ডেস্ক | রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে নির্যাতন চালানোর সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সুচির বিরুদ্ধে আর্জেন্টিনায় মামলা দায়ের হয়েছে। তিনি ও দেশটির একাধিক শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বুধবার এই মামলা দায়ের করেছে রোহিঙ্গা বিষয়ক ও লাতিন আমেরিকার বেশ কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠন। এই প্রথম রোহিঙ্গা নির্যাতনের অভিযোগে সুচির বিরুদ্ধে কোনো মামলা দায়ের হলো। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
খবরে বলা হয়, ‘সর্বজনীন এখতিয়ার’ নীতি মেনে সুচির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে আর্জেন্টিনায়। এই নীতি মেনে, বিশ্বের যেকারো বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ বা মানবতাবিরোধী অপরাধের ক্ষেত্রে মামলা দায়ের ও বিচারকার্য চালাতে পারে যেকোনো রাষ্ট্র বা আন্তর্জাতিক সংগঠন। আইনজীবী টমাস ওজেয়া বলেন, এই নীতি গণহত্যাকারী, গণহত্যার সঙ্গে জড়িত থাকা বা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টাকারী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অপরাধী নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার সুযোগ দেয়। আমরা এটা আর্জেন্টিনা থেকে করছি কারণ, তাদের এই অপরাধ অভিযোগ অন্য কোথাও দায়ের করার সম্ভাবনা নেই।
মামলায় মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিন অং হাইং ও বেসামরিক নেত্রী সুচি সহ শীর্ষ সামরিক ও রাজনৈতিক নেতাদের বিচারের সম্মুখীন করার দাবি জানিয়েছে। বলেছে, তাদের জন্য অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে রোহিঙ্গারা।
বার্মিজ রোহিঙ্গা অর্গানাইজেশন ইউকে’র প্রেসিডেন্ট তুন খিন বলেন, দশকের পর দশক ধরে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ আমাদের ঘেটোতে আটকে রেখে, বাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য করে, হত্যা করে মুছে ফেলতে চেয়েছে।
আর্জেন্টিনার আদালতে পূর্বেও এমন মামলা দায়ের হয়েছে। এর মধ্যে ফ্রান্সের সাবেক একনায়ক ফ্রান্সিসকো ফ্রাংকোর স্পেন শাসন ও চীনের ফালুন গং আন্দোলন নিয়ে মামলা রয়েছে। ২০১৭ সালে নৃশংস সামরিক অভিযানে রোহিঙ্গাদের হত্যা ও বাড়িছাড়া করার পর থেকে আন্তর্জাতিক আদালতগুলোয় একাধিক মামলার শিকার হয়েছে মিয়ানমার। বহু দেশ তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। গত সোমবার জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালতে তাদের মিয়ানমার সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে গাম্বিয়া। তবে শান্তিতে নোবেল পুরস্কারজয়ী ও মিয়ানমারের সাবেক গণতান্ত্রিক আইকন সুচির বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা নির্যাতন নিয়ে এটাই প্রথম কোনো আইনি পদক্ষেপ।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের আগস্ট থেকে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের নামে হত্যাযজ্ঞ চালায় মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। তাদের নৃশংসতা থেকে বাঁচতে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে সাড়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা।