জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্র-চীন উত্তেজনা

Slider জাতীয় সারাবিশ্ব

ডেস্ক: এমনিতেই যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজমান। তার ওপর করোনা ভাইরাসকে কেন্দ্র করে সেই উত্তেজনা এবার পৌঁছে গেছে জাতিসংঘে। নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের বার্ষিক সাধারণ অধিবেশনে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে দেয়ার জন্য চীনকে আবারো দায়ী করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। করোনা ভাইরাস মহামারির জন্য তিনি চীনকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার আহ্বান জানান। কিন্তু চৌকষভাবে অভিযোগ খন্ডন করেছেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। যুক্তরাষ্ট্রের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেছেন, কোনো দেশের সঙ্গে একটি শীতল যুদ্ধে জড়ানোর ইচ্ছা তার দেশের নেই। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চীনের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ এমন এক সময়ে করলেন যখন তার সামনে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের বাকি আছে মাত্র ৩৯ দিন। এ সময়ে এভাবে চীনকে ঘায়েল করার মধ্য দিয়ে তিনি নির্বাচনে সুবিধা পাওয়ার চেষ্টা করছেন বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা।

তবে করোনা সংক্রমণের বিষয়টিকে তিনি গুরুত্বই দেননি এমন কথা নিজেই এক সাক্ষাতকারে উল্লেখ করেছেন। এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র-চীন কার্ড নির্বাচনে কতোটা কাজে দেবে তা বোঝা মুশকিল।

বিশ্বের বড় দুই শক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বিভিন্ন ইস্যুতে উত্তেজনা বা সংঘাতময় অবস্থা বিদ্যমান অনেকদিন ধরে। এর মধ্যে রয়েছে বাণিজ্য, প্রযুক্তি, হংকং ইস্যু, সিনজিয়াং প্রদেশে মুসলিম সংখ্যালঘু উইঘুরদের সঙ্গে মানবাধিকার লঙ্ঘন, যুক্তরাষ্ট্রে চীনের গোয়েন্দাবৃত্তি সহ বিভিন্ন ইস্যু। এতসব ইস্যুতে দুই দেশ পাল্টাপাল্টি ব্যবস্থা নিয়েছে। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে কনস্যুলেট। বাণিজ্যে শুল্ক আরোপ, বিধিনিষেধ দেয়া হয়েছে। ফলে বিশেষ করে এই বছরটিতে সেই উত্তেজনার পারদ তুঙ্গে পৌঁছে যায়।

এ বছর নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন হচ্ছে বেশির ভাগই ভার্চুয়াল। সেখানে আগে থেকে বিশ্ব নেতাদের রেকর্ড করা বক্তব্য পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। সাধারণত প্রতি বছরের এই অধিবেশনে ভূ-রাজনৈতিক কোনো ইস্যু সামনে থাকে। কিন্তু এবার যেহেতু সশরীরে সবাই উপস্থিত নেই, তাই এমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু এবার অনুপস্থিত। এবারের অধিবেশনে প্রতিটি দেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন মাত্র একজন প্রতিনিধি। ফলে এক দেশের সঙ্গে অন্য দেশের ঠেসাঠেসি করার সুযোগ কমই। কিন্তু তার মধ্যেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার বক্তব্যে নিজের অর্জন তুলে ধরেছেন এবং তার বিরোধী পক্ষকে ঘায়েল করেছেন। বিশেষ করে তার আক্রমণের মূলে ছিল চীন। তিনি বলেন, একটি দেশকে অবশ্যই আমাদেরকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। ওই দেশটি বিশ্বে প্লেগ বা মহামারি ছড়িয়ে দিয়েছে। তারা হলো চীন। ট্রাম্প বলেন, করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার প্রথমদিককার সময়ে আভ্যন্তরীণভাবে সব রকম চলাচল লকডাউন করে দেয় চীন। অন্যদিকে চীন ত্যাগ করার ফ্লাইট সচল ছিল। এর মধ্য দিয়ে বিশ্বকে সংক্রমিত করা হয়েছে। চীনের বিরুদ্ধে আমি যে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলাম, তার নিন্দা করেছে চীন। এমনকি তারা আভ্যন্তরীণ ফ্লাইটগুলো বাতিল করে জনগণকে দেশের ভিতর বন্দি করে রেখেছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *