সীতাকুণ্ডে অক্সিজেন প্লান্টে ভয়াবহ বিস্ফোরণ : নিহত ৬, আহত অর্ধশতাধিক

Slider সারাদেশ


চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের একটি অক্সিজেন প্লান্টে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটেছে। এতে অন্তত ছয়জন নিহত এবং অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন।

শনিবার (৪ মার্চ) বিকেল ৫টার দিকে উপজেলার সোনাইছড়ি কদম রসুল কেশবপুরে সীমা অক্সিজেন প্লান্টে এ ঘটনা ঘটে।

তবে মৃত ও আহতদের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আহতদেরকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালসহ নগরীর বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। তবে এর মধ্যে আগুনে দগ্ধ অন্তত ১২ জনকে চমেকের বার্ন ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়েছে।

সর্বশেষ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের সাতটি ইউনিট দুই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারলেও হতাহতদের উদ্ধার কার্যক্রম শেষ করতে পারেনি।

ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার কদম রসুলে অবস্থিত সীমা গ্রুপের নিজস্ব উৎপাদিত একটি অক্সিজেন প্লান্টে হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এ বিস্ফোরণের পর পুরো ফ্যাক্টরিসহ আশপাশে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন বাড়িঘর ও কারখানার দরজা-জানালার কাছ ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যায়। তখন কারখানার কর্মী, কয়েকটি পরিবহনের শ্রমিকসহ অর্ধ শতাধিক মানুষ হতাহত হন। আহতদের উদ্ধার করে নগরীর বিভিন্ন হাসপাতালে নেয়া হয়। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, বিস্ফোরণে ছিন্নভিন্ন শরীরের অংশ ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে।

চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্র জানায়, সেখানে অগ্নিদগ্ধ ও বিভিন্নভাবে আহত অর্ধতাধিক লোককে আনা হয়েছে। তাদের মধ্যে অন্তত ১২ জনকে দগ্ধ অবস্থায় আনা হয়েছে।

উদ্ধার কার্যক্রমে অংশ নেয়া বাংলাদেশ গাউছিয়া কমিটির সীতাকুণ্ড অঞ্চলের টিম লিডার মো: আলী সিদ্দিকী নয়া দিগন্তকে বলেন, ‘আমরা বিস্ফোরণের খবর পাওয়ামাত্রই ঘটনাস্থলে চলে আসি। এ সময় পুরো কারখানাসহ আশপাশে এক মানবিক বিপর্যয় দেখা দেয়। চারদিকে আহতদের চিৎকারে পরিবেশ ভারি হয়ে উঠে। আহত ও নিহতদের চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায়। এতে বেশিরভাগ লোকেরই অঙ্গহানি হয়েছে। আমরা এ পর্যন্ত ছয়জনের লাশ উদ্ধার করেছি এবং প্রায় অর্ধশত লোককে আহত অবস্থায় পাওয়া গেছে।’

তবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: শাহাদাৎ হোসেন পাঁচজন নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছেন।

ভাটিয়ারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন বলে, এ বিস্ফোরণে কেঁপে উঠে আশপাশের দুই কিলোমিটার এলাকা। বিভিন্ন বাড়ি-ঘর ও আশপাশের অনেক কারখানার দরজা-জানালার কাছ ভেঙ্গে যায়।

কুমিরা ফায়ার সার্ভিসের জোষ্ঠ কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ বলেন, ‘কিভাবে অক্সিজেন প্লান্টটিতে বিস্ফোরণ হয়েছে তা এ মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। আমরা ফায়ার সার্ভিসের সাতটি ইউনিট প্রায় দুই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হই। তবে উদ্ধার কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।’

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আমির হোসেন বলেন, বিস্ফোরণের সাথে সাথে পুরো কারখানায় আগুন ধরে যায়। তিনি অন্তত ৩০ জন শ্রমিককে উদ্ধার করে বাইরে নিয়ে আসতে দেখেছেন বলে জানান।

ঘটনার খবর পেয়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক, সিভিল সার্জন, চট্টগ্রামের মেয়র ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *