তিনি ইতিহাস হয়ে থাকবেন’

Slider টপ নিউজ


ব্যারিস্টার রফিক-উল হক আইন পেশায় নিজের একনিষ্ঠতা ও মানবসেবায় যে অনন্য অবদান রেখে গেছেন তা ইতিহাস হয়ে থাকবে বলে মনে করেন দেশের বিশিষ্ট আইনজীবীরা। তার স্মৃতিচারণ করে আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সমাজ এবং মানুষের জন্য তিনি আজীবন শ্রম বিলিয়ে দিয়েছেন। এটি দেশের আদালত অঙ্গনের জন্যও একটি নজির হয়ে থাকবে। গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন মানবজমিনকে দেয়া এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, পেশাজীবী হিসেবে রফিক-উল হক অনেক সুনাম ও আস্থা অর্জন করেছেন। তিনি সব রকম মামলা লড়তেন। সেদিক থেকে একজন প্রবীণ আইনজীবী হিসেবে সমাজ ও সমাজের মানুষের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন তিনি।

সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, আমরা সমসাময়িক সময়ে ইংল্যান্ডে পড়ালেখা করতে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে ফিরে একসঙ্গে উচ্চ আদালতে প্র্যাকটিস শুরু করি।
অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ছিলেন তিনি। আইনজীবী হিসেবে সফলতা অর্জন করেছেন। সেদিক থেকে বার-এ তিনি আমাদের একজন প্রতিভাসম্পন্ন আইনজীবী ছিলেন। পাশাপাশি জনসেবার ক্ষেত্রেও তার উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে। বিশেষ করে স্বাস্থ্যখাতে তিনি কাজ করেছেন। রফিক-উল হক প্রতিষ্ঠা করেছেন বেশ কয়েকটি হাসপাতাল, এতিমখানা, মসজিদ ও মেডিকেল কলেজ। গাজীপুরের কালিয়াকৈরে একটি ১শ’ শয্যার হাসপাতাল নির্মাণাধীন। এ ছাড়া ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠা করেছেন সুবর্ণ ক্লিনিক। ক্যান্সার হাসপাতাল প্রতিষ্ঠায় তিনি অবদান রেখেছেন। তিনি বলেন, ব্যারিস্টার রফিক-উল হক খুব দানশীল ও বন্ধু বৎসল ব্যক্তি ছিলেন। অনেকদিন ধরেই তিনি অসুস্থ ছিলেন। চিকিৎসা করার ব্যাপারেও অনেককে সাহায্য করেছেন। সে হিসেবে তিনি একজন দরদি বন্ধু, দরদি মানুষ ছিলেন।
প্রখ্যাত আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের মৃত্যুতে আইন অঙ্গনে অপূরণীয় ক্ষতিসাধিত হলো বলে মন্তব্য করেন, সিনিয়র আইনজীবী ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন। প্রবীণ এই আইনজীবীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে তিনি বলেন, ব্যারিস্টার রফিক-উল হক সারাজীবন আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় কাজ করেছেন। তিনি দলমত দেখতেন না। দেখতেন আসলে তিনি বিচারপ্রার্থী কিনা। সেজন্য আওয়ামী লীগ-বিএনপি-জাতীয় পার্টি সবার মামলা লড়তেন। যা এখন অনেক আইনজীবীর মধ্যেই দেখা যায় না। তিনি বলেন, আইন বিষয়ে যদি আমরা কখনো জটিল সমস্যার সম্মুখীন হতাম, তখন একে অপরের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করতাম। আলোচনার এক পর্যায়ে সমস্যার সমাধান বের হয়ে যেতো।

সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেন, ব্যারিস্টার রফিক-উল হক একজন সফল আইনজীবী ছিলেন। তিনি ছিলেন একজন সৎ-সজ্জন ব্যক্তি। সমাজসেবামূলক কাজে তার অনেক অবদান রয়েছে। তিনি একজন সফল ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তার মৃত্যুতে আইন অঙ্গনে অনেক বড় ক্ষতি হলো। আইনজীবী হিসেবে সফল ছিলেন তিনি।

সাবেক আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু বলেন, তিনি বাংলাদেশের একজন কিংবদন্তি আইনজীবী ছিলেন। বাংলাদেশের আইনের জগতে এমন কোনো শাখা-প্রশাখা নেই যার মধ্যে তার দখল ছিল না। তিনি একজন পরিপূর্ণ, অরাজনৈতিক, দল নিরপেক্ষ আইনজীবী ছিলেন। তিনি অত্যন্ত মেধাবী, প্রজ্ঞাবান ও আমাদের দেশের শীর্ষ আইনজীবীদের একজন।

সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক বলেন, স্বাস্থ্যখাত ও আইন পেশায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন তিনি। চিকিৎসা শাস্ত্র আধুনিকায়নে ব্যাপক ভূমিকা পালন করেন তিনি। সামাজিক উন্নয়নে রফিক-উল হকের আর্থিক সহায়তার অবদান বলে শেষ করা যাবে না। তার জীবনের সকল উপার্জন মানবতার কল্যাণে ব্যয় করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *