রবিবার ইতালি যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী

Slider জাতীয়


জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) আয়োজনে খাদ্য সম্মেলনে যোগ দিতে আগামী রবিবার ইতালি সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ছাড়া ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির সঙ্গেও দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হবে শেখ হাসিনার। গতকাল বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রধানমন্ত্রীর ইতালির সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন জানান, খাদ্য সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেবেন প্রধানমন্ত্রী। দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের বিষয়ে তিনি জানান, ইতালিতে অনেক বাংলাদেশি থাকেন। দেশটিতে তাদের বসবাস নিয়মিত করার জন্য আমরা অনুরোধ করব। এ ছাড়া সফরে জ্বালানি ও সংস্কৃতি নিয়ে দুটি সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, আগামী ২৪-২৬ জুলাই ইতালির রোমে খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) আয়োজনে খাদ্য সম্মেলন

অনুষ্ঠিত হবে। জাতিসংঘ মহাসচিবের আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল এ ফোরামে যোগদান করবে। এজন্য আগামী ২৩ জুলাই রোমের উদ্দেশে রওনা করবেন তারা। সফর শেষে আগামী ২৬ জুলাই ঢাকার উদ্দেশে রওনা করবেন প্রধানমন্ত্রী। মোমেন জানান, কৃষিমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, খাদ্যমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা ও বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হবেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রীর ইতালি সফরে জ্বালানি নিয়ে একটি কাঠামো চুক্তি হবে। সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ইতালির সংস্থা ইএনআই-এর বিভিন্ন দেশে অবস্থান রয়েছে। যেহেতু জ্বালানির ক্ষেত্রে আমরা যথেষ্ট নির্ভরশীল, সেজন্য আমরা বিষয়টি বহুমুখীকরণ করতে চাই। তিনি বলেন, বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ রয়েছে। আমরা এটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে করতে চাই। এ ছাড়া ইউরোপিয়ান দেশগুলোর সঙ্গেও আমাদের যোগাযোগ বৃদ্ধি হচ্ছে। রোমের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই হলে বিভিন্ন দেশে ইএনআই-এর যে কার্যক্রম রয়েছে, সেগুলোর মাধ্যমে ভবিষ্যতে জ্বালানি সংগ্রহে বহুমুখীকরণ আমাদের কাজে লাগবে।

ইউরোপের অন্যতম বড় প্রতিরক্ষা-সামগ্রী উৎপাদনকারী দেশ হচ্ছে ইতালি। দেশটির সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়াতে চায় বাংলাদেশ। এ জন্য দুই দেশ একটি সমঝোতা স্মারক নিয়ে আলোচনা করছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব। পররাষ্ট্র সচিব বলেন, দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতার জন্য একটি সমঝোতা স্মারক নিয়ে কাজ চলছে। এ সপ্তাহে আমি একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভাও করেছি। তবে দুই দেশের সব স্টেকহোল্ডারের মাঝে কনসালটেশন এখনো শেষ হয়নি, তবে সম্ভাবনা রয়েছে।

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘আমরা চাই যে, বাংলাদেশের কেনাকাটার যে উৎসগুলো রয়েছে, সেগুলোকে বহুমুখীকরণ করতে। মাসখানেক আগে আমি ইতালি সফর করেছি। তখনকার বৈঠকে আমরা এ বিষয়টি উল্লেখ করেছি।’ এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী এর আগে যখন ইতালিতে সফর করেছিলেন, ওই সময়ে তারাও আগ্রহ দেখিয়েছিল বলে তিনি জানান।

মাসুদ বিন মোমেন বলেন, এসব কেনাবেচা যদি বড় মাপে করতে হয়, তখন একটি চুক্তি থাকলে সেফগার্ড করা যায়। সেগুলো নিয়ে আমরা আলোচনা করছি। ইতালির কাছ থেকে এরই মধ্যে আমরা ছোট ছোট অনেক কিছু নিয়েছি। তারা ইউরোপের মধ্যে অন্যতম দেশ- যারা সাবমেরিন, হেলিকপ্টারসহ অনেক কিছু তৈরি করে। ভবিষ্যতে এ সম্ভাবনা রয়ে যাচ্ছে।

আগামী ২৪ জুলাই রোমে ইউরোপে নিযুক্ত বাংলাদেশের দূতদের নিয়ে বৈঠকে বসবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ প্রসঙ্গে মোমেন বলেন, ২৪ জুলাই প্রধানমন্ত্রী ইউরোপের ১৫টি দেশে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতদের নিয়ে আয়োজিত ‘আঞ্চলিক দূত সম্মেলন’-এ অংশ নেবেন। সরকারপ্রধান দূতদের কী বার্তা দেবেন- জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটা রুটিন ওয়ার্ক। প্রধানমন্ত্রী তাদের দিকনির্দেশনা দেবেন। তারা ডে টু ডে তাদের কাজের বর্ণনা দেবেন, সমস্যার কথা বলবেন। এর আগে সবাইকে নিয়ে আমরা ঢাকায় একসঙ্গে বসতাম। কিন্তু সবাইকে একসঙ্গে করতে গেলে কিছু ঝামেলা হয়। তাই প্রধানমন্ত্রী অঞ্চলভিত্তিক দূতদের নিয়ে বসছেন। প্রধানমন্ত্রী কোনো দেশ সফরে গেলে দূতদের নিয়ে ডায়ালগে বসেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, দূত বৈঠকে ইতালি, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, সুইডেন, বেলজিয়াম, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, জার্মানি, গ্রিস, নেদারল্যান্ডস, পোল্যান্ড, রোমানিয়া, স্পেন, সুইডেন ও সুইজারল্যান্ডে কর্মরত দূতরা যোগ দেবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *