মাথাপিছু ঋণ এখন ৩২ হাজার টাকা

Slider অর্থ ও বাণিজ্য

Taka_757628658
ঢাকা: বাংলাদেশের মানুষের এখন মাথাপিছু বার্ষিক আয় ১ হাজার ৩১৪ ডলার যা বাংলাদেশি মুদ্রায় দাঁড়ায় এক লাখ ৫ হাজার ১২০ টাকা (প্রতি ডলার ৮০ টাকা ধরে)। অন্যদিকে বর্তমানে মোট মাথাপিছু ঋণের পরিমাণ ৪০০ ডলার। প্রতি ডলার মূল্য বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮০ টাকা ধরে এর পরিমাণ দাঁড়ায় ৩২ হাজার টাকা। ৪০০ ডলারের মধ্যে বৈদেশিক ঋণ ১৭০ ডলার।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ জরিপে (জুলাই’২০১২) দেখা গেছে, দেশের মোট জনসংখ্যা ১৫ কোটি ২৫ লাখ ১৮ হাজার ১৮ জন। দেশের এ জনসংখ্যা ধরেই সম্প্রতি মাথাপিছু ঋণ নিরুপণ করেছে ইআরডি।

ইআরডি সূত্র জানায়, দেশের নানা ধরনের উন্নয়ন কাজে উন্নয়ন সহযোগীরা আমাদের সহযোগিতা করে থাকে। এতে মাথাপিছু বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ১৭০ মার্কিন ডলার।

উন্নয়ন সহযোগীদের মধ্যে রয়েছে বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), অস্ট্রেলিয়ান এইড, কানাডিয়ান এইড (সিডা), ইউনাইটেড কিংডম’স ডিপার্টমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ডিএফআইডি), ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা), সুইডিশ এইড (সিডা) ও ইউনিসেফ। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৩২৫ কোটি ডলার। ২০১২-১৩ সালে এর পরিমাণ ছিল ২ হাজার ২৯৮ কোটি ডলার।

অন্যদিকে জনপ্রতি মাথাপিছু অভ্যন্তরীণ ঋণের পরিমাণ ২৩০ ডলার। প্রতি ডলারের মূল্য দেশি মুদ্রায় ৮০ টাকা ধরে এর পরিমাণ দাঁড়ায় ১৮ হাজার ৪০০ টাকা। বর্তমানে অভ্যন্তরীণ মোট ঋণের পরিমাণ ২ লাখ ২ হাজার কোটি টাকা। ব্যাংক ঋণ, সঞ্চয়পত্র ও বন্ড বাবদ হিসাব করে এ ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে।

মাথাপিছু ঋণ প্রসঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেজবাহউদ্দিন জানান, বর্তমানে মাথাপিছু ঋণের পরিমাণ ৪০০ মার্কিন ডলার। এর মধ্যে বৈদেশিক ঋণ ১৬০ থেকে ১৭০ মার্কিন ডলার।

তবে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, মাথাপিছু ৪০০ মার্কিন ডলার ঋণ দেশের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে কোনো নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না। এমনকি জনগোষ্ঠীর জন্য কোনো সমস্যাও হওয়ার কথা নয়।

মাথাপিছু ৪০০ ডলার ঋণ প্রসঙ্গে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. মির্জা আজিজুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের এখন মাথাপিছু বার্ষিক আয় ১ হাজার ৩১৪ মার্কিন ডলার। সে তুলনায় ৪০০ মার্কিন ডলার ঋণ কোনো সমস্যা নয়। এতে দেশের অর্থনীতিতেও কোনো নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না। মাথাপিছু আয় একটি বার্ষিক চলমান ঘটনা। কিন্তু মাথাপিছু ঋণের বিষয়টা ভিন্ন। দেখা যাচ্ছে, কয়েক বছর আগে কোনো উন্নয়ন সহযোগী উন্নয়ন প্রকল্পে আমাদের ঋণ দিয়েছে। সেটাও এখনও আমাদের মাথাপিছু ঋণে যোগ হয়েছে। এটা স্টকে থেকেই যাচ্ছে পরিশোধ না করা পর্যন্ত। এছাড়া, উন্নয়ন সহযোগীরা আমাদের সহজ শর্তে ঋণ দিয়ে থাকে।

তিনি বলেন, মাথাপিছু অভ্যন্তরীণ ঋণও আমাদের জন্য কোনো সমস্যা না। দেখা যাচ্ছে, সরকার আমাদের কাছ থেকে ঋণ আদায় করছে। সেটা আবার আমাদের উন্নয়নেই খরচ করা হচ্ছে। সরকারকে আমরা ঋণ পরিশোধ করে নতুন করে হয়তো উন্নয়ন কাজের জন্য আমরা ঋণ নিচ্ছি। মাথাপিছু ঋণে ঘাবড়ানোর কিছু নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *