শাবনূরের জন্মদিনে কনকচাঁপার আক্ষেপ

Slider বিনোদন ও মিডিয়া

শাবনূরের চোখের দিকে তাকিয়ে ভীষণ চমকে যাচ্ছিলাম কনকচাঁপা

ঢাকাই ছবির সর্বকালের অন্যতম সফল অভিনেত্রী শাবনূর। সিনেমা পাড়ায় একটা কথা প্রচলিত আছে, দর্শক শুধু তাকে দেখার জন্যই সিনেমা হলে যেতেন। নব্বই দশকে জনপ্রিয়তার আকাশ ছুঁয়েছিলেন তিনি। এই নায়িকার ক্যারিয়ারে যতগুলো সিনেমার গান জনপ্রিয় হয়েছে, তার সিংহভাগই গেয়েছেন সংগীতশিল্পী কনকচাঁপা। তারা একে-অন্যের ক্যারিয়ারে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মানুষ।

শনিবার (১৭ ডিসেম্বর) শাবনূরের জন্মদিন। ১৯৭৯ সালের এ দিনেই পৃথিবীতে পথচলা শুরু করেন তিনি। প্রিয় অভিনেত্রীর বিশেষ দিন উপলক্ষে সোশ্যাল মিডিয়ায় তার সঙ্গে তোলা একটি ছবি পোস্ট করেছেন সংগীতশিল্পী কনকচাঁপা। সঙ্গে যুক্ত করেছেন দীর্ঘ এক স্ট্যাটাস। যেখানে স্মৃতিচারণের পাশাপাশি আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন গায়িকা। কনকচাঁপার সেই স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো-

শাবনূর, একটি পরিপূর্ণ প্রতিভাময় শিল্পীর নাম, যাকে বাংলাদেশ কখনোই ভুলতে পারবে না! তার অভিনয়শৈলী, তার উচ্চারণ, তার দৈহিক সৌন্দর্য, তার চাঁদপানা মুখশ্রী, গোলাপের মতো হাসি এবং তার নয়নযুগল পুরো যুবসম্প্রদায়কে বুঁদ করে রেখেছে কয়েক যুগ। তার রেশ এখনও কাটেনি, কাটবেও না কখনও।

এই শাবনূর এপিসোড থেকে দর্শক বেরুতেও চায়নি, চাইবেও না। কারণ এমন প্রতিভার অধিকারী শত জনমে একজনই হয়। তার সমসাময়িক অনেকেই আছেন, কিন্তু কাছাকাছি কেউ নেই।

বলা যায়, আমি প্রথম থেকেই তার জন্য গাইছি। আশ্চর্যজনক কথা যে তার সাথে আমার খুবই কম দেখা হয়েছে। আমি আমার মতো গেয়েছি, তিনি তার মতো অভিনয় করেছেন। কিন্তু যখন পিকচারাইজেশন দেখেছি তখন আমারই বিশ্বাস হয়নি যে, এটা আমি গেয়েছি। মনে হয়েছে, এটা যেন তারই কণ্ঠ!

এই যে একাকার হয়ে যাওয়া এই ক্রেডিট আমি শাবনূরকেই দিতে চাই। তিনি আসলে আমাদের কবরীর পরে ভার্সেটাইল যাকে বলে সেই উঁচুমানের মহানায়িকা। সিরিয়াস অভিনয়, হাসির অভিনয়, ছটফটে দুরন্ত কিশোরীর অভিনয়- সবই দুর্দান্ত তবে তার ভয়ংকর সুন্দর চোখে যখন অশ্রু ঝরে তখন একটা কথাই মাথায় আসে ‘ফুল নেবো না অশ্রু নেবো ভেবে হই আকুল!’

আগেই বলেছি, ব্যক্তিগত জীবনে তার সঙ্গে আমার খুব কম দেখা হয়েছে। আমার রেকর্ডিং স্টুডিও আর তার কর্মক্ষেত্র আলাদা জায়গায় হওয়াতেই এমন হয়েছে। কিন্তু যখন তাকে দেখেছি, খেয়াল করেছি খুব সহজ সরল তার উপস্থিতি। তার কাঁচভাঙ্গা হাসি আমার মন কেড়ে নিয়েছে। সবারই বোধহয় এভাবে অনুভব হয়। সাধারণভাবে দেখা-সাক্ষাৎ হলে মনে হয়েছে, এই মেয়ে সিরিয়াস অভিনয় করে কিভাবে!

আমার ছেলের বিয়েতে দাওয়াত দিতে গিয়েছিলাম তার বাসায়। তখন তার আন্তরিক আতিথেয়তা দেখে আমি মুগ্ধ! তখনও আমি নিরাভরণ শাবনূরকে দেখে চমকে উঠেছি তার বিরল সৌন্দর্য ও চোখের চাহনিতে।

আমি খুবই গর্বিত তার চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারের প্রায় পুরো সময়ই আমি সঙ্গে ছিলাম। তার অভিনীত একশো ভাগের নিরানব্বই ভাগ গানই আমার গাওয়া। আমাদের দুইদেহ এক প্রাণ বলা যায়।

জীবনে কখনও কোন চ্যানেলকে বলিনি, আমাকে এমন একটা অনুষ্ঠান দেন। কিন্তু কয়েকটি চ্যানেলে স্বপ্রনোদিত হয়ে বলেছি, শাবনূর ও আমাকে নিয়ে একটা প্রোগ্রাম সাজাতে। কিন্তু কোন চ্যানেলই গা করে নাই। এই বাংলাদেশে মূল্যায়ন পাওয়া খুবই কঠিন। তবে আমার বিশ্বাস, একদিন আমার গান আর শাবনূরের অভিনয়ের সমন্বয় নিয়ে গবেষণা হবে। তখন হয়তো তা দেখার জন্য কোনও একজন থাকবো না।

আমি আমাদের এই মহানায়িকার আনন্দিত সুখী সুদীর্ঘ জীবন কামনা করছি। শাবনূরের জন্মদিন উপলক্ষে আমার পক্ষ থেকে রইলো অগণন শুভেচ্ছা ও শুভকামনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *