সাংসদ হয়েও মুনমুন সেন আদিবাসীদের কাছে

Slider গ্রাম বাংলা জাতীয় টপ নিউজ ফুলজান বিবির বাংলা রাজনীতি সারাবিশ্ব

image

গ্রাম বাংলা ডেস্ক:  লোকসভা ভোটের প্রচারে যেখানেই গিয়েছেন,তৃণমূলের প্রার্থী হিসেবে কম, বরং ভোটারদের কাছে নিজেকে সুচিত্রা সেনের মেয়ের পরিচয়েই নিজেকে পরিচিত করেছিলেন তিনি। আর তা নিয়ে সেই সময় বিরোধীরা অনেকেই তাঁর মধ্যে ‘রাজনৈতিক জ্ঞানের অভাব রয়েছে’ বলে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি। কিন্তু, ভোটে জিতে সাংসদ হওয়ার পরে প্রথম বার নিজের লোকসভা কেন্দ্রে এসে মুনমুন সেন বুঝিয়ে দিলেন, রাজনীতির ময়দানে আনকোরা হলেও দ্রুত তার প্যাঁচপয়জার শিখে নিতে পারছেন তিনি।

হুল দিবস উপলক্ষে একগুচ্ছ কর্মসূচি নিয়ে রবিবার বিকেলে বাঁকুড়ায় এসেছেন মুনমুন। আর এসেই সন্ধ্যায় বাঁকুড়া সদর থানার মুন্যাডি গ্রামে বিজেপি-র সঙ্গে সংঘর্ষে জখম তৃণমূল কর্মীদের দেখতে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ছোটেন। সেখানে কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের মনোবল বাড়ান।

আর সোমবার বাঁকুড়ার তৃণমূল সাংসদকে দেখা গেল, হুল দিবসে নিজেকে পুরোপুরি সামিল করতে। এ দিন দক্ষিণ বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলের সারেঙ্গা, রাইপুর, রানিবাঁধ ও খাতড়ায় হুল দিবসের সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দেন মুনমুন। এর আগে ভোটের প্রচারে জঙ্গলমহলে এসে কথা দিয়েছিলেন, সাংসদ হলে আসবেন এখানে। সেই কথা রেখে মুনমুন এ দিন নিরাশ করেননি জঙ্গলমহলকে। নব-নির্বাচিত সাংসদ এ দিন আদিবাসী সমাজের মানুষের পাশে থেকে উন্নয়ন ঘটনানোর কথা যেমন বলেছেন, তেমনই বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রে ঘনঘন আসার আশ্বাসও দিয়েছেন। মুনমুন বলেন, “আমি কথা দিয়েছিলাম, জেতার পরে আসব, এসেছি। আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিনিধি। উনি আপনাদের ভীষণ ভালবাসেন। আমিও তাঁর সঙ্গে আপনাদের উন্নয়নের জন্য কাজ করব।”

সারেঙ্গার মিশন মাঠে তাঁর অনুষ্ঠানকে ঘিরে উৎসাহী জনতার ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। ঠাসা ভিড় ছিল রাইপুরের ফুলকুসমার বাজারের সভাতেও। মুনমুন হাতে মাইক্রোফোন তুলে নিতেই জনতার হাততালিতে গমগম করতে থাকে গোটা মাঠ। ভোট প্রচারে গিয়ে মঞ্চে খুব কম সময় বক্তব্য রাখতেন মুনমুন। এ দিনও তার ব্যতিক্রম হল না। তবে আলাদা ছিল তাঁর বক্তব্যের প্রসঙ্গ। কয়েক মিনিটের বক্তব্যে এই দুই জায়গাতেই একবারও তিনি মা সুচিত্রার প্রসঙ্গ টানেননি। বরং আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষের মন টানতে সারেঙ্গায় সিধো-কানহোর মূর্তি বসানোর কথা ঘোষণা করেছেন, যা শুনে স্বভাবতই উল্লাসে ফেটে পড়েছে উপস্থিত জনতা। রাইপুরের সভায় দলীয় ব্লক সভাপতি জগবন্ধু মাহাতোর কাছ থেকে সিধো-কানহোর মূর্তি নিজের জন্য চেয়েছেন।

তাঁকে ভোট দিয়ে জেতানোর জন্য মানুষকে ধন্যবাদ জানাতেও ভোলেননি মুনমুন। ভোট প্রচারে যেখানেই মুনমুন গিয়েছেন, সব সময় তাঁর সফরসঙ্গী ছিলেন বাঁকুড়ার জেলা সভাধিপতি তথা তৃণমূল নেতা অরূপ চক্রবর্তী। এ দিনও এই জুটি ভাঙেনি। প্রচারে গিয়ে অরূপবাবু আশ্বাস দিয়েছিলেন, মুনমুন সংসদে দাঁড়িয়ে ইংরেজিতে অনুন্নত বাঁকুড়ার সমস্যার কথা তুলে ধরবেন। এ দিন অরূপবাবু বলেন, “মুনমুন জেলার মানুষকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তা পূরণ করবেন। সিপিএমের ন’বারের সাংসদকে এই লোকসভা কেন্দ্রের মানুষ ভাল করে দেখার সুযোগটাই পাননি। মুনমুনের ক্ষেত্রে তা হবে না।” সারেঙ্গা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ধীরেন ঘোষ এবং রাইপুরের তৃণমূল ব্লক সভাপতি জগবন্ধুবাবুর কথায়, “উনি এখানে এসে কথা রাখলেন। জঙ্গলমহলের মানুষের তাঁর উপরে বিশ্বাস ও আস্থা আরও বেড়ে গেল। মুনমুন সেন এখানের মানুষের উন্নয়ন ঘটাবেন, এ ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত।”

image--
ছবি: বাঁকুড়ার রবীন্দ্র ভবনে মুনমুন সেন

সিপিএমের বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক তথা রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অমিয় পাত্রের অবশ্য কটাক্ষ, “রাজনীতির বিষয়ে ভাল গৃহশিক্ষক পেয়েছেন বলেই হয়তো মা ছেড়ে এ বার রাজনৈতিক কথাবার্তা বলছেন উনি। তবে উন্নয়ন কতটা হবে তা ভবিষ্যতই বলবে।”

রেল নিয়ে বিক্ষোভ। রেলের ভাড়া বৃদ্ধি প্রত্যাহার এবং রেল পরিষেবা উন্নত করার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করল এসইউসি(সি)। সোমবার আদ্রা স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে প্রতিবাদ মিছিল করেন দলের কর্মী-সমর্থকেরা। এ ছাড়া, রবিবার সাঁওতালডিহি স্টেশনে একই ধরনের বিক্ষোভ মিছিল করে বিভিন্ন দাবিতে স্টেশন ম্যানেজারের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে এসইউসি। দলের তরফে জানানো হয়েছে রেলের ভাড়া বৃদ্ধি প্রত্যাহার, আদ্রায় উড়ালপুল নির্মাণ,যাত্রী পরিষেবার মান উন্নয়নের দাবিতে মিছিল করা হয়েছে। আদ্রা ডিভিশনে পরপর রেল দুর্ঘটনা ও রেল বিভ্রাটের জন্য রেল কর্তৃপক্ষকে দায়ী করা হয়েছে বিক্ষোভে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *