গাজীপুর করোনা চিকিৎসার সুপার মার্কেট কি না তদন্ত দরকার!

জাতীয়

গাজীপুর: বহুল আলোচিত রিজেন্ট হাসপাতালের করোনা প্রতারণা মামলার প্রধান পলাতক আসামি ও রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. সাহেদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সাতক্ষীরার দেবহাটা থানার সাকড় বাজারের পাশে অবস্থিত লবঙ্গপতি এলাকায় গ্রেপ্তার হন সাহেদ। এর আগে এ ঘটনায় আরও দশজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। সাহেদের আগে গাজীপুরের কাপাসিয়া থেকে সবশেষ গ্রেপ্তার হন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ পারভেজ। রিজেন্ট হাসপাতালের এমডি গাজীপুরের কাপাসিয়া থেকে গ্রেপ্তারের কয়েক ঘন্টার মধ্যেই সাতক্ষীরা থেকে গ্রেপ্তার হন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান সাহেদ।

অনুসন্ধানে জানা যায়, একটি জাতীয় দৈনিকে সংবাদ এসেছিল, রিজেন্ট হাসপাতালের অনেক করোনা সনদ গাজীপুরের। গতকাল গাজীপুরের কাপাসিয়া থেকে রিজেন্টের এমডি গ্রেপ্তারের কয়েক ঘন্টার মধ্যেই র‌্যাব সাতক্ষীরায় রিজেন্টের চেয়ারম্যান সাহেদের অবস্থান শনাক্ত করে তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। এতে মনে হয়, সারাদেশে সাহেদের খোঁজে যখন রাষ্ট্র মরিয়া, তখনও সাহেদের প্রধান সহযোগী গাজীপুরের কাপাসিয়ায় ছিলেন। সুতরাং রিজেন্ট হাসপাতালের করোনা কেলেংকারীর আংশিক ঘটনাস্থল গাজীপুরে নয় এমনটি বলা মুশকিল।

অনুসন্ধান বলছে, করোনা মহামারীর শুরু থেকেই গাজীপুরে করোনা রিপোর্ট পেতে দেরী হচ্ছে সব সময়। বাংলাদেশের কোন জেলায়ই এত দেরীতে করোনা রিপোর্ট প্রকাশ হয়নি। এসব ছাড়াও বাংলাদেশের যে সব এলাকা রেড জোনের আওয়াতায় পড়েছে পর্যায়ক্রমে কিছু কিছু করে লকডাউনও হয়েছে। কিন্তু গাজীপুরে সংক্রমন ও মৃত্যুর দিক থেকে অনেক এগিয়ে থাকলেও সহজে লকডাউন হয় না। লকডাউন কার্যকর হতেও সময় লাগে। রেডজোন হলেও গাজীপুরে এ্যাকশন অদৃশ্য। সব কিছুর মুলে কি রিজেন্টের এমডি পারভেজের কোন হাত ছিল কি না, খতিয়ে দেখা দরকার।

একটি গোপন সূত্র বলছে, রিজেন্ট হাপসাতালের এমডির বাড়ি কাপাসিয়ায় হওয়ার কারণে গাজীপুরের অনেক হাসপাতাল রিজেন্টের সঙ্গে ব্যবসা করে থাকতে পারে। করোনা সনদের ব্যবসা কারা কারা করেছে তা খতিয়ে দেখা জরুরী। গাজীপুরে করোনায় আক্রান্ত রোগীদের সনদ পরীক্ষা করে রিজেন্ট থেকে আসা সনদগুলোর রোগীদের আবার পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া দরকার। না হয় ভুল সনদে কোন করোনা আক্রান্ত রোগী অবাধে চলাফেরা করে সংক্রমন ছড়াচ্ছেন কি না, সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দেযা যায় না।

সূত্র বলছে, কাপাসিযায় একটি বেসরকারী হাসপাতালকে করোনা চিকিৎসার জন্য উদ্বোধন করা হয়েছিল। সেই হাসপাতালে করোনার কেমন চিকিৎসা হচ্ছে তারও খোঁজ নেয়া দরকার। একই সঙ্গে গাজীপুর জেলায় যতগুলো বেসরকারী হাসপাতাল আছে, সব গুলোর কাগজপত্র পরীক্ষা করে করোনা চিকিৎসায় তাদের অবদান কতটুকু তাও জানা দরকার। একই সঙ্গে গাজীপুরে যে সকল বেসরকারী হাসপাতাল করোনার চিকিৎসা করেছে বা করছে সেগুলোর বিষয়ে খোঁজ নেয়ার সময় এখনি।

সাধারণ মানুষ বলছেন, করোনা চিকিৎসার নামে রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে গাজীেপুরের যোগসূত্র অনেকটাই পরিস্কার হচ্ছে। পরিস্থিতি বলছে, কাপাসয়িা থেকেই গাজীপুরে করোনার শুরু বলে ধরা হয়। আর করোনার চিকিৎসা জালিয়তির দ্বিতীয় হোতা গাজীপুরের কপাসিয়া থেকে গ্রেপ্তার হলেন। সব মিলিয়ে গাজীপুর করোনা চিকিৎসার সুপার মার্কেট হয়ে থাকতে পারে, এমন আশংকা উড়িয়ে দেয়া যায় না। তাই এখনি সময় গাজীপুরে সাহেদ-মাসুদদের ঘনিষ্টজনদের চিহিৃত করে আইনের আওতায় আনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *