সংসদে প্রধানমন্ত্রী- অবরোধ-হরতালে ক্ষতি ১ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা

Slider জাতীয়

65308_hasina

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন,মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করে ক্ষমতায় আরোহনের চেষ্টা কোন রাজনৈতিক দলের মতাদর্শ হতে পারে না। শুধু নিজের ব্যক্তিগত স্বার্থেই বিএনপি নেত্রী হরতাল দিচ্ছেন। বিএনপি-জামায়াত পরস্পরের দোসর। তাদের নাশকতার একটাই উদ্দেশ্য যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা এবং দুর্নীতির মামলায় সাজা থেকে খালেদা জিয়াকে রক্ষা করা। জনসম্পৃক্ততাবিহীন এই কার্যক্রমে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতেই নাশকতা চালানো হচ্ছে। বিএনপি-জামায়াতের হরতালের নামে নাশকতা ও ধ্বংসাত্মক কাজে ব্যবসা-বাণিজ্য, রপ্তানি ও অন্যান্যভাবে দেশের ১ লাখ ২০ হাজার টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। ১০১ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এ সকল কার্যক্রম দেশের প্রচলিত আইনে মৃত্যুদন্ড পাওয়ার উপযোগী অপরাধ। বুধবার সংসদে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারি দলের সংসদ সদস্য মনিরুল ইসলামের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি। টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত ৫ই জানুয়ারি হতে টানা ৫২ দিন ধরে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট হরতাল অবরোধের নামে দেশে এক চরম নৈরাজ্যের সৃষ্টি করেছে।

ক্ষমতার লিপ্সায় অন্ধ হয়ে তারা দরিদ্র খেটে খাওয়া মানুষ, দেশের নিরপরাধ সাধারণ নারী পুরুষ এমনকি নিষ্পাপ শিশুদেরকেও আগুণে পুড়িয়ে হত্যা করছে। তিনি বলেন, পৃথিবীর নিষ্ঠুরতম প্রক্রিয়া হলো আগুনে পুড়িয়ে মানুষ মারা। আর সেই প্রক্রিয়ায় ক্ষমতা আরোহনের চেষ্টা কোন রাজনৈতিক দলের মতাদর্শ হতে পারে না। পেটের তাগিদে কাজ করতে বেরিয়ে বিগত ৫২ দিনে ১০১ জন মানুষ মৃত্যুমুখে পতিত হয়েছে যার অধিকাংশ আগুনে পুড়ে মারা গেছে। পেট্রলবোমাসহ নানা ধরণের নাশকতামূলক কাজে সহস্রাধিক ব্যক্তি মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন। এক হাজার ১৭৩টি যানবাহন আগুনে পুড়ে গেছে ও ভাংচুর করা হয়েছে। ৬টি লঞ্চে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে, ২৫ দফায় ট্রেনে নাশকতা করা হয়েছে। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, কেন বিএনপি-জামায়াত জোট এই নাশকতা করছে? তারা জানে ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনে নির্বাচিত সরকারের মেয়াদ ৫ বছর। কিন্তু তা সত্ত্বেও কেন এই নাশকতা? কেউ কেউ এই কার্যক্রমকে রাজনৈতিক কার্যক্রম বলতে চায়। কিন্তু আসল কারণটা অন্য। সংসদ নেতা বলেন, বিএনপি-জামায়াত পরস্পরের দোসর। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ে এ পর্যন্ত ১৪ জনের মৃত্যুদন্ড, ২ জনকে আমৃত্যু কারাবাস, একজনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক রীতিনীতি সম্পূর্ণ অনুসরণ করে এই বিচার সম্পন্ন হয়েছে। মৃত্যুদন্ড প্রাপ্তদের মধ্যে মাত্র একজনের রায় কার্যকর করা হয়েছে। বাদবাকিদের রায় আইনী প্রক্রিয়া অনুসরণ করে কার্যকর করা হবে। এই রায়গুলোর বাস্তবায়ন বন্ধ করা বিএনপি-জামায়াতের নাশকতার অন্যতম কারণ। তিনি বলেন, দ্বিতীয় কারণ হচ্ছে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া ও তার পুত্রের দুর্নীতির ৯টি মামলা আদালতে বিচারাধীন। শুধুমাত্র জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার টাকা আত্মসাতের বিচার চলছে। এই মামলা বিলম্বিত করার জন্য নানারকম কারণ দেখিয়ে মামলার বার বার সময় নেয়া হয়েছে। এই মামলা সাজা থেকে বাচার উদ্দেশ্যে বিএনপি-জামায়াত জোট নাশকতার কাজ করছে। এছাড়াও বিভিন্ন প্রকার দুর্নীতির অর্থ আত্মসাতের বিষয়ক আরও অনেক মামলা বিএনপি জোটের নেতাদের রয়েছে। এই মামলাগুলো থেকে বাচার জন্য তারা পেট্রলবোমা মেরে মানুষ মারছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি নেত্রী সম্প্রতি আন্দোলনে ৭ দফা দাবি দিয়েছেন। এর মধ্যে জনগণের কল্যাণ ও মঙ্গলের জন্য কোন দাবি নেই, সব দাবি ব্যক্তি স্বার্থের দাবি। আর এ কারণেই জনগণ তার সঙ্গে নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *