আত্মসমর্পণের আবেদন করে জামিন চাইলেন হাজী সেলিম

Slider বাংলার মুখোমুখি

অবৈধ সম্পদ অর্জন ও তথ্য গোপনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের আবেদন করে যেকোনো শর্তে জামিন চেয়েছেন আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য (এমপি) হাজী মোহাম্মদ সেলিম। আজ রোববার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭ এর বিচারক শহিদুল ইসলামের আদালতে এ আবেদন করেন তার আইনজীবী।

আবেদনে হাজী সেলিমের আইনজীবী শ্রী প্রাণ নাথ উল্লেখ করেন, ২০১৬ সালে হার্ড সার্জারির সময় মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হওয়ার কারণে দীর্ঘদিন যাবৎ বাক-শক্তিহীন অবস্থায় রয়েছেন হাজী সেলিম। তিনি দেশ ও বিদেশে চিকিৎসা নিয়েছেন। জেলে থাকলে চিকিৎসার অভাবে ও বাক-শক্তিহীনের কারণে যেকোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এ কারণে যেকোনো শর্তে তার জামিন আবেদন করছি। জামিন পেলে তিনি পলাতক হবেন না। তাই আপিল শর্তে আত্মসমর্পণ পূর্বক তার জামিন আবেদন করছি।

এদিন দুপুর ২টার দিকে আদালতে উপস্থিত হবেন হাজী সেলিম। এরপর এ আবেদনের শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া কারাগারে উন্নত চিকিৎসা ও প্রথম শ্রেণির ডিভিশন চেয়ে আরও দুটি আবেদন করা হয়েছে।

এর আগে সম্পদ অর্জনের মামলায় গত ২৫ এপ্রিল সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের ১০ বছরের সাজা বহাল রাখেন হাইকোর্ট। এরপর তাকে ৩০ দিনের মধ্যে আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই নির্দেশে আজ বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে যাচ্ছেন তিনি।

উল্লেখ্য, ২০০৭ সালের ২৪ অক্টোবর হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে লালবাগ থানায় অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এ মামলা করেছিল দুদক। এরপর দুদক মামলাটিতে চার্জশিট দাখিল করে। জ্ঞাত আয়বহির্ভূতভাবে প্রায় ২৬ কোটি ৯২ লাখ ৮ হাজার টাকার সম্পদ অর্জন এবং প্রায় ১০ কোটি ৪ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগের এ মামলায় ২০০৮ সালের ২৭ এপ্রিল রায়ে তার একটি ধারায় ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং ১০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

অপর ধারায় তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া অবৈধ সম্পদ অর্জনে হাজী সেলিমকে সহযোগিতা করার দায়ে তার স্ত্রী গুলশান আরাকে তিন বছরের কারাদণ্ড, এক লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

২০০৯ সালের ২৫ অক্টোবর হাজী সেলিম ও তার স্ত্রী গুলশান আরা বেগম এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন। ২০১১ সালের ২ জানুয়ারি হাইকোর্ট ১৩ বছরের সাজা বাতিল করে রায় দেন। হাইকোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালত আপিল বিভাগে আপিল করে দুদক। আপিলের শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি হাইকোর্টের রায় বাতিল হয়ে যায়। সেইসঙ্গে হাজী সেলিমের আপিল পুনরায় হাইকোর্টে শুনানির নির্দেশ দেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। সে নির্দেশনার আলোকে গত বছর ৯ মার্চ হাইকোর্ট বিচারিক আদালতের রায় বহাল রাখেন। সেই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি গত ১০ ফেব্রুয়ারি প্রকাশ করা হয়।

হাইকোর্ট রায়ের অনুলিপি পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে হাজী সেলিমকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। এদিকে, হাজী সেলিমের স্ত্রী গুলশান আরা বেগম মারা যাওয়ায় তার আপিলটি বাতিল ঘোষণা করা হয়। এ মামলায় জামিনে ছিলেন হাজী সেলিম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *