একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী চলমান কাজ শেষ না করলে ঠিকাদারকে পরের কাজ নয়

Slider জাতীয়


আমাদের অনেক প্রকল্প। বিশেষ করে নির্মাণ প্রকল্পে দেরি হয়ে যায়। এই দেরির একটা কারণ হলো একই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অনেকগুলো কাজ পেয়ে থাকে। মুষ্টিমেয় প্রতিষ্ঠান কাজ করে থাকে বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্তব্য করেছেন বলে জানান পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কে কতগুলো কাজ পেয়েছে, কাজ সময়মতো শেষ করেছে কি না, কোন সময় শেষ করেছে, এসবের একটি তালিকা সব মন্ত্রণালয় তৈরি করবে এবং তা প্রকাশ করতে হবে। (চলমান) কাজ শেষ করলে পরের কাজ পাবে। এর দুটি উদ্দেশ্য। একটি হলো আমাদের নতুন নতুন প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে নির্মাণ কাজের জন্য, মুষ্টিমেয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সীমিত থাকবো না। দ্বিতীয়ত সময়মতো আমাদের নির্মাণ কাজ শেষ হবে বলে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন।

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্তব্যসহ এসব নির্দেশনা দেন। শেরেবাংলা নগরস্থ এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যোগ দিয়ে সভাপতিত্ব করেন। সভাশেষে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা তুলে ধরেন পরিকল্পনা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আসাদুল ইসলাম। তিনি জানান, সভায় ১০ হাজার ৭০২ কোটি ২৩ লাখ টাকা ব্যয়ের ৭টি প্রকল্প সংশোধনসহ অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৬ হাজার ৪৫৯ কোটি ২৭ লাখ টাকা, বৈদেশিক ঋণে অর্থায়ন ৪ হাজার ২৪২ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।

সড়কের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য তুলে ধরে সচিব মো. আসাদুল ইসলাম বলেন, রাস্তা বাড়ানো হচ্ছে। রাস্তাকে টেকসই এবং ভালো রাখার জন্য রাস্তার পাশে জলাধার কিংবা বৃষ্টির পানি নামার ব্যবস্থা করতে হবে। রাস্তার পাশে গাছ লাগাতে হবে। বিশেষত হাইওয়ের পাশে বিশ্রামের ব্যবস্থা করতে হবে। বিশেষত যারা লং ড্রাইভ (চালক) করেন বা অন্যান্য যারা দীর্ঘসময় ধরে রাস্তায় থাকেন, তাদেরকে বিশ্রামের ব্যবস্থা করতে হবে।

প্রাণীপুষ্টির জন্য নেয়া প্রকল্পের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া বক্তব্য তুলে ধরে পরিকল্পনা বিভাগের সচিব বলেন, এটা অত্যন্ত ভালো প্রকল্প। ভুট্টা চাষের ফলে গো খাদ্যের উন্নতি হয়েছে। সেটা উৎসাহিত করা হবে। এই প্রকল্পে যেটা উন্নত জাতের ঘাস, যেটা আমাদের জন্য লাগসই, জমির ও প্রাণীর জন্য লাগসই, সেটা ব্যবস্থা করতে বলেছেন তিনি।

খুরশকুল বিশেষ আশ্রয়ণ প্রকল্পের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য তুলে ধরে আসাদুল ইসলাম বলেন, এ প্রকল্প সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এখানে যারা জলবায়ু উদ্বাস্তু কিংবা বিমানবন্দর সম্প্রসারণ করার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের তালিকা করতে হবে। তাদেরকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। ওখান যে আবাসন তৈরি হয়েছে, সেই আবাসনে তাদেরকে পুনর্বাসন করতে হবে। ওই তালিকাভুক্তদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। কারণ, এমনও হতে পারে সরকারি আবাসন তৈরি হয়েছে দেখে অন্যান্য জায়গা থেকে লোকজন এসে সেখানে আবাসনের জন্য চেষ্টা করতে পারে।

অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হচ্ছে- ১১৬ কোটি ৭৩ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রাণীপুষ্টির উন্নয়নে উন্নত জাতের ঘাস চাষ সম্প্রসারণ ও লাগসই প্রযুক্তি হস্তান্তর প্রকল্প, ২ হাজার ১৮০ কোটি ৯৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ওয়েস্টার্ন ইকনোমিক করিডর অ্যান্ড রিজিওনাল ইনহ্যান্সমেন্ট প্রোগ্রাম ফেজ-১: রুরাল কানেক্টটিভিটি, মার্কেট অ্যান্ড লজিস্টিক ইনফ্রাকটাচার ইম্প্রুভমেন্ট প্রজেক্ট, ৪ হাজার ২৮৭ কোটি টাকা ব্যয়ে উইকেয়ার ফেজ-১ ঝিনাইদহ-যশোর মহাসড়ক (এন-৭) উন্নয়ন প্রকল্প, ৪ হাজার ৩৭৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা ব্যয়ে পায়রা বন্দরের কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো সুবিধাদিও উন্নয়ন প্রকল্প (সংশোধিত), ৩০৭ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ব্যয়ে শেখ হাসিনা তাঁতপল্লি স্থাপন প্রকল্প, ১ হাজার ৩৩৩ কোটি ৩১ লাখ টাকা ব্যয়ে খুরশকুল বিশেষ আশ্রয়ণ প্রকল্প এবং আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর এনহ্যান্সিসিং একসেস টু সার্ভিসেস (আইডিইএ) প্রকল্প।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *