২২ বছরেও গড়ে ওঠেনি বাংলাদেশের টেস্ট সংস্কৃতি

Slider খেলা


১০ নভেম্বর ২০০০, বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের জন্য সবচেয়ে স্মরণীয় দিন। এদিন বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে প্রতিবেশী দেশ ভারতের বিপক্ষে টেস্ট ফরম্যাটে পা রাখে বাংলাদেশ। তবে এরও প্রায় পাঁচ মাস আগেই টেস্ট স্ট্যাটাস অর্জন করে বাংলাদেশ।

দিনটি ছিল ২৬ জুন, ২০০০ সাল। সেদিন সব দেশের সমর্থন মেলায় আইসিসির পূর্ণ সদস্যপদ লাভ করে বাংলাদেশের ক্রিকেট। আজ আরেকটি ২৬ জুন। সময়ের হিসাবে ২২ বছর পেরিয়েছে টেস্ট স্ট্যাটাস অর্জনের। তবে আজও বড় আক্ষেপ করে বলতে হয়, ২২ বছরেও গড়ে ওঠেনি বাংলাদেশের টেস্ট সংস্কৃতি।

তথ্য-উপাত্ত কিংবা অনেক পরিসংখ্যান দিয়ে বাংলাদেশের টেস্ট সংস্কৃতির ঘাটতি প্রমাণ করা যায় অনায়াসেই। তবে সবচেয়ে দুঃখের বিষয় হলো, আরেক ২৬ জুনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে সেইন্ট লুসিয়ায় স্বাগতিকদের বিপক্ষে যখন টেস্ট খেলছিলো বাংলাদেশ; ঠিক সেই মুহূর্তে খুব আক্ষেপ করেই টাইগারদের কোচ রাসেল ডমিঙ্গোই বলছিলেন, ‘আমাদের টেস্ট ম্যাচ সংস্কৃতি এখনও সেখানেই নেই, যেখানে থাকা উচিত।’

অথচ, টেস্ট স্ট্যাটাস অর্জনের আজকে ২২তম বছর। কুড়ি বছরের বেশি সময় পেরিয়েও ১৩৪ ম্যাচে বাংলাদেশের জয় মোটে ১৬টি। অপরদিকে সেইন্ট লুসিয়ায় উইন্ডিজের বিপক্ষে এই টেস্ট হারলেই লম্বা ফরম্যাটে শততম হার দেখে ফেলবে বাংলাদেশ। সেই পথেই আছে বাংলাদেশ, অন্ততপক্ষে দুই দিনের খেলা শেষে তেমনটা বলাই যায়।

সেইন্ট লুসিয়ায় চলমান টেস্টে ব্যাটিং উইকেটেও ২৩৪ রানে গুটিয়ে গেছে বাংলাদেশ। ব্যাটসম্যানরা যেন রান করতে ভুলে গেছেন। যদিও করছেন তাও ফিফটি পার করতেই আউট হয়ে যাচ্ছেন। বোলাররাও চাপ ধরে রেখে বোলিং করতে ব্যর্থ হচ্ছেন। এক সেশনে ৩২ রানের ব্যবধানে ৪ উইকেট তুলে নিয়ে কিছুটা আশা দেখিয়েই এরপর কেবল পন্ডশ্রমের গল্প লিখে গলদঘর্ম পরিশ্রম করেই যাচ্ছেন। যার ফলে সহজেই শত রানের লিড নিয়ে ম্যাচে চালকের আসনেই উইন্ডিজরা।

মাঠে ক্রিকেটারদের এমন ব্যর্থতার গল্পে হতাশা ফুটে উঠেছে কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর কণ্ঠেও। তাইতো সেইন্ট লুসিয়া টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে টাইগার কোচ বলতে বাধ্য হোন,

‘পুরোপুরি বলা কঠিন (বাংলাদেশের ঘাটতি কোথায়)… টেস্ট ক্রিকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দীর্ঘ ইতিহাস ও সংস্কৃতি আছে। আশি-নব্বইয়ের দশকে তারা বিশ্বের সেরা টেস্ট দল ছিল। তারা তাই জানে, টেস্ট ম্যাচ কীভাবে খেলতে হয়। ওদের আইকনিক অনেক ক্রিকেটার আছে, যারা টেস্ট ম্যাচে ভালো করেছেন। আমাদের টেস্ট ম্যাচ সংস্কৃতি এখনও সেখানেই নেই, যেখানে থাকা উচিত।’

পরিসংখ্যান দিয়ে হতাশার চিত্র না দেখিয়ে, দর্শক হিসেবে কোচের সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে তাই আমাদেরও বলতে হচ্ছে, টিনেজ পেরিয়ে যুবক হলেও বাংলাদেশের টেস্ট সংস্কৃতি ২২ বছরেও সঠিক জায়গায় পৌঁছায়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *