুমকি এতদিন শুধু রাজনৈতিক বক্তব্য হিসেবে দেখলেও নির্বাচনকেন্দ্রিক বিদেশী তৎপরতার পর থেকেই আওয়ামী লীগ একটু ভিন্নভাবে দেখছে। অতীতে বিএনপি বড় ধরনের আন্দোলন গড়ে তুলতে না পারলেও সাম্প্রতিক রাজধানীতে বড় বড় কয়েকটি সমাবেশ করে দেখিয়েছে। বিশেষ করে সরকার পতনের এক দফা ঘোষণা করার পরই তারা ঢাকা দখলের হুমকিও দিয়ে যাচ্ছে। তাই বিএনপির সরকার পতনের এক দফা আন্দোলন মোকাবেলা করার জন্য ঢাকাকে কেন্দ্র করে পরিকল্পনা সাজানো হয়েছে। সেজন্য বিএনপির মহাসমাবেশের বিপরীতে বৃহস্পতিবার সমাবেশ করার কথা থাকলেও বিএনপির সমাবেশ পিছিয়ে দেয়ায় যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ এবং ছাত্রলীগের উদ্যোগে যৌথভাবে ‘তারুণ্যের জয়যাত্রা’ শীর্ষক শিরোনামে শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশও পিছিয়ে দেয়া হয়েছে।

সমাবেশের প্রস্তুতি ও অন্যান্য বিষয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গাজী মেসবাউল হোসেন সাচ্চু গতকাল রাতে নয়া দিগন্তকে বলেন, বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেটে আমাদের তিনটি সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হবে। সমাবেশে সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। মঞ্চ প্রস্তুতির কাজ চলছে। যথাসময়ে সম্পন্ন হবে ইনশা আল্লাহ। তিনি বলেন, সমাবেশে ঢাকা বিভাগের অন্তর্গত সকল জেলা ও মহানগর থেকে নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করবেন। সমাবেশে ৩ থেকে ৫ লাখ নেতাকর্মীর সমাগম ঘটবে। রাত থেকেই নেতাকর্মীরা সমাবেশে আসতে শুরু করেছেন। এক প্রশ্নের জবাবে মেসবাউল হোসেন সাচ্চু বলেন, আমরা কোনো পাল্টা সমাবেশ করছি না। আমরা আমাদের সমাবেশ করছি। তবে বিএনপির নেতাকর্মীরা যদি বিশৃঙ্খলা করে, জ্বালাও পোড়াও করে জনগণের সম্পদ বিনষ্ট করে তাহলে আমরা সেটা প্রতিহত করব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *