লেপ- তোষকের দোকানে মৌসুমী ভিড়

Slider ফুলজান বিবির বাংলা


গত কয়েকদিন ধরে আবহাওয়ার ব্যাপক পরিবর্তন দেখা দিয়েছে। কুয়াশাচ্ছন্ন থাকছে চারপাশ। জেকে বসেছে শীত। শীতের কারণে সুই-সুতা, তুলা আর লাল কাপড় নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন টাঙ্গাইলের নাগরপুরের লেপ-তোষকের কারিগররা। প্রাকৃতিক রীতি অনুযায়ী কার্তিকে শীত শুরু হলেও শীতকাল হিসেবে বিবেচিত হয় পৌষ ও মাঘ মাস। গ্রামের মানুষ শীত নিবারণে ভিড় করছেন উপজেলার লেপ-তোষকের দোকানে। ফলে লেপ-তোষক তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা। প্রায় সব দোকানেই ভিড় করতে দেখা গেছে ক্রেতাদের। এদের কেউ সম্পূর্ণ নতুন আবার কেউ পুরাতন লেপ তোষক দিয়ে ফের নতুন করে বানাতে এসেছেন শীত নিবারণের লেপ-তোষক। এ যেন মৌসুমী ভিড় জমছে শুরু করছে দোকানে।

উপজেলার বাজারের কারিগর জহির মিয়া বলেন, প্রতিদিন কিছু না কিছু অর্ডার পাচ্ছি। আশা করছি সামনের দিনগুলোতে আরো অর্ডার পাবো। তবে তুলার দাম আগের তুলনায় অনেক বেশি। তুলার মান ও পরিমাণের ওপর নির্ভর করে লেপ-তোষক তৈরির খরচ।

তিনি আরো বলেন, এ বছর জিনিসপত্রের দাম বাড়ায় লেপ-তোষক তৈরিতে খরচ ২০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আর একটি লেপ-তোষক বিক্রি করে লাভ হয় ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা। শীতের দুই থেকে তিনমাস আমাদের সিজিন। এই সময়ে লেপ তোষক বিক্রিও যেমন বাড়ে তেমনি কারিগররা ব্যস্ত সময় পার করেন। তবে বর্তমানে চায়না কম্বল অল্প দামে পাওয়া গেলেও লেপ-তোষকের ব্যবসায় কোনো প্রভাব পড়ছে না বলেও জানান তিনি।

উপজেলার বাবনাপাড়ার বৃদ্ধ শাহজাহান (৭৫) লেপ-তোষকের কারিগর প্রায় ৫০ বছর ধরে এই পেশায় নিয়োজিত। তিনি জানান, একটি লেপ বানাতে পাঁচ কেজি তুলা হলেই যথেষ্ট আর তোষক বানাতে লাগে ১৫ কেজি। তুলা ভেদে ৬০ টাকা কেজি বিক্রি করছি সেই তুলা এখন ৭০ থেকে ৮০ টাকা বিক্রি করতে হচ্ছে। তাই তুলাসহ অন্যান্য জিনিসপত্রের দাম বাড়ার কারণে লেপ-তোষকের দাম খানিকটা বেশি।

একজন কারিগর প্রতিদিন ৩-৬টি করে লেপ বানাতে পারে যাদের প্রতিদিন ৪০০-৭০০ টাকার মতো হাজিরা দিতে হয়। প্রতিটি লেপ আকার ভেদে এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা, তোষক ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা এবং জাজিম ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত খুচরা বিক্রি করা যায়। প্রতিটিতে পারিশ্রমিক আসে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা। তবে গত বছরের তুলনায় এ বছর তৈরি লেপ-তোষকের চাহিদা তুলনামূলক বেশি দেখা যাচ্ছে ক্রেতাদের।

লেপ-তোষকের ক্রেতা ডা: এম এ মান্নান বলেন, শীত চলে এসেছে। বিশেষ করে গ্রামের মানুষদের শীত নিবারণের জন্য লেপ-তোষকের দরকার হয়। গত বছরের তুলনায় এবার দাম বেশি চাচ্ছে। আগে যেটি বানিয়েছিলাম সেটির নষ্ট হয়ে গেছে। তাই নতুন করে তোষক বানানোর জন্য অর্ডার দিতে এসেছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *