ভারতের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ (কেকে) চলে গেলেন না ফেরার দেশে। মঙ্গলবার (৩১ মে) রাতে কোটি ভক্তকে কাঁদিয়ে ৫৩ বছর বয়সে পৃথিবী থেকে বিদায় নেন এই শিল্পী। কেকের অকাল মৃত্যুর ধাক্কার মাঝেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রোষানলে পড়েছেন গায়ক রূপঙ্কর বাগচী।
এদিন বিকেলেই কেকের বিরুদ্ধে ফেসবুক লাইভে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন রূপঙ্কর। সেই সময় থেকেই তার (রূপঙ্কর) বিরুদ্ধে সুর চড়াচ্ছিলেন নেটিজেনরা। কেকের মৃত্যুর পর আরও আক্রমণাত্মক তারা। রূপঙ্করের ফেসবুকে চোখ রাখলেই বোঝা যায়, কী ভয়ঙ্করভাবে কটাক্ষের শিকার হচ্ছেন তিনি।
ভাইরাল ওই ভিডিওতে কেকের অনুষ্ঠান নিয়ে মাতামাতি করার বিরোধিতা করেন এই বাঙালি গায়ক। বলেছিলেন, ‘কেকে দারুণ গায়ক। কিন্তু তার ভিডিও দেখে আমি অনুভব করলাম, এ রকম ভিডিও তো আমাদের এখানকার অনেক শিল্পীরই রয়েছে। আমি, রূপম ইসলাম, অনুপম রায়, ইমন চক্রবর্তী, সোমলতা আচার্য— আমরা সবাই কেকের চেয়ে ভালো গান গাই!’
দর্শকদের উদ্দেশে রূপঙ্কর প্রশ্ন করেছিলেন, ‘আমাদের নিয়ে আপনারা এতো উত্তেজনা বোধ করেন না কেন? কে এই কেকে? আমরা যেকোনো কেকের চেয়ে বেটার। আমি যে কজন সংগীতশিল্পীর নাম উচ্চারণ করলাম, তারা যেকোনো পারফরম্যান্সে কেকের চেয়ে ভালো। মুম্বাই নিয়ে এত উত্তেজনা কেন? কতদিন মুম্বাইয়ের পেছনে ঘুরবেন? সাউথ ইন্ডিয়া, পাঞ্জাব, উড়িষ্যাকে দেখুন, বাঙালি হোন প্লিজ।’
গায়কের এমন ‘কটাক্ষের’ জন্য তেড়ে আসেন নেটিজেনরা। তাদের মতে, ‘আপনার প্রতি মানুষের যে শ্রদ্ধাটুকু আছে সেটুকুও হারাবেন। ভালো থাকুন, সুস্থ হয়ে উঠুন।’
কেউ রূপঙ্করকে ‘হিংসুটে’ তকমাও দিয়েছেন! লিখেছেন, ‘মিস্টার বাগচী, আপনাকে বলছি। শুনুন। সবার প্রথমে একটা দশমিক বসান, তার পরে একশটা শূন্য বসিয়ে একটা এক লিখুন। তার পরে একটা পার্সেন্টেজ চিহ্ন বসান। যে সংখ্যাটা দাঁড়াল, শতকরা ততটুকু যদি আপনার শিল্পী হওয়ার যোগ্যতা থাকত, তাহলে এই কথাগুলো বলতে পারতেন না। আপনি পুরোপুরিভাবে আত্মকেন্দ্রিক এবং হিংসুটে একজন মানুষ।’
অনেকেই রূপঙ্করকে স্মরণ করিয়ে দেন, অন্যের সাফল্যে ঈর্ষান্বিত না হয়ে মানুষের ভালোবাসা অর্জন করতে জানতে হয়। অনেকেই লেখেন, রূপঙ্কর মানসিকভাবে অসুস্থ, তার দ্রুত আরোগ্য কামনা করি।
কেকের মৃত্যুর পর ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে রূপঙ্কর জানান, তার পোস্টের ভুল ব্যাখা হচ্ছে। কেকের প্রতি রাগ থেকে না, বাংলা গানের পাশে দাঁড়ানোর ডাক দিয়ে তার এই পোস্ট।
কেকের অকাল প্রয়াণের খবর শুনে শোকস্তব্ধ রূপঙ্কর। তিনি বলেন, ‘খুবই দুঃখ লাগছে। কষ্ট লাগছে। কেকে অত্যন্ত বড়় মাপের শিল্পী ছিলেন। এটা কোনো মৃত্যুর বয়স না। তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।’
কেকের প্রতি করা তার মন্তব্য নিয়ে যে বিতর্ক শুরু হয়েছে তারও জবাব দেন রূপঙ্কর বাগচী। তিনি বলেন, ‘আমি কেকের বিরুদ্ধে কিছু বলতে চাইনি। এটা যদি মানুষ ভুল বোঝে, আমার দুঃখ লাগবে। আমি তো মানুষটাকে চিনিই না। বরং আমি তার গানের ভক্ত। আমি বাংলা গানের সপক্ষে কথা বলতে চেয়েছিলাম।’