বইমেলা ১৭ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানোর আহ্বান

Slider জাতীয়

‘করোনা মহামারি পরিস্থিতি উন্নত হওয়ায় বইমেলার আয়োজক বাংলা একাডেমিকে অনুরোধ করব বইমেলার সময়সীমা আগামী ১৭ মার্চ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হোক। দেশের স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলে দেওয়া হয়েছে। ফলে বইমেলার সময় বাড়ালে আমরা বরং আরও নতুন পাঠক ক্রেতা দর্শনার্থীদের মেলায় পাবো।’ বাংলাদেশ লেখক পাঠক প্রকাশক পরিষদের সদস্য সচিব নীলসাধু এ কথা বলেন।

২৩ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৫টায় অমর একুশে বইমেলায় লেখক বলছি মঞ্চে বাংলাদেশ লেখক পাঠক প্রকাশক পরিষদ ‘অমর একুশে বইমেলা ২০২২: লেখক-পাঠক-প্রকাশক আড্ডা’ নামে ভিন্নমাত্রার এক আড্ডার আয়োজন করে। এ আড্ডার সঞ্চালক ছিলেন পরিষদের সদস্য সচিব কবি ও প্রকাশক নীলসাধু।

মুক্ত আড্ডায় যুক্ত হয়ে অমর একুশে বইমেলা আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব জালাল আহমেদ বলেন, ‘বাংলা একাডেমি এ ধরনের নতুন উদ্যোগকে সব সময় স্বাগত জানায়। আমরা চাই বাংলাদেশ লেখক পাঠক প্রকাশক পরিষদ বই নিয়ে বছরজুড়েই বৈচিত্র্যময় উদ্যোগ নেবে। বাংলা একাডেমি বইয়ের সাথে সম্পৃক্ত যে কোনো ধরনের সুন্দর উদ্যোগে যথাসম্ভব সহযোগিতা করবে। আমরা চাই দেশে ভালো বইয়ের ভালো পাঠক তৈরি হোক।’

বৈচিত্র্যময় এ আড্ডায় ভালো বইয়ের প্রচার ও প্রসারের জন্য গণমাধ্যমকে সারাবছর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান পরিষদের আহ্বায়ক কবি ও প্রকাশক রবীন আহসান। তিনি বলেন, ‘আমাদের গণমাধ্যম শুধু অমর একুশে বইমেলার এক মাসজুড়ে নতুন বইয়ের প্রচার করে, কিন্তু বছরের বাকি এগারো মাস আমাদের পাঠকরা বইয়ের আর কোনো খবর পান না। ফলে আমরা দিনদিন কাঙ্ক্ষিত পাঠক তৈরি করতে ব্যর্থ হচ্ছি। গণমাধ্যমকে বছরজুড়েই ভালো বইয়ের প্রচার চালাতে হবে। এতে নতুন নতুন পাঠক তৈরি হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘অমর একুশে বইমেলা শুধু রাজধানী ঢাকা কেন্দ্রীক করলে হবে না, বিভাগীয় শহরে এবং সম্ভব হলে জেলা ও উপজেলা শহর, এমনকি ইউনিয়ন পর্যায়ে বইমেলাকে ছড়িয়ে দিতে হবে।’

কথাসাহিত্যিক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা রেজা ঘটক বলেন, ‘লেখক পাঠক প্রকাশক পরিষদ বইয়ের সাথে সরাসরি যুক্ত তিন পক্ষের স্বার্থ নিয়ে কাজ করবে। পরিষদ আগামীতে লেখক, পাঠক ও প্রকাশকদের নিয়ে সদস্য সংগ্রহ করবে। পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য একটি আধুনিক যুগোপযোগী নীতিমালা তৈরি করবে। সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে বিশ্বের যেখানে যেখানে বাংলা ভাষী মানুষ আছে, সেখানে সেখানে আমরা এ পরিষদের নেটওয়ার্ক গড়ে তুলব।’

লেখক ও গায়ক শেখ সাহেদ আলী বলেন, ‘মানসম্পন্ন বই প্রকাশ করে, সেই বই নিয়ে কাজ করলে আমিও এ পরিষদের সাথে সম্পৃক্ত থাকবো। বইয়ের সাথে যুক্ত যে কোনো ভালো উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই।’

গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠক আকরামুল হক বইমেলায় ধূমপায়ীদের জন্য আলাদা স্মোকিং জোনের দাবি জানান। আগত নারী ও শিশুদের কথা ভেবে টয়লেট ও খাবার পানির পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করার অনুরোধ জানান।

এক রঙা এক ঘুড়ির প্রকাশক শিমুল আহমেদ চলমান একুশে বইমেলার সব প্রস্তুতি ও সার্বিক দিক নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। তিনি বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাশিল্পী সেলিনা হোসেন ও মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদাকে পরিষদের পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

সমাপনী বক্তব্যে পরিষদের আহ্বায়ক রবীন আহসান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষে আমরা যদি বাছাই করে ‘১০০টি বঙ্গবন্ধু বিষয়ক ভালো বই’ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ‘৫০টি মুক্তিযুদ্ধের ভালো বই’ পাঠকের সাথে পরিচিত করতে পারি। তাহলে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী সার্থক হবে।’

এ বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়ার জন্য তিনি সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, বাংলা একাডেমি ও প্রকাশনা শিল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট সমিতিগুলোকে অনুরোধ করেন।

লেখক-পাঠক-প্রকাশকদের উপস্থিতিতে বইমেলায় আড্ডাটি প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। চলতি বছর অমর একুশে বইমেলা শেষে পরিষদের পক্ষ থেকে এ ধরনের আরও একটি আড্ডার আয়োজন করা হবে বলে জানানো হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *