পদ্মা সেতুর অনুষ্ঠানের পরিবর্তে হেলিকপ্টার কেনার তথ্যটি ভুয়া

Slider জাতীয়


পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বাতিল করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফায়ার সার্ভিসের জন্য তিনটি হেলিকপ্টার কেনার ঘোষণা দিয়েছেন বলে একটি গুজব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকে এটা শেয়ারও করেছেন।

এ বিষয়ে সতর্ক করে আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উপ-কমিটির সদস্য প্রকৌশলী তন্ময় আহমেদ ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন।

তিনি জানান, এখন পর্যন্ত এ রকম কোনো ঘোষণা আসেনি। আর যেই টাকায় হেলিকপ্টার কেনার কথা বলা হচ্ছে সেটা কোনো পরিবহনের কাজে ব্যবহারের হেলিকপ্টার নয়। একটি ফায়ার ফাইটিং হেলিকপ্টারের দাম ২২-২৫ মিলিয়ন ডলার বা কমে হলেও ২০ মিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশি টাকায় যার দাম ১০০ কোটিরও অনেক উপরে।

এ প্রকৌশলী জানান, কিছু ইউরোপিয়ান কোম্পানি ১২-১৩ মিলিয়নেও এসব হেলিকপ্টার দেয় কিন্তু সেগুলো দুর্গম/দুর্গত/আক্রান্ত এলাকা থেকে মানুষ উদ্ধারের জন্য। ফায়ার ফাইটিং হেলিকপ্টার মানেই তার পে লোড ক্যাপাসিটি ৬০০-১০০০ কেজি ওজনের পানি এবং অন্যান্য আগুন নেভানোর জিনিসপত্র বহন করে।

তন্ময় আহমেদ বলেন, সীতাকুণ্ডের মানবিক ক্রাইসিসের পর আওয়ামী পরিবারের সদস্যরাই ছুটে গেছে। কোনো নুরা গ্যাং, শিবির-চাচ্চুদল গ্যাং সেখানে যায়নি। তারাই বসে বসে আজকে গুজব তৈরি করে আপনাদের বোকা বানিয়ে বাদর খেলা দেখাবে।

এদিকে সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের কেশবপুরে বিএম কনটেইনার ডিপোর আগুন টানা ৮৬ ঘণ্টা পর পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী। দীর্ঘ এ অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ৪০০ কনটেইনার ধ্বংস হয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

বুধবার (৮ জুন) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের ১৮ বীর ইউনিটের লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো আরিফুল ইসলাম এ তথ্য জানান।

এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘আগুন পুরোপুরি নিভে গেছে। ডিপোতে আর কোনো আগুন নেই। আগুন আর জ্বলছে না। শুধু ধোঁয়া বের হচ্ছে। কনটেইনারে যে গার্মেন্টস পণ্য আছে সেগুলোতে পানি দেয়ায় সেখান থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে।’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সেনাবাহিনীর এ কর্মকর্তা বলেন, ‘পুরো ডিপো আমরা ঘুরে দেখেছি। আর কোনো মরদেহ পাইনি। কিন্তু আপনারা দেখেছেন একটি শেড এবং অনেক কন্টেইনার পুড়ে দুমড়ে-মুচড়ে গেছে। ক্রেনের মাধ্যমে সেগুলো আমরা সরাচ্ছি। এর নিচে আর কোথাও কিছু আছে কিনা তা এখনই বলা সম্ভব নয়।’

‘ডিপোতে ৪ হাজার ৪০০ এর মতো কন্টেইনার ছিল। তার মধ্যে প্রাথমিকভাবে যে তথ্য পেয়েছি তাতে ৪০০ কন্টেইনার ধ্বংস হয়েছে।’

শুরু থেকেই নিরাপত্তা নিশ্চিত করে আগুন যাতে আর না বাড়ে এবং আর কোনো বিস্ফোরণ না ঘটে সেই লক্ষ্যে কাজ করছিলেন বলে জানান সেনা কর্মকর্তা মো. আরিফুল ইসলাম।

রোববার (৫ জুন) সকাল থেকে ডিপোর আগুন নিয়ন্ত্রণে যোগ দেন সেনা সদস্যরা। আগুন লাগার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আগুন বিপদসীমার নিচে এবং ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নিয়ন্ত্রণে আসে বলে জানান মো. আরিফুল ইসলাম।

শনিবার (৪ জুন) রাতে লাগা এ আগুনে এখন পর্যন্ত ৪৪ জন মারা গেছেন। দেহাবশেষ উদ্ধার হয়েছে দুটি। আহতের সংখ্যা চার শতাধিক। সবশেষ জানা তথ্যমতে, অগ্নিকাণ্ডে ৪০০ কনটেইনার পুড়েছে। তবে এর মধ্যে কোনো ধরনের কনটেইনারের সংখ্যা কত তা এখনো জানা যায়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *