ইআইপির জরিপ সঙ্কটের মূলে ৫ই জানুয়ারির ব্যর্থ নির্বাচন

Slider বাংলার মুখোমুখি

64589_eu

২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারি অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনকে চলমান রাজনৈতিক সঙ্কটের কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে নির্বাচনী সততা প্রকল্প (ইলেক্টোরাল ইন্টিগ্রিটি প্রজেক্ট-ইআইপি) নামের একটি বৈশ্বিক প্রকল্প। এছাড়া ওই নির্বাচনকে তারা ‘ব্যর্থ নির্বাচন’ হিসেবে অভিহিত করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড ও অস্ট্রেলিয়ার সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে প্রকল্পটি পরিচালিত হয়। ২০১৪ সালের ১লা জানুয়ারি থেকে ৩১শে ডিসেম্বরের মধ্যে অনুষ্ঠিত বিশ্বের ১০৭টি  দেশের ১২৭টি নির্বাচনের ওপর করা জরিপের ভিত্তিতে তারা নির্বাচনী সততার ধারণা সূচকও (পারসেপশন অব ইলেক্টোরাল ইন্টেগ্রিটি-পিইআই) প্রকাশ করেছে। ওই সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান নিচের দিক থেকে ১৪তম। প্রতিবেদনে বলা হয়, অনেক পর্যবেক্ষকই বলেছেন, সমকালীন নির্বাচনগুলোতে আন্তর্জাতিক মান পূরণের ক্ষেত্রে ঘাটতি ছিল। তাদের মতে, সবচেয়ে  বেশি সমস্যা দেখা গেছে নির্বাচিত স্বৈরশাসনগুলোতে (ইলেক্টেড অটোক্রেসি)। দলীয় প্রতিদ্বন্দ্বিতার খোলস থাকলেও ওই সব নির্বাচনে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। এতে বলা হয়, ব্যর্থ এসব নির্বাচনের ফলে নির্বাচিত কর্তৃপক্ষের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাসে ক্ষয় ধরে, ভোটার উপস্থিতি কমে যায় এবং সরকারের স্থিতিশীলতা দুর্বল হয়ে পড়ে।
সদ্য প্রকাশিত এই জরিপের গুরুত্বপূর্ণ ফলাফল অংশে অনেকগুলো ব্যর্থ নির্বাচন বড় ধরনের বিপদ তৈরি করেছে বলে মন্তব্য করা হয়। যেসব দেশের ব্যর্থ নির্বাচন ঝুঁকি সৃষ্টি করেছে, তার মধ্যে বাংলাদেশের নাম উল্লেখ করা হয়েছে সবার আগে। বাংলাদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা বাতিলের প্রতিবাদে বিরোধী দলগুলোর বর্জনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা উল্লেখ করে এতে বলা হয়, ‘ফল হিসাবে ১৫৩টি আসন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়, প্রধানত আওয়ামী লীগের দখলে চলে যায়।’ ওই নির্বাচনে কমপক্ষে ২১ জনের মৃত্যু এবং শতাধিক ভোটকেন্দ্র জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
নির্বাচন ও রাজনীতি বিষয়ে অন্তত ১০টি বইয়ের লেখক ও বিশেষজ্ঞ নরিস পিপার  নেতৃত্বে পরিচালিত এ প্রকল্পের অধীনে প্রতিটি নির্বাচনের বিষয়ে গড়ে ৪০ জন নির্বাচন পর্যবেক্ষক, বিশেষজ্ঞ বা নির্বাচনী কর্মকর্তার মতামতের ভিত্তিতে এই জরিপটি পরিচালিত হয়েছে। সব দেশের নির্বাচনে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সব সময়ে সমান গুরুত্ব দেয় না এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে পরাজিত দল জালিয়াতি ও অনিয়মের অভিযোগ তোলায় নির্বাচনের গুণমান যাচাই করা কঠিন বলে উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *