পি কে হালদারের সম্বল ‘একটি পরিত্যক্ত টিনের ঘর’!

Slider জাতীয়


বহুল আলোচিত হাজার কোটি টাকা পাচারসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে বিপুল অঙ্কের অর্থ লোপাটকারী প্রশান্ত কুমার হালদার (পি কে হালদার) একজন দরিদ্র দর্জির সন্তান। সাধারণ পরিবারের সন্তান হয়েও পি কে বিপুল পরিমাণ বিত্ত-বৈভবের মালিক বনে গেছেন। আত্মসাৎ ও পাচারের মামলার আসামি তাকে গ্রেফতার করায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন পি কে হালদারের জন্মস্থান পিরোজপুরের সাধারণ মানুষ।

রোববার (১৫ মে) দুপুরে পি কে হালদারের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, হালদারবাড়িতে সাতটি পরিবার বসবাস করছে। বাড়ির লোকজন নিম্নমধ্যবিত্ত। এছাড়া পি কে হালদারের পৈতৃক ভিটায় পরিত্যক্ত একটি ঘর রয়েছে, যার দেয়ালে শ্যাওলা ধরেছে। ভিটার ওপর জন্মেছে আগাছা।

প্রতিবেশীরা জানান, ভিটার ওই জমি আর টিনের পরিত্যক্ত ঘরটি ছাড়া গ্রামে পি কে হালদারদের কোনো সম্পদ নেই। অন্যান্য সম্পদ বিক্রি করে অনেক আগেই গ্রাম ছেড়েছে হালদার পরিবার।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার দীঘিরজান গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন পি কে হালদার। তার বাবা মৃত প্রণবেন্দু হালদার পেশায় ছিলেন একজন দর্জি। মা লীলাবতি হালদার স্কুল শিক্ষিকা।

তবে ২০০২ সালের আগে প্রায়ই এলাকায় যেতেন পি কে হালদার। জনকল্যাণে কাজ না করলেও ২০০২ সালে দীঘিরজান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি থাকাকালে লাঞ্ছিত হয়ে এলাকা ছাড়েন পি কে। এরপর তাকে আর এলাকায় দেখা যায়নি।

বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) পি কে হালদার এবং তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে মোট ৩৪টি মামলা করেছে। এসব মামলায় তাদের বিরুদ্ধে কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে। ভারতের অর্থ সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বাহিনী এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) কর্মকর্তারা গত শনিবার পি কে হালদারসহ মোট ৬ জনকে আটক করেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অর্থ পাচারে জড়িত বাংলাদেশের একাধিক ব্যক্তির নাম প্রকাশ করেছেন তিনি। এ সময় প্রশাসন ১০টি বিলাসবহুল বাড়ি সিলগালা ও বিপুল সম্পদের দলিল ও নথিপত্র উদ্ধার করেছে। এ সংবাদ পিরোজপুরে গ্রামের বাড়িতে ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়রা অনেকেই স্বস্তি প্রকাশ করেন এবং দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের দাবি জানান তারা। তবে নাম প্রকাশ করে কিছু বলতে রাজি হননি কেউই।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি মাটিভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, অন্যদের শিক্ষা দিতে তাকে বিচারের আওতায় আনা হোক।

তিনি বলেন, পি কে হালদারকে দেশে এনে বিচারের আওতায় আনলে ভবিষ্যতে পাচারকারীরা এ জাতীয় কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকবেন।

স্থানীয় দিঘিরজান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মঞ্জুশ্রী মৈত্র বলেন, প্রশান্ত আমার সরাসরি ছাত্র। তার মায়ের সঙ্গে আমি শিক্ষকতা করেছি। ছোটবেলা থেকে ওরা তিন ভাই মেধাবী ছাত্র ছিল। ছাত্রের এমন খবর আমাকে ব্যথিত করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *