শ্রীপুরে ডিগনিটি টেক্সটাইল ভবনের উপরের তলা গুলো ধ্বসে গেছে এখনো জ্বলছে আগুন

Slider জাতীয়

dignity

 

 

 

 

শারমিন সরকার

শ্রীপুর থেকে :  শ্রীপুরে উপজেলার বেতজুরি এলাকায় অবস্থিত ডিগনিটি টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড কারখানার ৪,৫,৬ ও ৭ তলা ধ্বসে গেছে। জ্বরন্ত আগুননিয়ন্ত্রনে  ও ভবন ধ্বসে সম্ভাব্য প্রানীহানী মোকাবেলায় কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিট।

সোমবার(১জুন) সকাল ৮টায় গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক আক্তারুজ্জামান লিটন জানান, আগুনে ৯ তলা ভবনের ৪,৫,৬ ও ৭তলা ধ্বসে গেছে।
ধ্বসের আশংকা দেখা দেয়ায় মধ্যরাতের ঘটনাস্থলের চারিদিকে মাইকিং করে লোকজননে সরিয়ে দেযা হয়েছে। আগুন নেভাতে গিয়ে ছোট খাট আহত হলেও কোন প্রানীর খবর এখনো পাওয়া যায়নি।

রোববার দুপুর ২টায় ওই পোশাক কারখানায় ভয়াবহ আগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। প্রায় ১৮ ঘন্টা চেষ্টার পরও আগুন সমম্পূর্ন নিয়ন্ত্রন করতে পারেনি ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।  ফলে এখনো ঢাকা, জয়দেবপুর, শ্রীপুর, টঙ্গী এবং ভালুকা ফায়ার সার্ভিসের ১৮ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।

গাজীপুর ফায়ার সার্ভিস সূত্র ও কারখানার শ্রমিকরা জানায়, দুপুরে খাবারের বিরতির সময় শ্রীপুর উপজেলার বেতজুরী এলাকাস্থিত ডিগনিটি টেক্সটাইল মিলস
লিমিটেড কারখানায় আগুনের সূত্রাপাত হয়। এসময় খাবারের বিরতি থাকায় প্রায় সকল শ্রমিক ও কর্মকর্তারা কারখানা ভবনের বাইরে ছিলেন। এ কারখানায় প্রায় তিন হাজার শ্রমিক কাজ করেন। কারখানায় বিভিন্ন ধাপে সুতা থেকে ‘টি শার্ট’ তৈরী করা হয়। দুপুর পৌণে ২টার দিকে স্টিলের কাঠামোর উপর নির্মিত বিশাল আকৃতির সাত তলা বিশিষ্ট ওই কারখানা ভবনের তৃতীয় তলার গোডাউনে আগুনের সূত্রাপাত হয় এবং পুরো ফ্লোরে ছড়িয়ে পড়ে। ওই ভবনের দক্ষিণ পাশের জানালা দিয়ে ধোঁয়া বের হতে দেখে কারখানার কর্মচারীরা এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করলেও তা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। মুহুর্তেই আগুনের লেলিহান শিখা কারখানার ৭ তলা ওই ভবনের ৫ম তলা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে ভয়াবহ আকার ধারণ করে।

খবর পেয়ে ঢাকা, জয়দেবপুর, শ্রীপুর, এবং ময়মনসিংহের ভালুকাসহ ফায়ার সার্ভিসের বিভিন্ন ষ্টেশনের দশটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে।  আগুন ভবনের উপরের তলায়ও ছড়িয়ে যায়। স্টিলের ফ্রেমের ভবন হওয়ার কারনে উপরের তলাগুলোতে পানি আটকে রাখা যাচ্ছেনা। সরবরাহ করা পানি গড়িয়ে নীচে পড়ে যাচ্ছে। কারখানা ভবনে পর্যাপ্ত দরজা জানালা না থাকায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নেভাতে ভবনের ভিতরে ঠিকমতো পানি সরবরাহ করতে ব্যাহত হচ্ছে। ফলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বিলম্ব হচ্ছে। ইতোমধ্যে আগুনের উত্তাপে ভবনের ষ্টিলের ফ্রেম দুর্বল হয়ে পড়েছে। শীঘ্রই আগুন নিয়ন্ত্রণে না এলে ষ্টিলেরফ্রেম দুর্বল হয়ে যে কোন সময় ভবনটি বসে পড়ে ধ্বংস স্তুপে পরিনত হতে পারে বলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আশংকা করছেন।

কারখানার প্রশাসনিক ব্যবস্থাপক নাজমুন্নাহার কেমু জানান, আগুন এখনো জ্বলছে। আগুনে তৈরী পোশাকসহ বিভিন্ন মালামাল পুড়ে গেছে।

গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক আক্তারুজ্জামান লিটন জানান, স্টিলের ফ্রেমের ভবন হওয়ার কারনে উপরের তলাগুলোতে যেখানে আগুন রয়েছে
সেখানে পানি আটকে রাখা যাচ্ছেনা। সরবরাহ করা পানি গড়িয়ে নীচে পড়ে যাচ্ছে। ফলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বিলম্ব হচ্ছে।

তাৎক্ষণিকভাবে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমান নির্নয় করা সম্ভব হয়নি। তবে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রাপাত হয়েছে বলে ধারনা করা হচ্ছে।

আগুন লাগার কারণ জানতে স্থানীয় প্রশাসন পাঁচ  সদস্য বিশিষ্ঠ তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বলে জানা গেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *